সুন্দরবনে পরিকল্পিত আগুন, ২০ স্থানে একসাথে

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাইরেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের ২৫ নম্বর কম্পার্টমেন্টের তুলাতলা এলাকায় লাগা আগুন তৃতীয় দিনেও পুরোপুরি নেভাতে পারেনি বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস। ওই এলাকার বিভিন্ন স্থানে এখনো ধোঁয়া উড়ছে। তাছাড়া এবারের আগুন লাগার ধরনটাও আলাদা। পরিকল্পিতভাবে কয়েক কিলোমিটারের ভেতর অন্তত ২০টি স্থানে আগুন দেয়া হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় এবং পানির সুব্যবস্থা না থাকায় আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এই আগুন পুরোপুরি কখন নেভানো যাবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ।

তবে বনবিভাগ দাবি করছে আগুন সম্পূর্ণ নিভে গেছে বলে দাবি করলেও ফায়ার সার্ভিস বলছে, এখনো সম্পূর্ণ নিভেনি, বিভিন্ন এলাকায় ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে।

শুক্রবার দুপুরে বনবিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. জহির উদ্দিন আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছেন।

এদিকে সুন্দরবনে আগুন লাগার কারণে শুক্রবার সকাল থেকে জেলে, বাওয়ালী, মৌয়ালদের পাস পারমিট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে বনবিভাগ। তবে বাইরে থেকে আসা পর্যটকরা সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার শুধু চাঁদপাই রেঞ্জে সব ধরনের পাস পারমিট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এবার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত জেলে বাওয়ালী, মৌয়াল ও সাধারণ মানুষের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বনবিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, দফায় দফায় আগুন লাগার কারণে সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের দুটি রেঞ্জে শরণখোলা এবং চাঁদপাইয়ে সব ধরনের পাস পারমিট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে বাইরে থেকে আসা পর্যটকরা সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন। স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত এ নির্দেশনা বহাল থাকবে। যারা ভেতরে অবস্থান করছে তাদের দ্রুত বের হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সুন্দরবনে এবারে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনের ধরনটা একটু ভিন্ন। এই দুর্বৃত্তরা তুলাতলা এলাকার কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে অন্তত ২০টি স্থানে আগুন দিয়েছে, যা আমাদের শনাক্ত করতে সময় লেগেছে। যার কারণে আগুন নিভাতেও সময় লেগেছে। এখন কোথাও ধোঁয়া বা আগুনের কুণ্ডলী নেই। তবে এখনই ফায়ার সার্ভিসকে সুন্দরবন থেকে সরিয়ে নেয়া হবে না। তারা বনবিভাগের সঙ্গে আগুন লাগার এলাকা পর্যবেক্ষণ করবে। তবে আরো কতোদিন ফায়ার সার্ভিসকে এখানে অবস্থান করতে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি মো. জহির।

বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক মানিকুজ্জামান বলেন, গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট বিরতিহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ঘটনাস্থলের দুই কিলোমিটার দূর থেকে পানি এনে আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। দমকল কর্মীরা প্রখর রোদে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এজন্য খুলনা ফায়ার সার্ভিস থেকে ১২ জনের একটি দল শুক্রবার সকালে সুন্দরবনে এসে কাজে যোগ দিয়েছে। তাছাড়া তীব্র বাতাসের কারণে আগুন নেভানোর কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় এখনো ধোঁয়া দেখতে পাচ্ছি। যেখানে আমরা ধোঁয়া দেখছি সেখানেই পানি ছিটাচ্ছি। পুরোপুরি আগুন কখন নিভাতে পারবো তা বলতে পারছি না।



মন্তব্য চালু নেই