সরকার দেশকে অন্যের হাতে তুলে দিতে ব্যস্ত : খালেদা জিয়া
দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দেশকে অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বুধবার রাজধানীতে এক ইফতার মাহফিলে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজ জনগণ শঙ্কিত- দেশে স্বার্বভৌমত্ব আছে কি না? কারণ দেশের মানুষ আজ নির্ভয়ে কোনো কাজ করতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘অবৈধ, অনির্বাচিত সরকার আজকে দেশ পরিচালনার নামে দেশকে বোধহয় অন্যের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। সেই ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে পারে শুধু দেশের মানুষ। এই সরকার ক্ষমতার আসার পর থেকেই দেশকে অন্যের হাতে তুল দেওয়া জন্য কাজ করছে। সেজন্য বিডিআর হত্যাকাণ্ড দিয়ে এর সূত্রপাত করেছে। এখন খুন-গুম করে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখবে।’
বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) হত্যাকাণ্ডের পর এই বাহিনীর মনোবল দুর্বল হয়ে গেছে, উল্লেখ করে বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘বিজিবি সীমান্তে থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে পারছে না। আজ সীমান্তের ভেতরে ঢুকে (বিএসএফ) মানুষ মেরে যাচ্ছে। তারা (সরকার) একটি কোনো প্রতিবাদ করতে পারে না। বাংলাদেশ আজ কোনো অবস্থায় চলে গেছে যে, মিয়ানমার পর্যন্ত হেলিকপ্টার দিয়ে আকাশসীমা লঙ্ঘন করে। বিজিবি আজ কিছু করতে পারছে না। কারণ নিজেদের দেশের মানুষ হত্যা করে তারা দুর্বল হয়ে গেছে।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ‘দুর্বল শক্তির সরকার’ আখ্যা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘এই সরকার দিয়ে মানুষের কল্যাণ হতে পারে না।’
রাজধানীর ইস্কাটনে লেডিস ক্লাবে বিএনপির অন্যতম অঙ্গসংগঠন ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- ড্যাবের ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন তিনি।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বদলে, পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, এ দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘পুলিশের মনমতো সবকিছু চলছে। তারা যাকে ইচ্ছা ধরে নিয়ে যাচ্ছে, ক্রসফায়ার দিচ্ছে। মহিলাদেরও নির্যাতন করছে। এসবের প্রতিবাদ করার কেউ নেই। প্রতিবাদ করলে তাদেরকে জেল-জুলুম, অত্যাচার সহ্য করতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘দেশের আইন-আদালত, বিচারালয় কোনোটাই নিরাপদভাবে কাজ করছে না। দেশের মানুষ আজ অত্যাচারিত, নির্যাতিত।’
দেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান খালেদা জিয়া।
মুল মঞ্চে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ড্যাবের সভাপতি এ কে এম ড. আজিজুল হক, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, পেশাজীবীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক ড. মাহবুব উল্লাহ, সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. খন্দকার মোস্তাহিদুর রহমান, পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, চিকিৎসক প্রফেসর ড. মান্নান মিয়া, আবদুল মবিন খান, অধ্যাপক ড. আশরাফ হোসেন ইফতার করেন।
ইফতার মাহফিল পরিচালনা করেন ড্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. জেড এম জাহিদ হোসেন।
আয়োজক সংগঠনের নেতাদের মধ্যে অধ্যাপক ডা. রফিকুল কবির লাবু, অধ্যাপক ডা. শহিদুল আলম, অধ্যাপক ডা. ডা. আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক ডা. যুগ্ম মহাসচিব এসএম ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. এবি ভূঁইয়া, অধ্যাপক ডা. আশরাফ উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. এম আফতাব উদ্দিন, অধ্যাপক ডা. মো. নুরুন্নবী, দপ্তর সম্পাদক ডা. প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাস বাবু, ডা. মো. মাগফুর রহমানসহ ড্যাবের কেন্দ্রীয় ও দেশের বিভিন্ন আইনিটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির অন্য নেতাদের মধ্যে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল মান্নান, যুগ্ম মহাসিচব মজিবুর রহমান সারোয়ার, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাখাওয়াত হোসেন জীবন, এমরান সালেহ প্রিন্স ছিলেন।
পেশাজীবীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপ-উপচার্য অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির প্রাক্তন সভাপতি অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব জাকির হোসেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ ইফতার মাহফিলে অংশ নেন।
মন্তব্য চালু নেই