সীমাহীন শোকেও বিজয়ের গল্প
অসংখ্য মৃত্যুতে জন্ম নেয়া অপরিমেয় শোকেও অসাধারণ এক বিজয়ের গল্প হতে পারে এটি। প্রায় সব সহ-খেলোয়ারদের হারিয়েও যে আবার মাঠে ফিরতে পারেন বিমান দুর্ঘটনায় আহত শ্যাপেকোয়েনসের হেলিও হারমিতো জ্যাম্পিয়ার নেটো। ৩১ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডারের বাবা শুনিয়েছেন নতুন আশা আর বিশ্বাসের এ কথা। ফুসফুস, হাটু, কব্জি আর মাথায় সার্জারির পর তার অবস্থা এখন স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা।
নেটোর বাবা হেলাম ফেসবুকে তার সুস্থ হয়ে উঠার খবর জানিয়ে লিখেন, আমার ছেলের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তার পায়ে একটি সার্জারি হয়েছে এবং ডাক্তাররা বলেছে সে ফুটবলে ফিরবে। তবে এখনও হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাননি তিনি।
২৮ নভেম্বর কলম্বিয়ায় এই মর্মান্তিকবিমান দুর্ঘটনায় মারা যান ৭১ জন আরোহী। জীবিত উদ্ধার করা হয় ৬ জনকে। বিমানটিতে ম্যাডেলিনের দল অ্যালেটিকো নেসিওনালের বিপক্ষে কোপা সুদামেরিকানার ফাইনাল খেলতে যাচ্ছিলো শ্যাপেকোয়েনস।
ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটির উদ্ধার পাওয়া অন্যদের মধ্যে এরউইন তুমিরির শারীরিক অবস্থাও ভালো। এই সপ্তাহের শেষের দিকে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড় পেতে পারেন। বিধ্বস্ত বিমান থেকে উদ্ধারের সময়ও তিনি অচেতন ছিলেন না। কলম্বিয়ান পুলিশের প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায় তিনি তার সহকর্মীদের জন্য চিৎকার করছেন।
এছাড়াও ক্লাবটির গোলকিপার জ্যাকসন র্যাগনার ফলম্যানের (২৪) ডান পা কেটে ফেলতে হয়েছে। ডিফেন্ডার অ্যালান রাসেলের (২৭) মেরুদন্ডে সার্জারি হলেও তার চলাফেরায় তা ব্যাঘাত ঘটাবে না বলে জানিয়েছে চিকিৎসকেরা।
সাংবাদিক রাফায়েল হেনজেলের অবস্থাও স্থিতিশীল। এই চারজন এখনও চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তবে বিমানটির ক্রু মেম্বার জিমেনা সুয়ারেজের শারীরিক অবস্থা ভালো।
ফুয়েল শেষ হয়ে যাওয়ায় কলম্বিয়ার মেডেলিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এর স্বপক্ষেই প্রমাণ জোড়ালো হওয়ার কথা জানায় কলম্বিয়ার কর্মকর্তারা।
বলিভিয়ান ডেবের পত্রিকা জানায়, বিধ্বস্ত হওয়া ব্রিটিশ নির্মিত অ্যাভ্রো আরজে-৮৫ এ্যায়ারক্রাফ্টটির পাইলট মিগুয়েল কুইরোগাকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিলো সান্তা ক্রুজ এ্যায়ারপোর্টের কমকর্তারা। বলিভিয়ার এই বিমানবন্দর থেকেই বিমানটি ম্যাডেলিনের উদ্দেশ্যে আকাশে উড়ে।
ফাঁস হওয়া একটি ট্যাপে পাইলটকে ‘সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক বিভ্রাট’ এবং ‘সীমিত ফুয়েলের’ কথাও বলতে শুনা যায়। ব্রাজিল এবং বলিভিয়া সীমান্তে কবিজা বিমানবন্দরে তার ফুয়েল গ্রহণের পরিকল্পনা থাকলেও তা ব্যর্থ হয়। কারণ বিমানবন্দরটি রাতে বন্ধ থাকে বলে ব্রাজিলের গ্লোবো পত্রিকা জানায়। অবশ্য কলম্বিয়ার বোগোটা বিমানবন্দরে ফুয়েল গ্রহণ করার সুযোগ থাকলেও পাইলট তা না নেয়নি।
বিমানটির ফ্লাইট রেকর্ড যুক্তরাজ্যে পরীক্ষা করা হবে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া কয়েক মাস লেগে যেতে পারে।
বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মরলেস বিমান বিধ্বস্তের পিছনে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
মন্তব্য চালু নেই