অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্বে রুখে দাড়াতে

সাহস আছে ও থাকবে : সমাজকল্যাণমন্ত্রী

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী বলেন সত্য বলার সাহস তাঁর ছিল, আছে, চিরদিনই থাকবে। অশুভ শক্তিকে বিলোপ করতে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে, দুর্নীতির কালো থাবা ভেঙ্গে দিতে তিনি কোনদিনই পিছপা হননি, কোন দিন হবেনও না। দেশপ্রেমে তিনি চিরদিনই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাবেন। ১৩ জুলাই দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় “সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর পুলিশ নিয়োগের তালিকা, টাকা নেয়ার অভিযোগ এপিএসের বিরুদ্ধে” শিরোনামে নিজস্ব প্রতিবেদক মারফত যে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে তা সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়-সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মৌলভীবাজার জেলায় পুলিশে লোক নিয়োগের জন্য ৫৫ জনের একটি তালিকা প্রদান করেন, যার মধ্যে থেকে ১৫ জনের চাকরি হয়েছে। এখান থেকে ৬ জনের কাছ থেকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর এপিএস শ্রীকান্ত ও দেহরক্ষী আমিনুল “উৎকোচের বিনিময়ে চুক্তি করেন”। প্রকাশিত সংবাদে আরও বলা হয় ৫৫ জনের মধ্য থেকে মাত্র ১৫ জনের চাকরি হওয়ায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ক্ষুদ্ধ হন এবং ঐ ক্ষোভের জের ধরে ১০ জুন মৌলভীবাজার জেলা আইন শৃংঙ্খলার সমন্বয় কমিটির সভায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অশোভন আচরন করেন।” উল্লেখিত সংবাদে আরো বলা হয় “মন্ত্রীর সুপারিশের তালিকায় নাম ওঠাতে তাদের (চাকরি প্রার্থী) কাছ থেকে ১৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়েছে। আরো বলা হয়েছে চাকুরি হলে জনপ্রতি আরো ২ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা দিতে হবে।” এক্ষেত্রে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন-১৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা কাদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে তার নাম, পরিচয় কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। অথচ ঢালাও ও মনগড়াভাবে রিপোর্ট করা হয়েছে যে সুপারিশে নাম ওঠাতেই ১৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে কমলগঞ্জের এক নাম পরিচয়হীন ইউপি সদস্যের সাথে কথা বলে প্রথম আলো পত্রিকার প্রতিবেদকটি জানতে পেরেছেন যে ওই ইউনিয়নের দুই এক জনের কাছ থেকে টাকা লেনদেন করা হয়েছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এই টাকা লেনদেনের বিষয়টির সত্যতা নিরূপনে প্রথম আলোর প্রতিবেদককে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেছেন প্রথম আলোর মত একটি দায়িত্বশীল, নামকরা পত্রিকায় এরকম নাম পরিচয়হীন মানুষের উদ্ধৃতি দিয়ে কল্পিত ও মনগড়া সংবাদ পরিবেশন করে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। যা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসীন আলী এমপি এই সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

মন্ত্রী বলেন উল্লেখিত লোক নিয়োগে তাঁর এপিএস ও গানম্যানকে জড়িয়ে উৎকোচ গ্রহণের বিবৃতি প্রকাশ করার মাধ্যমে মন্ত্রীকে হেয় প্রতিপন্ন করার একটি অশুভ তৎপরতা চালনো হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদটি পড়ে মন্ত্রীর নিকট প্রতিয়মান হয়েছে যে, এই সংবাদের পিছনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক পতিপক্ষ একজন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতার পক্ষে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে মৌলভীবাজার জেলার সাবেক পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন তিনি রাজনীতি শুরু করেন বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা আন্দোলনেরও আগে থেকে। তিনি ৬৬তে ৬দফা, ১১ দফা থেকে শুর“ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন।

তিনি ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামীলীগের থানা কমিটি ও জেলা কমিটিতে সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি টানা তিনবার পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। একবার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ২০০৮ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানকে প্রায় ৪০ হাজার ভোটে পরাজিত করেন। দশম সংসদে পুনরায় এমপি নির্বাচিত হলে তাঁকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। মন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর মন্ত্রণালয়ের সমস্ত কাজ তিনি সৎ ও দক্ষতার সাথে পালন করে যাচ্ছেন। তাঁর উদারতা ও সততার কথা দেশের সর্ব মহলে প্রশংসিত। তিনি যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দক্ষতার সাথে তার মন্ত্রণালয় পরিচালনা করছেন, সততার সাথে কাজ করছেন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করছেন, তখন একটি কুচক্রি মহল তাঁর সুনাম, সততা, খ্যাতি নষ্ট করতে সংবাদপত্রের মত মহান গণমাধ্যমকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছেন। যা কোন ভাবেই কাম্য হতে পারে না।

মন্ত্রী বলেন তিনি আওয়ামীলীগের তৃণমূলের নেতা। তিনি কাজ করেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের গণমানুষের সাথে। তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে গ্রাম-গ্রামাঞ্চলে অলি-গলিতে ছুটে বেড়িয়েছেন। সংগঠনের কাজে গ্রামেগঞ্জে সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে অবস্থান করায় তাঁর পরিচয় কেবল মন্ত্রী-এমপি হিসেবে নয়, তার পিছনে রয়েছে বিরাট রাজনৈতিক আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধ। সিলেট বিভাগের প্রতিটি থানায়, গ্রামে গঞ্জে তিনি পরিচিত এবং সমাদৃত। তাই সারা জেলার মুক্তিযোদ্ধারা, শহীদ পরিবারের সন্তানেরা, আওয়ামীলীগের সাধারণ কর্মীর সন্তানেরা তাঁর কাছে আসলে তিনি যোগ্যতম বিবেচনায় তাদের নাম সুপারিশ করেন। প্রায় প্রতিটি রাজনীতিবিদ কেই সম্ভবত এই রকম মধুর কষ্ট মেনে নিয়ে সুপারিশ কমবেশি করতে হয়। তাঁর কাছে গিয়ে কোন অভাবী মানুষ খালি হাতে ফেরেন না। অনেক ক্ষেত্রে মন্ত্রী নিজে উদ্যোগী হয়ে অনেককে দান করেন।

মন্ত্রী বলেন উৎকোচ গ্রহণ করে টাকা পয়সার মালিক হতে চাইলে হয়তো তা সম্ভব হতো কিন্তু গোটা সিলেটের এত মানুষের সম্মান তিনি কখনই পেতেন না। সুতরাং উৎকোচ গ্রহণে তার এপিএস ও গানম্যানকে জড়িয়ে তাঁকে সমাজের চোখে হেয় প্রতিপন্ন করতে যে অপচেষ্টা করা হয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মন্ত্রী আরো উল্লেখ করেছেন যে, একটি কুচক্রি মহলের হীনস্বার্থ রক্ষার্থে ব্যক্তিগতভাবে প্রভাবিত হয়ে এই প্রতিবেদনটি করা হয়েছে যার সাথে সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর ব্যক্তি সত্ত্বার কোন মিল খুঁজে পাওয়া যাবে না।



মন্তব্য চালু নেই