আ.লীগের সংসদীয় দলের সভা

সিটি নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়ার নির্দেশ শেখ হাসিনার

সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘হরতাল-অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াত জোট যে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তার বিরুদ্ধে জনগন ভোট দিতে প্রস্তুত। এজন্য জনগণকে সংহঠিত হতে হবে। তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দল সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলদের বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’

নিজের নির্বাচনী এলাকায় নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার জন্য প্রত্যেক সংসদ সদস্যকে নির্দেশ দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় তিনি এই নির্দেশ দেন। অধিবেশন শেষে জাতীয় সংসদ ভবনে সরকারি দলের সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সিনিয়র সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ড. আবদুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

দলীয় সূত্র জানায়, সভায় নেতাদের পুরো বক্তব্যেই ছিল আসন্ন তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের শান্তির পক্ষে ভোটযুদ্ধ। বিএনপি-জামায়াত জোট যে আন্দোলনের নামে সহিংসতা-নাশকতা চালিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করছে, এসব বিষয়গুলো নির্বাচনী প্রচারে জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। যাতে ভোটাররা সচেতন হয়ে সন্ত্রাসী-নাশকতাকারী ও খুনীদের না বলে, আমাদের পক্ষে অর্থাৎ শান্তি ও গণতন্ত্রের পক্ষে ভোট দেয়। একইসঙ্গে বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস সমস্যার সমাধান, হাতিরঝিলসহ রাজধানী ঢাকার বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধনের বিষয়গুলোও ঢাকার ভোটারদের সামনে তুলে ধরার নির্দেশ দেন তিনি।

সূত্র জানায়, বৈঠকে তিন সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিটি এলাকার এমপিদের ওই সব এলাকায় দল সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঢাকা উত্তরে ফারুক খান এবং দক্ষিণে ড. আবদুর রাজ্জাক নির্বাচন পরিচালনায় সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন। আর ঢাকা মহানগরীর ১৫টি নির্বাচনী এলাকায় ভোটকেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করা হবে। সংসদ সদস্যরা এসব টিমে বিভক্ত হয়ে প্রচার চালাবেন। আর কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা পুরো নির্বাচনগুলো মনিটরিং করবেন। তবে কোনভাবেই নির্বাচনী আচরণবিধি যাতে লংঘিত না হয় সেজন্য মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদেরও সতর্ক করা হয়। একইসঙ্গে সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাসীরা কোনো নাশকতা-সহিংসতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্যও এমপিদের নিজ নিজ এলাকায় সতর্ক অবস্থানে থাকারও নির্দেশনা দেয়া হয়।

বৈঠকে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘তিন সিটি করপোরেশন এলাকায় যে যে জেলার আঞ্চলিক জনসংখ্যা বেশি, ওই এলাকার সংসদ সদস্যদের সেখানে কাজ করতে হবে। নিজের এলাকার লোকদের সংগঠিত করে দলের প্রার্থীর পক্ষে ভোট আনতে হবে।’

সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনটা চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিতে হবে। তাই এমপি-নেতাদের ঘরে বসে থাকলে চলবে না। প্রতিটি ভোটারের কাছে গিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের নৈরাজ্য এবং বর্তমান সরকারের উন্নয়ন-সাফল্যেগুলো তুলে ধরতে হবে।’

একাধিক প্রার্থিতা প্রসঙ্গে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘এক একটি ওয়ার্ডে ৮/১০ জন করে আমাদের দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী। সেক্ষেত্রে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত একক প্রার্থী নিশ্চিত করা সম্ভব হতে পারে।’

ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘ঢাকা উত্তরের চাইতে দক্ষিণে দলের মেয়র প্রার্থীকে বিজয়ী করতে বেশি পরিশ্রম করতে হবে।’

এ সময় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘মানুষের আস্থা অর্জনে এলাকার জনগণের পাশে থাকতে হবে। জনগণের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাদের সুখ-দুঃখে পাশে থাকতে হবে। একইসঙ্গে সংগঠনকেও জোরদার করতে হবে, ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে।’



মন্তব্য চালু নেই