সার্চ কমিটি : আশা-নিরাশায় দুলছে বিএনপি

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য গঠিত ‘সার্চ কমিটি’নিয়ে আশা নিরাশায় দুলছে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। এক নেতার কণ্ঠে হতাশার সুর থাকলেও আরেক নেতার মধ্যে আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই। সার্চ কমিটি নিয়ে নতুন কোনো আশা দেখতে পাচ্ছেন না বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অপরদিকে, নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও এই কমিটি নিয়ে বেশ আশাবাদী দলটির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘সার্চ কমিটি’ কী কাজ করবে তা স্পষ্ট। তাই তাদের কাছ থেকে নতুন কোনো আশার আলো বিএনপি দেখছে না। তিনি বলেন, মানুষ দেশের রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের আশা করেছিল। কিন্তু ‘সার্চ কমিটি’তে যাদের রাখা হয়েছে, তাদের কাছ থেকে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন আশা করা যায় না। তারপরও যদি তারা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করতে পারেন, তাহলে মানুষ বুঝবে, দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে তারা কাজ করেছেন।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে জাতিসংঘের আলোচনার প্রস্তাবের বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন,‘সার্চ কমিটি’ গঠনের আগে এই উদ্যোগ নেয়া হলে এটা ফলপ্রসূ হতো। তবে এর আগে জাতিসংঘের কোনো উদ্যোগই সফল হয়নি।

গেল শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে জাতীয়তাবাদী যুবদলের নতুন কমিটির সদস্যদের নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর মহাসচিব সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব বলেন।

এদিকে, একই দিন দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সার্চ কমিটি নিয়ে অনেকে নিরাশার কথা বলছেন। আমি আশা করছি এই কমিটি নির্বাচন কমিশনার হিসেবে এমন ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করবে, যাদের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল না, বা নেই। জ্ঞান, সততা, গ্রহণযোগ্যতা, দলীয় স্বার্থ-সম্পর্কিত নন, এমন ব্যক্তিদের নাম তারা সুপারিশ করবে।‘সার্চ কমিটি’র সদস্যদের উদ্দেশে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, আমাদের দলীয় কাউকেও আপনারা সুপারিশ করবেন না।’

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ‘জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল’ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত ওই সভায় ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন,‘সার্চ কমিটি’র সদস্যদের মধ্যে কেবল সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই। বাকিদের সম্পর্কে দলীয়ভাবে বলা হয়েছে। নতুন কিছু বলার নেই। এ ছাড়া রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সমঝোতার কোনো বিকল্প নেই। বিএনপি শেষ সময় পর্যন্ত সমঝোতার চেষ্টা করে যাবে। সেই সমঝোতা হতে হবে সরকার ও সত্যিকারের বিরোধী দলের মধ্যে। তা হবে নির্বাচন নিয়ে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব, আশা করি সরকার এগিয়ে আসবে।

একই দিনে রাজধানীতে পৃথক দুটি অনুষ্ঠানে বিএনপির অন্যতম এই দুই নীতিনির্ধারকের বক্তব্যে আশা নিরাশা দুটো সুরই পাওয়া গেল।



মন্তব্য চালু নেই