সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন ঢাকা

৫ জানুয়ারি ২০ দলীয় জোট ও আওয়ামী লীগের মুখোমুখি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের বাস ও লঞ্চ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকামুখি যাত্রীরা। এতে পরিবহন ও লঞ্চ মালিক-শ্রমিকরা বলছেন, উপরের নির্দেশেই যান চলাচল বন্ধ রাখছেন তারা।

রাজশাহী: রাজশাহী থেকে ঢাকার সঙ্গে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নাশকতার আশঙ্কায় রোববার সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় বাস মালিকরা।

হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা।

রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর রহমান পিটার জানান, ভোরে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে দুই থেকে তিনটি বাস ছেড়ে যায়। এরপরেই বাস মালিকরা সিদ্ধান্ত নেয় রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী বাসগুলো চলাচল বন্ধ করে দেয়ার।

Barisal-0 সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন ঢাকাবগুড়া: পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। রোববার সকাল থেকে ঢাকাগামী কোনো বাস ছেড়ে না যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো যাত্রী।

বাস চলাচল বন্ধের কারণ হিসেবে পরিবহন শ্রমিক সূত্র জানিয়েছে ৫ জানুয়ারি ঢাকায় ২০ দলীয় জোটের সমাবেশকে কেন্দ্র করে উপরের নির্দেশে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

দিনাজপুর: ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে সারা দেশের মতো দিনাজপুরেও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ঢাকার সঙ্গে সব রকম বাস চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

এদিকে রোববার সকাল ১১টার দিকে ঢাকামুখী বাসের কাউন্টারে এসে যাত্রীরা জানতে পারেন গাড়ি বন্ধ। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে চরম বিড়ম্বনায় পড়ছেন যাত্রীরা।

রংপুর: ৫ জানুয়ারী বিএনপির ঢাকায় কালো পতাকা মিছিল ও সমাবেশকে ঘিরে দেশজুড়ে নাকশকতা হতে পারে এ আশঙ্কায় রংপুরে ঢাকাগামী দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মোটর বাস মালিক সমিতি।

শনিবার রাত ১২টার পর থেকে অঘোষিতভাবে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে চরম বিপাকে পড়েছে ঢাকাগামী যাত্রীরা।

বাস সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন ঢাকানাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাস চালক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতারা আর পুলিশের হুকুমের কারণে রংপুর থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল আপাতত বন্ধ আছে।’

পটুয়াখালী: ৫ জানুয়ারি সোমবার বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মুখোমুখি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালী থেকে দূরপাল্লার সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

রোববার সকাল ৭টা থেকে জেলার বাসস্টান্ড থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি। এদিকে হঠাৎ করে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া বাস চলচল বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পরেছেন দক্ষিণ অঞ্চলের সাধারণ যাত্রীরা। তবে এ বিষয়ে জেলার বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাটোর: নাটোর থেকে ঢাকামুখী সব যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাস মালিকরা।

রোববার সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ করেই শহরের কানাইখালী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড ও হরিশপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকামুখী বাসগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। আকস্মিকভাবে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েন নারী-শিশুসহ বিভিন্ন ধরনের যাত্রীরা।

নাটোর জেলা বাস মিনিবিাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাসিরুর রহমান খান এহিয়া চৌধুরী জানান, সংশ্লিষ্ট পরিবহন কর্তৃপক্ষ নিজ থেকেই তাদের ঢাকামুখী বাস বন্ধ করে দিয়েছে।

ঝালকাঠি: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ৫ জানুয়ারির সমাবেশকে ঘিরে ঝালকাঠি থেকে ঢাকাগামী বাস-লঞ্চ সবই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে যাত্রীরা ঢাকায় যেতে না পেরে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

রোববার সকাল থেকে ঝালকাঠি আন্তঃজেলারবাস চলাচল করলেও বন্ধ রয়েছে দূর পাল্লার বাস। দুপুর থেকে ঝালকাঠি থেকে ঢাকা যাওয়ার সকল রুটে লঞ্চ ও বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

উপরের নির্দেশনা থাকায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক দূরপাল্লার কোচের স্থানীয় টিকিট কাউন্টারের সুপারভাইজার।

খুলনা: এদিকে ঢাকা থেকে দেয়া নির্দেশেই খুলনা থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পরিবহন শ্রমিক নেতারা।

রোববার সকাল থেকে নির্ধারিত সময়ে বাস রাজধানীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেলেও বিকেল তিনটার পর থেকে তা বন্ধ রাখা হয়।

ঢাকা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পরিবহন শ্রমিক নেতারা।

লক্ষ্মীপুর: বিএনপির ৫ জানুয়ারি ঢাকা সমাবেশকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীপুর থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

শনিবার সকাল থেকেই অধিকাংশ কোম্পানির বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ঢাকাগামী যাত্রীরা।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জোনাকী পরিবহনের এক চালক জানান, ৫ জানুয়ারি বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে তাদের মালিক পক্ষ ৪ ও ৫ জানুয়ারি গাড়ি না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। লঞ্চ-২ সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন ঢাকা

নারায়ণগঞ্জ: রাজধানী ঢাকার সঙ্গে পাশের জেলা নারায়ণগঞ্জের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। রোববার দুপুর ১২টার পর থেকে এ রুটে চলাচল করা সকল প্রকার গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যস্ততম এ রুটে যাত্রীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।

নীলফামারী: ৫জানুয়ারি ঢাকা সমাবেশকে ঘিরে রোববার সকালে নীলফামারী থেকে ঢাকাগামী বাসগুলোকে ছেড়ে গেলেও সন্ধ্যায় ঢাকা অভিমুখে কোন বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

নীলফামারী বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান লিটন বলেন, ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে সন্ধ্যায় ঢাকা অভিমুখে কোনো বাস যাবে না। ঢাকা যেতে যেসব যাত্রী টিকিট কেটেছিলেন তাদের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা: প্রশাসনের নির্দেশে চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকাগামী সকল প্রকার বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

রোববার দুপুর থেকে বাসগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।

এক পরিববহন কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা বেলা ১২টার দিকে তাকে বলে গেছেন , বাস ছাড়ার আগে থানায় যোগাযোগ করতে।

এদিকে আকস্মিক বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন এ অঞ্চলের হাজারো যাত্রী।



মন্তব্য চালু নেই