সোনারগাঁয় চলন্ত বাসে নারী শ্রমিককে গণধর্ষণ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় চলন্ত বাসের ভেতর পোশাক কারখানার এক নারী শ্রমিককে বাসচালক, হেলপারসহ চারজন পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত সোমবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। এরপর মঙ্গলবার রাতে আসামি বাসের হেলপার রুবেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল বুধবার তাকে নারায়ণগঞ্জের বিচারিক হাকিম এ কে এম মহিউদ্দিনের আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারায় সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

মামলার আসামিরা হলো বাসচালক চান মিয়া (২৫), হেলপার রুবেল মিয়া (২১), তাদের সহযোগী আতিকুল ইসলাম ও অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি। এক আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে। এদিকে ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের বিচার দাবিতে নারায়ণগঞ্জে গতকাল বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক ও এলাকাবাসী।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হারুনুর রশিদ জানান, গতকাল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি রুবেল মিয়া বলে, ‘বাসচালক চান মিয়ার নির্দেশে আমরা চারজন নারী শ্রমিককে ধর্ষণের সিদ্ধান্ত নেই। চলন্ত বাসের ভেতর প্রথমে চালক চান মিয়া, তারপর তার বন্ধু আতিকুল ইসলাম, এরপর অজ্ঞাত এক ব্যক্তি, সর্বশেষ আমি (রুবেল মিয়া) পালাক্রমে ধর্ষণ করি। এরপর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে নারী শ্রমিক। পরে তাকে সড়কের পাশে ফেলে রেখে আমরা পালিয়ে যাই।’

পুলিশ পরিদর্শক হারুনুর রশিদ আরো জানান, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন ওই নারী শ্রমিক। গত সোমবার রাত ১১টার দিকে কারখানা ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে বাসের ভেতর ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। এ সময় অন্য যাত্রীরা নেমে গেলে বাসচালক চান মিয়া ও হেলপার রুবেল মিয়াসহ তাদের আরো দুই সহযোগী চলন্ত অবস্থায় বাসের ভেতরেই পালাক্রমে ধর্ষণ করে ওই নারী শ্রমিককে। পরে তারা বাসটি চালিয়ে সোনারগাঁর নোয়াগাঁও ইউনিয়নের চরকামালদী এলাকায় গিয়ে সড়কের পাশে ওই নারী শ্রমিককে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই নারীকে এলাকাবাসী উদ্ধার করে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। ঘটনার পরের দিন মঙ্গলবার সকালে ওই নারী শ্রমিকের বাবা বাদী হয়ে বাসচালক চান মিয়া, হেলপার রুবেল মিয়া ও তাদের সহযোগী আতিকুল ইসলাম, অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তিসহ চারজনের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পর ওই রাতেই হেলপার রুবেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, মারাত্মক আহত ওই নারী শ্রমিককে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসে এনে ডাক্তারি পরীক্ষা করিয়েছে। আসামি রুবেল মিয়াকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে।

এদিকে চলন্ত বাসের ভেতরে নারী ধর্ষণের ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নারায়ণগঞ্জের সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ঘটনার মূল হোতা বাসের চালক চান মিয়াসহ পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবিতে গতকাল দুপুরে সোনারগাঁর বারধী বাজার ও ধন্দি বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক ও এলাকাবাসী।



মন্তব্য চালু নেই