‘সেনা টহল দরকার নেই’

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেছেন, ‘আসন্ন তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আপাতত মাঠে সেনাবাহিনীর টহল দরকার নেই।’

বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

এদিকে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজের কথা সমর্থন করে বলেছেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশনের কেন্দ্রবিন্দুতে ক্যান্টনমেন্ট অবস্থিত হওয়ায় সেনাবাহিনীকে সহজে মুভ করানো যাবে। এ কারণে সেনাবাহিনীকে ক্যান্টনমেন্টে থাকতে বলা হয়েছে।’

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নিজ কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, ‘অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর মুভ করার জন্য ক্যান্টনমেন্টই সবচেয়ে উত্তম স্থান। রিটার্নিং কর্মকর্তা ডাকলে সহজেই তারা চলে আসতে পারবেন। সেনাবাহিনী সবসময় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। এবারও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।’

এর আগে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় এবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশি সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া দেশের বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে, তাই সেনা টহল আপাতত দরকার হবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, আজকেও বলছি, আমাদের যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সবাই মাঠে পর্যাপ্ত পরিমাণ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীকে রিজার্ভ হিসেবে রেখেছি। তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।’

নির্বাচন কমিশনার জানান, ২৮ এপ্রিল তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এ মুহূর্তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যেখানে থাকা উচিত, সেখানেই অবস্থান করছে। যাতে সবাই সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে ভোট দিতে পারেন। আইনশৃঙ্খলার রক্ষার জন্য যাদের দরকার তাদের সবাইকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ কারণে তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আপনাদের একটা বিষয়ে ধারনা ক্লিয়ার করার জন্য বা ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য আজকে কথা বলছি। সেনাবাহিনী কোথায় থাকবে, সে বিষয়ে ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি। যেহেতু সিটি করপোরেশন এলাকায় ক্যান্টনমেন্ট আছে। এ কারণে তাদের ক্যান্টনমেন্টে অবস্থান করার জন্য বলেছি। সেনাবাহিনী সবসময় প্রস্তুত থাকবে। তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেট অবস্থান করবেন। রিটার্নিং অফিসারের যখনই দরকার হবে, তখনই তারা কাজে লেগে যাবেন। অর্থাৎ স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রিটার্নিং অফিসারের চাহিদামতো দায়িত্ব পালন করবেন। কাজেই সেনাবাহিনী সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করবে।’

দুটি চিঠির বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘আমাদের প্রথম চিঠি ও দ্বিতীয় চিঠির মধ্যে কোনো পরিবর্তন নেই। আমরা আরো ব্যাখ্যা করার জন্য পরবর্তী চিঠি দিয়েছি। আমাদের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্যান্টনমেন্ট এলাকা সিটির আওয়তায় পড়ে না। তবে তার চারদিকে সিটি করপোরেশনের এলাকা। তাই ধরে নেওয়া যায়, সেনাবাহিনী সিটি করপোরেশন এলাকার মধ্যে আছে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী কাজ করলে যারা ভোট দিবেন বা ভোট প্রার্থনা করবেন, তাদের কোনো সমস্যা হবে না। আমাদের দেশের আরো কয়েকবার নির্বাচন হয়েছে । ভোটার ও প্রার্থীদের এত বেশি অ্যারোগ্যান্ট নয় যে, পাহারা না দিলে সমস্যা হবে। তারপরও আমরা ব্যবস্থা রেখেছি। সবার স্বস্তিবোধের কারণে সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি।’

চট্টগ্রামেও একইভাবে সেনাবাহিনী থাকবে। কারণ সীমান্তের কাছে চট্টগ্রাম সেনানিবাস আছে। কাজেই ওখানে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ২১ এপ্রিল তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২১ এপিল) সশস্ত্র বিভাগের কাছে তিন ব্যাটালিয়ন সেনা সদস্য চেয়ে একটি চিঠি দেয় ইসি। এর পরেই বুধবার (২২ এপ্রিল) মঙ্গলবারের চিঠির ভাষা পরিবর্তন করে সেনানিবাসে থেকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে জানিয়ে সশস্ত্র বিভাগকে আরেকটি চিঠি দেয় সেনাবাহিনী।



মন্তব্য চালু নেই