সিনেমার শ্যুটিংয়ে ট্রেন ভাড়ায় আয় বাড়ছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের
ভারতীয় সিনেমায় ‘রেলের দৃশ্য’ বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পেয়েছে। ‘পথের পাঁচালী’র সময় থেকে শুরু করে হালফিলের ‘প্রাক্তন’—রেল শ্যুটিংয়ের এক অন্যতম ‘প্রপ’।
সিনেমার ‘বক্স-অফিস’ ভরে দর্শকদের কৃপায়। বাংলা থেকে রেলের ‘বক্স- অফিস’ ভরে উঠছে সিনেমার সৌজন্যে! শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব!
বিভিন্ন সিনেমার শ্যুটিং থেকে ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষে ৬০ লক্ষ টাকারও বেশি আয় করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। সূত্রের খবর, আয় বৃদ্ধির পরিমাণে রীতিমতো খুশি রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। সিনেমার শ্যুটিংয়ে রেলের পরিকাঠামো ভাড়া দিতে এবার ‘এক জানালা’ নীতিও অনুসরণ করছে রেলমন্ত্রক। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “এখন অনেক প্রযোজনা সংস্থা শ্যুটিংয়ের জন্য রেলের পরিকাঠামো ভাড়া চাইছে। তাদের যাবতীয় সুবিধার দিকে আমরা নজর রাখি। শ্যুটিংয়ের স্থান নির্বাচন থেকে নিরাপত্তা— সবই আমাদের নজরে থাকে। এ সবের জন্যই রেলের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।’’
ভারতীয় সিনেমায় ‘রেলের দৃশ্য’ বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পেয়েছে। ‘পথের পাঁচালী’র সময় থেকে শুরু করে হালফিলের ‘প্রাক্তন’—রেল শ্যুটিংয়ের এক অন্যতম ‘প্রপ’। রেলমন্ত্রক সূত্রের খবর, গত অর্থবর্ষে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আয়ের বেশির ভাগটাই এসেছে ‘এম এস ধোনি— অ্যান আনটোল্ড স্টোরি’, ‘তিন’ এবং ‘প্রাক্তনে’র মতো ছবির শ্যুটিং থেকে। এই তিনটির মধ্যে ‘এম এস ধোনি— অ্যান আনটোল্ড স্টোরি’ থেকে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে। আয়ের পরিমাণ ২৯.৯৬ লক্ষ টাকা। নীরজ পাণ্ডে পরিচালিত ওই ছবির একটি অংশের শ্যুটিং হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর স্টেশনে।
ঋভু দাশগুপ্ত পরিচালিত অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘তিন’ সিনেমার শ্যুটিং থেকে রেলের আয় হয়েছে ১০ লক্ষ টাকার কিছু বেশি। ওই সিনেমার একটি অংশের শ্যুটিং হয়েছিল সাঁতরাগাছি স্টেশনে। নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘প্রাক্তন’-এর একটা বড় অংশ জুড়েই ছিল রেলযাত্রা। ‘প্রাক্তন’ রেলকে দিয়েছে সাড়ে আট লক্ষ টাকার কিছু বেশি। এছাড়াও দেব এবং নুসরত অভিনীত ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের একটি সিনেমা থেকে রেলের আয় হয়েছে সাড়ে ন’লক্ষ টাকা।
রেলের আয়ের বড় অংশই আসে পণ্যপরিহণ এবং যাত্রিভাড়া থেকে। এছা়ড়া রয়েছে আয়ের ‘অন্যান্য’ খাতও। ওই খাতে আয় হয়, বিজ্ঞাপন, বাণিজ্যিক পরিকাঠামো ভাড়া, সিনেমার শ্যুটিংয়ের ভাড়া থেকে। ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষে শ্যুটিং থেকে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আয় হয়েছিল ২০ লক্ষ টাকা। তার আগের আর্থিক বছরে এই আয় ছিল সাত লক্ষ টাকার আশপাশে। অর্থাৎ, গত তিন বছরে রেলের এই শাখায় শ্যুটিংয়ের ভাড়া থেকে আয় বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এই আয়ের প্রায় অর্ধেকটা এসেছে শালিমার স্টেশন থেকে। ওই স্টেশনটি শ্যুটিংয়ের জন্য ভাড়া দিয়ে প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা আয় করেছে রেল।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বলিউডের সিনেমাগুলির বড় অংশের শ্যুটিং হয় রেলের কেন্দ্রীয় জোনে। স্বভাবতই, শ্যুটিং থেকে সবচেয়ে বেশি আয় হয় তাদেরই। ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষে ওই জোনের আয় হয়েছিল প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা।
মন্তব্য চালু নেই