আইওআরএ সম্মেলন____________________________________________________

সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদার করতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদার করে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করতে ভারত মহাসাগর রিম এ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এ অঞ্চলের জন্য দক্ষ নাবিক তৈরিতে বাংলাদেশে ভারত মহাসাগর কারিগরী ও বৃত্তিমূলক একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনেরও প্রস্তাব করেন।

আজ জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে ভারত মহাসাগর রিম এ্যাসোসিয়েশন সামিটে ‘একটি শান্তিপূর্ণ স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য রিম সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদারকরণ’ শীর্ষক সাধারণ বিতর্ক অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে একথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অভিষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে মহাসাগর ও সমুদ্রপথ উন্নয়নের মাধ্যমে রিম দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশকে রূপান্তরের প্রচেষ্টা চালানো। আসুন সামুদ্রিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য নিজেদেরকে উৎসর্গ করি । আসুন একসঙ্গে তরী ভাসাই।’

শেখ হাসিনা আইওআরএ নেতৃবৃন্দের প্রতি সমুদ্রগামী নাবিকদের নিরাপত্তা এবং পেশাগত অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাদের দক্ষতা এবং নিবেদিত কার্যপ্রনালী কখনো কখনো অনাকাঙ্খিত পরীক্ষার সম্মুখীন হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এ অঞ্চলের জন্য দক্ষ নাবিক পুল তৈরিতে বাংলাদেশে ভারত মহাসাগর করিগরি ও বৃত্তিমূলক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন।

বাংলাদেশকে বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরের উপকূলবর্তী দেশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এর সমুদ্র সম্পদ টেকসইভাবে ব্যবহারের ওপরই ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং সামাজিক কল্যাণ নিহিত রয়েছে। এজন্য আমরা এসডিজি-১৪ কে আমাদের ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত করেছি এবং সমুদ্র অর্থনীতির দিকে আমাদের মনসংযোগকে নবায়ন করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় সমুদ্রসীমানা নিয়ে পাশ্ববর্তী দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ বিরোধ মীমাংসা আমাদের অর্থনৈতিক সম্ভবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে বলেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘যদিও আমরা এ বিষয়টিতে সম্পূর্ণভাবেই অবগত যে, সমুদ্র এলাকার সম্পদ আহরণের সামর্থের ওপরই আমাদের এই সাফল্য নির্ভর করছে।’

‘ভারত মহাসাগর রিম এ্যাসোসিয়েশন এবং সদস্যভূক্ত দেশগুলোকে আমরা আমাদের আকাঙ্খাকে বাস্তবে রূপ দেয়ার প্রকল্পের জন্য একটি প্রাকৃতিক বাসস্থান হিসেবেই আমরা দেখছি,’ বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

ভারত মহাসাগরকে আমাদের নিরাপত্তা, যোগাযোগ, শান্তি এবং সমৃদ্ধির জন্য অন্যতম মাধ্যম হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বিশ্বায়নের এই যুগে একটি লাইফলাইন যার মাধ্যমে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক কনটেইনার জাহাজ, তিনভাগের একভাগ বাল্ক কার্গো এবং তিনভাগের দুইভাগ তেলের চালান পরিবাহিত হয়।

আইওআরএ’র ২০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই শীর্ষ সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ ইন্দোনেশিয়া। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী দেশসমূহ নিয়ে আইওআরএ’র এই জোট।

১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম ইন্দোনেশিয়ায় তিন দিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘স্ট্রেনথিং মেরিটাইম কো-অপারেশন ফর এ পিসফুল, স্ট্যাবল এন্ড প্রসপরাস ইন্ডিয়ান ওশান।’



মন্তব্য চালু নেই