সাঈদীর আপিলের রায় বুধবার
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের রায় বুধবার ঘোষণা করা হবে।
মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্টের ওয়েব সাইটে আপিল বিভাগের কজলিস্টে বুধবারের এক নম্বর আইটেম হিসেবে সাঈদীর রায় ঘোষণার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ রায় ঘোষণা করবেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
এরআগে গত ১৬ এপ্রিল উভয়পক্ষের শুনানি শেষে যে কোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে মর্মে সাঈদীর মামলাটি সিএভিতে রাখেন আপিল বিভাগ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ছয়জনের ব্যাপারে করা আপিলের মধ্যে সাঈদীর মামলাটি রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে।
এরআগে, জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার আপিল নিষ্পত্তি করে মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করা হয়েছে।
গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতে ইসলামির নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল। এর এক মাস পর ২৮ মার্চ আপিল করে উভয়পক্ষ।
গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে এ মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়।
সাঈদীর বিরুদ্ধে ২০টির মধ্যে আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে ট্রাইব্যুনাল রায়ে উল্লেখ করেন। এর মধ্যে দুটি অভিযোগে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়, আর ছয়টিতে কোনো দণ্ড দেওয়া হয়নি। প্রমাণিত না হওয়ায় বাকি ১২টি অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
২০১১ সালের ৩ অক্টোবর প্রথম ব্যক্তি হিসেবে সাঈদীর বিচার শুরু হয় ট্রাইব্যুনালে। প্রসিকিউশনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর। সাঈদীর বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। অপরদিকে আসামিপক্ষে সাক্ষ্য দেন ১৭ জন।
২০১১ সালের ১১ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। ১৪ জুলাই সাঈদীর বিরুদ্ধে সে অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেফতার হন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। ওই বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক দেখানো হয় তাকে। ২০১০ সালের ২১ জুলাই থেকে ২০১১ সালের ৩০ মে পর্যন্ত সম্পন্ন হয় তদন্ত কার্যক্রম।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে উভয়পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষ হয় ২০১২ সালের ডিসেম্বরে। ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর থেকে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক। তবে স্কাইপ কথোপকথনের জের ধরে বিচারপতি নিজামুল হকের পদত্যাগের পর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে ফের শুরু হয় যুক্তিতর্ক। সব প্রক্রিয়া শেষে ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয় মামলাটি।
এরপর গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীর মামলায় রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল-১।
মন্তব্য চালু নেই