সাগরের পানির রঙের ভিন্নতা

ছোট বেলায় আমরা সবাই পড়েছি পানির কোনো রঙ নেই কিংবা পানিকে যে পাত্রে রাখা হয় এটি সে পাত্রের আকার ধারন করে। বাস্তবেও তাই। কিন্তু বিশাল বিশাল সাগর বা মহাসাগরের বিশাল জলরাশির ক্ষেত্রে উপরের আকাশের রঙ বদলের সাথে সাথে বদলে যায় সাগরের পানির রঙ।

আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হলে, পানির রঙও সেরকম হালকা ধূসর হয়ে যায়। তবে সাধারণভাবে আলোর বিক্ষেপনের কারণে আকাশ নীল দেখায় বলে, সমুদ্রের পানিও নীল হয়ে থাকে। সমুদ্রের পানির রঙ প্রধানত নির্ভর করে পানির সমতলে ছড়িয়ে পড়া সূর্যের আলোর ওপর।

সূর্যের আলো কাঁচের মতো। তাই, স্বচ্ছ পানিতে সূর্যের আলো প্রতিসরিত হয়ে সমুদ্রের তলদেশে ছড়িয়ে পড়ে। আর সাধারণত সূর্যের আলোর ৭ টি রঙের মধ্যে নীল রঙটি বেশি বিচ্ছুরিত হয়ে থাকে। আর সেকারণেই বেশীরভাগ সাগরের পানির রঙ নীল হয়।

তবে কখনো কখনো নীল ছাড়া অন্য রঙের প্রাধান্যও দেখা যায়। যেমন, আকাশ নীল থাকা স্বত্বেও বিশেষ কিছু অঞ্চলে আটলান্টিক মহাসাগরের পানির রঙ সবুজ দেখায়। উপকূলীয় বা মেরু অঞ্চলগুলোতে এ সবুজ রঙ বিশিষ্ট পানিগুলো বিদ্যমান থাকে।

কারণ হিসেবে বলা যায়, এ অঞ্চলে অতিরিক্ত পরিমানে সবুজ শৈবাল পাওয়া যায় যা সমুদ্রের পলি থেকে পুষ্টি জোগান করে। আর তলদেশের মৃত জলজ উদ্ভিদগুলো থেকে এক প্রকারের হলুদ রঙের রঞ্জক পদার্থ নিঃসৃত হয়, যা সমুদ্রের পানির সাথে মিশে গিয়ে পানির রঙ পরিবর্তন করে দেয় আর একারনে সূর্যের ৭ রকমের রশ্মিগুলোর মধ্যে সবুজ ছাড়া বাকি সবগুলো রঙই দ্রুত শোষিত হয়ে যায়।

একারণে এই অঞ্চলগুলোর পানির রঙ সবুজ বা সবুজাভ হয়ে থাকে। শুধু আটলান্টিক মহাসাগর নয়, এন্টার্কটিকা মহাদেশের বেশিরভাগ জলাভূমির পানির রঙই সবুজ।



মন্তব্য চালু নেই