সাধারণ বাজারের তালিকা, কিন্তু ৪০০ বছর আগে লেখা!

তার আসল নাম জিম পার্কার। ন্যাশনাল ট্রাস্ট অব ইংল্যান্ডের সঙ্গে আর্কিওলজি ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজ করেন।

সম্প্রতি দুটো চিঠি আবিষ্কার করেছেন তিনি। উচ্চমানের পার্চমেন্ট কাগজে লেখি চিঠি আসলে বাজারের তালিকা ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রতিদিনই তো আমরা বাজারের তালিকা তৈরি করি। কিন্তু জিমের পাওয়া তালিকা অতি মূল্যবান। কারণ এগুলো ১৭ শো শতকের কারো লেখা বাজারের তালিকা! এই আবিষ্কারের পর অনেকে পার্কারকে ইন্ডিয়ানা জোনসের নকল করে জিমডিয়ানা জোনস নামেও ডাকছেন।

ইংল্যান্ডের কেন্টের ঐতিহাসিক নোল হাউজে মিলেছে চিঠি দুটো। এই বাড়িটি মধ্যযুগে আর্চবিশপের অট্টালিকা ছিল। সেই ১৭ শো শতকেই বাড়িটির সংস্কার করা হয়। বাজারের তালিকার মাধ্যমে সেই পুরনো সময়ের এক দারুণ চিত্র ফুটে উঠেছে। ৪০০ বছর আগের লেখা কোনো বাজারের তালিকা পুরাতত্ত্ববিদদের কাছে এক ভিন্ন আমেজ তুলে ধরেছে।

ন্যাশনাল ট্রাস্টের ওয়েবসাইটে এই আবিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে। এই কম্পানি ইংল্যান্ড, ওয়েলস এবং নর্দান আয়ারল্যান্ডের ঐতিহাসিক স্থানগুলোর দেখভাল করে।

একটি চিঠি লেখা হয়েছে সেই ১৬৩৩ সালে। সেখানে বাসার জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের তালিকার কথা লেখা রয়েছে। এগুলো লন্ডন থেকে অ্যাসেক্সের কপ্ট হল-এ পাঠাতে বলা হয়। এটি লিখেছেন রবার্ট ড্র্যাপার নামের একজন। ধারণা করা হচ্ছে, যে ঠিকানায় দ্রব্যগুলো পাঠাতে বলা হয়েছে, রবার্ট সেই বাড়ির প্রধান ভৃত্য।

ড্র্যাপার চিঠি লিখেছেন যাকে তার নাম মিস্টার বিলবি। তালিকায় তিনি লেডি ক্র্যানফিল্ডের জন্য ২ ডজন পিউটার স্পুন, বাগানের জন্য একটি ফায়ারশোভেল, একটি নতুন ফ্রাইং প্যান এবং আরো কিছু জিনিসের কথা বলেছেন।

চিঠিতে তালিখ লেখা রয়েছে ১৬৩৩ সালের অক্টোবর মাসে।

লিনেনের ট্রাঙ্ক এবং আসবাবসহ অনেক বড় বড় জিনিস কপ্ট হল থেকে নোলে নেওয়া হয় ৩০০ বছর আগে। সেই সময় কপ্ট হলের মালিকের মেয়ের সঙ্গে নোলের মালিকের বিয়ে হয়।

পার্কার বলেন, নোল হাউজের অনেক পড়ে থাকা জিনিসের মধ্যে এই কাগজগুলো খুঁজে পাই আমি। দারুণ উত্তেজিত হয়ে পড়ি। প্রথম চিঠিটি গোল করে ভাঁজ করা ছিল, একেবারে ধুলোয় মলিন অবস্থা। তবে দেখেই বোঝা যায়, এটি একটি চিঠি। চিন্তাই করা যায় না, ১৭ শো শতকে বাড়ির প্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকার খোঁজ মিলে যাবে।

এই দুটো চিঠি উদ্ধারের পর তাদের অতি সাবধানে পরিষ্কার করা হয়েছে। বিশেষ ব্রাশ, রাবার পাউডার এবং আর্কিভাল ডকুমেন্ট ক্লিনার ব্যবহার করা হয়েছে। পরে আর্দ্রতাপূর্ণ চেম্বারে এগুলোকে রেখে কাগজের ফাইবারকে ভালো অবস্থায় নেওয়া হয়। তারপর একে পেপার প্রেসে নিয়ে মসৃণ করা হয়।

নোল হাউজের দেখাশোনার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন জ্যান কুটাজার। বলেন, এই চিঠি দারুণ মূল্যবান। একে সুষ্ঠুভাবে আগের অবস্থায় নেওয়ার চেষ্টা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভাবতেই অবাক লাগে, এই চিঠিতে ৪০০ বছর আগের কানো হাতের লেখা পড়া যাচ্ছে। সূত্র: ফক্স নিউজ



মন্তব্য চালু নেই