সেন্সরে ছাড় পেলো ‘দ্য জঙ্গল বুক’
চুমু, নগ্নতা, বড়দের নিজস্ব ব্যাপার-স্যাপার- এসব নিয়ে ভারতীয় সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণটা এতদিন গা সওয়া হয়ে এসেছিল। সে কার্য-কারণ সম্পর্কের যুক্তি থাক বা না-ই থাক! তা বলে ‘দ্য জঙ্গল বুক’-এর মতো একটা নিখাদ ছোটদের ছবি পাবে U/A তকমা? সেই ছবি যা বড়দেরও ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে শৈশবের সোনালি দিনে? সেন্সর-কর্তা পহলাজ নিহালনির বক্তব্য অবশ্য বেশ সাফ! ছবিটা এত ভয় পাইয়ে দেওয়া যে ওটাকে U/A তকমা না দিয়ে উপায় ছিল না! ‘দ্য জঙ্গল বুক’-এর কাহিনিরেখা মোটামুটি সকলেরই জানা।
একটা বাচ্চা ছেলের বাবা-মায়ের কাছ থেকে হারিয়ে গভীর জঙ্গলে এসে পড়া এবং তার পর বনের পশুদের সঙ্গে বড় হয়ে ওঠা। তার মাঝেই মিশে আছে জীবন আর মৃত্যুর হাতছানি, বন্ধুত্ব আর বিশ্বাসঘাতকতা, সভ্যতা বনাম অরণ্য-জীবনের দ্বন্দ্ব-সংঘাত। তার মধ্যে পহলাজ নিহালনি যা বলছেন, সেই ভয় পাইয়ে দেওয়ার মতো আছেটা কী? থ্রি-ডি এফেক্ট! ‘ছবিটার থ্রি-ডি এফেক্ট খুবই ভয় পাইয়ে দেওয়ার মতো! ঠিক মনে হবে, পর্দা থেকে হিংস্র ভয়ানক পশুরা ঝাঁপিয়ে পড়ছে দর্শকের উপরে’, বলছেন নিহালনি।
এখন, ক্ষমতা যখন তাঁর হাতে, তখন আর তর্ক করে হবেটা কী! অনেকদিন ধরেই সেন্সর বোর্ডের এই স্বেচ্ছাচারিতা দেখে আসছেন ভারতীয় দর্শকরা, এবারেও সেই ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি হল। ওটা ঠেকানোর তো আর উপায় নেই! তা বলে একেবারে চুপ করেও বসে নেই ভারতীয় জনতা। পহলাজ নিহালনির এই সিদ্ধান্তের খবরটা চাউর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে টুইটার। সঙ্গে চলছে সেন্সর-কর্তাকে নিয়ে বেশ ভালরকম ইয়ার্কিও! বিজয় ভেঙ্কটরমন যেমন টুইট করেছেন সরাসরি নিহালনিকে ঠুকে।
তাঁর বক্তব্য, এরকম হাস্যকর কাজ করে অন্যের চোখে নিজেকে আর কত ছোট করবেন নিহালনি? আবার, প্রেরণা মালহোত্রার টুইট বলছে, তাঁর চোখে নিহালনির চেয়ে ভাল কমেডিয়ান আর কেউ নেই। পঙ্কজ জাঙ্গিরের টুইট তো তামাশার পর্দা চড়িয়েছে আরও এক ধাপ। তিনি লিখেছেন, ব্যাপারটা যে শুধু U/A তকমাতেই শেষ হয়েছে, সেই তো ঢের! ভাগ্যিস, জামা-কাপড় না পরে ঘুরে বেড়ানোর জন্য বনের পশুগুলোকে সিন থেকে ছেঁটে বাদ দিতে চাননি নিহালনি! শুধু সাধারণ মানুষই নন! ‘দ্য জঙ্গল বুক’-এ সেন্সরের কোপ এসে পড়ায় উত্তেজিত সেলিব্রিটিরাও! মুকেশ ভাট যেমন স্পষ্ট উগরে দিয়েছেন তাঁর ক্ষোভ! ‘এই দেশটা যে উন্মাদ হয়ে গিয়েছে, এই ঘটনা সেটাই প্রমাণ করল।
দ্য জঙ্গল বুক যদি U/A তকমা পায়, তবে আমার মতে সরকারের সেন্সর বোর্ড নিয়ে এবার একটু ভাল ভাবে ভাবনা-চিন্তা করা উচিত! আমার মতে, সেন্সর বোর্ডের ঠাঁই হওয়া উচিত আস্তাকুঁড়ে’, বলছেন মুকেশ ভাট। তবে, সেন্সর বোর্ড নিয়ে এত কিছু বললেও পহলাজ নিহালনিকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মুকেশ ভাট। তাঁর যুক্তি, পহলাজ নিহালনি তো কাঠামোর হাতের পুতুল মাত্র, অতএব তাঁকে দোষ দিয়ে হবেটা কী! অবশ্য, ভেবে দেখলে, মোগলির জীবনটাই তো বিতর্কিত! বিতর্কিত তার সত্ত্বাও! পশুরা তাকে মানুষ ভাবে, মানুষে ভাবে পশুর মতো! ফলে, এত দিন পরে এই যে সে ফিরে এল, সেটা নিয়ে এতটুকুও জলঘোলা না হয়ে যায়!
মন্তব্য চালু নেই