সাঈদীর জনপ্রিয়তা পুজিঁ করে সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে চায় জামায়াত

মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে চায় জামায়াত। আপিলে সাঈদীর ফাঁসির রায় বহাল থাকলে প্রতিবাদে সেদিনই সারা দেশে হরতাল ডাকবে জামায়াত। এ জন্য দলটির হাইকমান্ড থেকে তাদের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য নুরন্নবী মাস্টার বলেন, ‘আমরা এখনো আশা করি- সরকার ন্যায়বিচারের মাধ্যমে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে সসম্মানে মুক্তি দেবে। যদি এর ব্যত্যয় ঘটে তবে আমরা আন্দোলন-কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হব।’

জামায়াত সূত্রগুলো বলছে, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী জামায়াতের তৃণমূল থেকে উচ্চপর্যায়ের একজন প্রভাবশালী নেতা। জামায়াতের রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় না এমন জামায়াত সমর্থকরাও তাফসির মাহফিলের কারণে সাঈদীর ভক্ত। সাঈদীর ফাঁসির রায় বহাল থাকলে জামায়াতের পক্ষে হরতাল বা এ ধরনের কঠোর কর্মসূচি দেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প পথ থাকবে না। গত বছর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর রায় ঘোষণার পর সারা দেশে কঠোর আন্দোলনে নামে জামায়াত। সেই সময় সাঈদীকে চাঁদে দেখা গেছে, এমন খবর মাইকে প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সারা দেশে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে জামায়াত। এবারও তারা নতুন কৌশলে সাঈদীর জনপ্রিয়তা কাজে লাগাতে চাইছে বলে দলটির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে সাঈদীর পক্ষ থেকে আপিল করা হয়। আপিলে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় সাঈদীর আইনজীবীর পক্ষ থেকে পিরোজপুর ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে ১৯৭২ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত পরিচালিত এ মামলার বিচারিক কার্যক্রমের সব নথিপত্র তলব করার আবেদন করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন। আবেদন খারিজ হওয়ায় সাঈদীর ন্যায়বিচার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার গভীর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা।

জামায়াতের সূত্রগুলো বলছে, আইনিভাবে মোকাবিলা করে সাঈদীর ফাঁসির রায় ঠেকানো যাবে না, এমন আশঙ্কা থেকেই দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার রাজ্জাক অনেক আগেই দেশ ছেড়েছেন। নতুন মামলার ভয়ে তিনিও দেশে ফিরছেন না সহসাই। তাঁর অনুপস্থিতিতে সাঈদীর আপিলসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছেন জামায়াতের আইনজীবীরা। এ অবস্থায় বিএনপি নেতা খন্দকার মাহবুব হোসেনের ওপর দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে জামায়াত।

সূত্র: দৈনিক কালের কণ্ঠ



মন্তব্য চালু নেই