সাংবাদিক নির্যাতনকারী এসআই প্রত্যাহার

সাংবাদিক নির্যাতনকারী রমনা থানার এসআই মেহেদী মেহেদী হাসানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে রমনা থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। রাত ১০টার দিকে রমনা থানার ওসি মশিউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিজয় নগর মোড় এলাকা থেকে নিউএজ পত্রিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নাজমুল হুদা সুমন ও তার বন্ধু ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী খাইরুজ্জামান শুভকে আটক করে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যান এসআই মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ।

১৫-২০ জন পুলিশ সুমন ও শুভকে পায়ের বুট ও বন্দুকের বাট দিয়ে বেধড়ক মারধর করে থানায় নিয়ে কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। দুইজনের শরীর ও মাথার বিভিন্ন অংশে আঘাত লাগায় সেখানে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি করা হয়।

সুমন ও শুভ জানান, রোববার বিকেল ৫টার দিকে সুমন তার বন্ধু শুভকে তার মোটরসাইকেলের পেছনে করে বিজয় নগর মোড় দিয়ে ফকিরারপুলের দিকে যাচ্ছিল। মোটরসাইকেল নিয়ে সুমন বিজয়নগর মোড়ে পৌঁছালে সেখানে কতর্ব্যরত এক ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি থামানোর সংকেত দেয়।

সুমন তার মোটরসাইকেল থামালে ওই পুলিশ মোটরসাইকেলের পেছনে কেন আরেকজন আরোহী নেওয়া হয়েছে তা জিজ্ঞেস করে। এসময় সুমন নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ওই বন্ধুকে নামিয়ে ফকিরাপুলের দিকে রওয়ানা দেয়। সেখানে থাকা অপর দুই পুলিশ সদস্য তাদের থামিয়ে সাংবাদিকের পরিচয়পত্র দেখতে চায়।

সুমন তার পরিচয় পত্র বের করার সঙ্গে সঙ্গেই এসআই মেহেদী হাসান সুমনকে শার্টের কলার ধরে নামিয়ে তাকে মারতে থাকেন। তার দেখাদেখি ওই এলাকায় টহলরত রমনা থানার ২০-২৫ জন পুলিশ দুইজনকে তাদের পায়ের বুট ও হাতে থাকা বন্দুকের বাট দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে থাকে। সেখানে মারধরের পর দুইজনকে টেনে-হিঁচড়ে পুলিশের ভ্যানে তুলে রমনা থানায় নিয়ে আসে। থানায় নিয়ে দ্বিতীয় দফায় মারধর করে।

বিষয়টি কাউকে জানানো হবে না এই শর্তে তাদের ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেন এসআই মেহেদী হাসান। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নেতারা তাদের থানা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে তাদের দুজনকে রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসকরা জানান, দুজনের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং নাজমুলের মাথার একপাশে ফেটে গেছে।

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাসুম বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক সানাউল হক সানী জানান, দোষী পুলিশদের শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানান।

যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই রমনা থানার এসআই মেহেদী হাসান এ বিষয়ে  জানান, প্রথমে তাদের থামতে বলা হয়। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তারা চ্যালেঞ্জ করে গাড়ি না থামিয়ে চলে যায়।

পরে বিজয়নগর আকরাম টাওয়ারের সামনে এসআই মোস্তফা তাদের আটকে দেন। গাড়ির কাগজপত্র ও সাংবাদিকের আইডি কার্ড দেখতে চাওয়া হয়। এরপর এসআই মোস্তফার সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। সেখান থেকে তাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওসি স্যারের নির্দেশে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কোনো পুলিশ সদস্য তাদের গায়ে হাত তোলেনি বলে জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই