স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছাড়লো পুলিশের ছেলে

যশোরের মণিরামপুরে ৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের পর মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৯ জানুয়ারি উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

এদিকে, ধর্ষকের বাবা পুলিশ সদস্য হওয়ায় ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। সেই সঙ্গে রাজগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি থেকে মামলা নেয়ার পরিবর্তে স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

একপর্যায়ে একটি মানবাধিকার সংস্থার তৎপরতায় পুলিশ ৯ ফেব্রুয়ারি ওই ছাত্রীকে হেফাজতে নিয়ে আদালতে নিলে বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে ও জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে সোমবার বিকেলে একটি মানববাধিকার সংগঠন যশোর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের কর্মসূচি পালন করেছে।

স্কুলছাত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী, গত ২৯ জানুয়ারি উপজেলার হানুয়ার গ্রামের পুলিশ সদস্য হাবিবুর রহমানের ছেলে রুমান, মনোহরপুর গ্রামের আজিজুর রহমানের ছেলে রয়েল ও একই গ্রামের মোর্শেদের ছেলে রুবেল তাকে অপহরণ করে। এরপর নলতা (হাকিমপুর) গ্রামের জনৈক কবিরাজ সাখাওয়াতের বাড়িতে নিয়ে যায়।

সেখানে তাকে ধর্ষণ মারধর করে রুমান, রুবেল এবং রয়েল। এ সময় অচেতন অবস্থায় স্থানীয় মেম্বার মিজানুর রহমান তাকে উদ্ধার করে রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই আইন উদ্দিনকে খবর দেয়।

কিন্তু প্রধান অভিযুক্ত রুমানের বাবা পুলিশে চাকরি করায় স্থানীয় ফাঁড়ি মামলা নেয়নি। পরে মনিরামপুর থানায় ঘটনাটি জানানো হলে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন।

একপর্যায়ে থানা পুলিশ গত ৭ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনায় মামলা করেন। তবে ধর্ষণের বিষয়টি এড়িয়ে পুলিশ নির্যাতিত মেয়েটির মাকে দিয়ে ৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণের মামলা করেন।

পরে ধর্ষক ও তার ২ সহযোগীর মোবাইলে ধারণকৃত ধর্ষণের ভিডিও ফুটেজ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় একটি মানবাধিকার সংস্থা ধর্ষিতার পরিবারের সহায়তায় এগিয়ে আসে।

সংস্থাটি ধর্ষণের মামলা করাতে তাকে নিয়ে থানায় যায়। এ সময় ভিডিও ফুটেজ দেখে ওসি বিপ্লব কুমার নাথ মেয়েটিকে হেফাজতে নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে এবং জবানবন্দি রেকর্ড করতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে পাঠায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মনিরামপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, পুলিশ ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার বা গাফিলতি করার চেষ্টা করেনি। ঘটনা স্থানীয় পর্যায়ে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। তাই দেরি হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, অভিযুক্তের বাবা পুলিশে চাকরি করেন কিনা তা জানা নেই।



মন্তব্য চালু নেই