সালাহ উদ্দিনকে ফিরত দিবে ভারত

বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করার কথা স্বীকার করে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে ঢাকায় ভারতীয় কূটনীতিকরা জানিয়েছেন। আর সরকারের নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন, সালাহ উদ্দিনকে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতের কাছে কূটনৈতিক পর্যায়ে অনুরোধ জানাবে বাংলাদেশ। খবর দৈনিক যুগান্তর।

ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনার পংকজ শরণ বলেছেন, বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিনের বিষয়টি আমাকে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সচিবালয়ে মঙ্গলবার বিকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তবে এ বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।

সালাহ উদ্দিনের ব্যাপারে সরকারের চিন্তা-ভাবনা কি জানতে চাইলে মঙ্গলবার রাতে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. দীপু মনি যুগান্তরকে বলেন, সালাহ উদ্দিন মেঘালয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। ফলে ভারতের আইনি প্রক্রিয়া মেনেই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হবে।

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের একজন উচ্চপর্যায়ের কূটনীতিক মঙ্গলবার রাতে যুগান্তরের সঙ্গে আলাপকালে স্বীকার করেছেন, সালাহ উদ্দিনকে ভারতে পাওয়া গেছে।

এ পরিস্থিতিতে ভারত সরকার কি ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার চাইলে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। একপর্যায়ে ভারতের ওই কূটনীতিক বলেন, সালাহ উদ্দিনকে দিয়ে আমাদের কাজ কি, আমরা তাকে দিয়ে কি করব, সব বিষয়ে আমাদের জড়াবেন না। আমরা তাকে ডিপোর্ট করে দেব।

বিএনপির এ নেতার কাছে পাসপোর্ট না থাকায় তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে ভারতীয় কূটনীতিক বলেন, বাংলাদেশ থেকে লাখ লাখ মানুষ অবৈধভাবে ভারতে যায়।

তাদের সবার বিরুদ্ধে কি আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়, নাকি এটা সম্ভব, বলুন? আমাদের কাছে সালাহ উদ্দিনও যা বাংলাদেশের অন্য নাগরিকও একই। ফলে তাকেও অন্যদের মতোই ফেরত পাঠানো হবে।

ঢাকায় ভারতের একজন সাবেক হাইকমিশনার এ বিষয়ে যুগান্তরকে বলেছেন, সালাহ উদ্দিনকে যত তাড়াতাড়ি ফেরত পাঠানো যায় তত সহজে ঝামেলা মুক্ত হওয়া যায়। আইনি প্রক্রিয়ায় গেলে আদালত তাকে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে জরিমানা করার পরও দেশে ফেরত পাঠাবেই।

এই পর্যায়ে তাকে খুব বেশি দিন পুলিশের কাছে রাখা সম্ভব নয়। কোর্টে নিতে হবে। তারপর রিমান্ড আবেদন করে বিচার আরম্ভ হওয়ার আগেই ডিপোর্ট করে দেবে বলে আমার ধারণা। সালাহ উদ্দিনের দায় ভারত নেবে না বলেই তার মত।

শিলংয়ের ইস্টার্ন ক্রনিকল পত্রিকার ডেস্ক চিফ ডেভিড লেইথফালেং মঙ্গলবার রাতে টেলিফোনে যুগান্তরকে জানান, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শিলং নগরীর গলফ লিংক এলাকায় এক ব্যক্তিকে উদ্দেশ্যহীন ঘোরাফেরা করতে দেখে টহল পুলিশ তাকে আটক করে।

তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ সালাহ উদ্দিন বলে পরিচয় দিলেও তাকে কিছুটা অপ্রকৃতিস্থ মনে হচ্ছিল। তার কাছে বাংলাদেশের পাসপোর্ট কিংবা অন্য কোনো কাগজপত্রও পাওয়া যায়নি। তিনি তেমন কিছু গুছিয়ে বলতে পারেননি। এ অবস্থায় পুলিশ তাকে এখানকার একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করে। তবে সন্ধ্যার দিকে তাকে সাধারণ মেডিকেলে ভর্তি করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিলং নগরীর পুলিশ প্রধান ভিভেক সিয়াম বলেছেন, পুলিশের একটি টহল দল তাকে ওই এলাকায় (গলফ লিংক) ইতস্তত ঘোরাফেরা করতে দেখে। তিনি বলেছেন, তিনি বাংলাদেশ থেকে এসেছেন কিন্তু তার স্বাস্থ্য ভালো নয়।

ফলে তারা তাকে মেঘালয় ইন্সটিটিউট অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে মানসিক ব্যাধি বিভাগে ভর্তি করান। পুলিশ প্রধান আরও বলেন, মঙ্গলবার তাকে সাধারণ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়ার পর আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানব।



মন্তব্য চালু নেই