ছাত্রদলের কমিটি

সরকারের নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছেন তারা

ছাত্রদলের পুনর্গঠিত কমিটি নিয়ে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। পদবঞ্চিতরা এই কমিটিকে পকেট কমিটি আখ্যা দিয়ে দ্রুত এই কমিটি বাতিলের দাবিতে ইতোমধ্যেই বিক্ষোভ করেছেন এবং সাত দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। তাদের অভিযোগ, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু সরকারের কাছ থেকে টাকা খেয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলন ব্যর্থ করতেই এই কমিটি ঘোষণা করেছেন।সরকারের নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণা দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা নেতাকর্মীরা। তারা বলেন, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আর আন্দোলনে আমাদের মূল দাবিই হবে এ্যানী ও টুকুকে বিএনপি থেকে বহিষ্কারসহ নবগঠিত কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি। এছাড়া ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে প্রতিদিন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশান চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

এই বিষয়ে ছাত্রদলের সাবেক সহ- সভাপতি তরুন দে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা সরকারবিরোধী কোন আন্দোলনেই রাজপথে ছিলেন না। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ওপর অভিযোগ রয়েছে সরকার বিরোধী আন্দোলনের জন্য বিএনপির কেন্দ্র থেকে যে টাকা (৪০ লাখ) দেওয়া হয়েছিলো তা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও বর্তমান কমিটিতে বিবাহিত এবং অছাত্ররাই বেশি। জুনিয়রদের মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই এটা একটি পকেট কমিটি ছাড়া আর কিছুই না।

কমিটি বাতিলের দাবিতে কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সাত দিনের কর্মসূচির কথা চিন্তা করেছি। এর ভেতরে থাকবে অবস্থান ধর্মঘট, বিক্ষোভ মিছিল ও বিএনপির অফিস ঘেরাও। আর কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

একই বিষয়ে ছাত্রদলের সাবেক সহ- সভাপতি জাভেদ হাসান স্বাধীন ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই কমিটি মূলত এ্যানী ও টুকু পকেট কমিটি। তাই এই কমিটি বাতিলের দাবিতে খুব শিগগির সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ মুন্না এই বিষয়ে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রাজপথে যে সকল নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি তাদেরকে ছাত্রদলে পদ দেওয়া হয়েছে। এমনকি সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক যাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদেরকে গত ৫ বছরে একদিনও রাজপথে দেখা যায়নি। তাই এই কমিটির জন্য শুধু ছাত্রদল নয় পুরো বিএনপিই হতাশ।

একই বিষয়ে ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম টিটু ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকার বিরোধী আন্দোলনে যারা ছিলেন না এবং মার্চ ফর ডেমোক্রেসি যাদের জন্য ব্যর্থ হয়েছে তাদেরকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত ছিলো বলেও প্রমাণ আছে। শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু সরকারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে সামনের দিনগুলোর সরকার বিরোধী আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য এই কমিটি দিয়েছে। আমি এ্যানী ও টুকুকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।

তবে এই বিষয়গুলোর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে ছাত্রদলের নবনির্বাচিত সভাপতি রাজীব আহসান ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, এটা সরকারের একটি ষড়যন্ত্র। ছাত্রদলের পুনর্গঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে যারা আন্দোলন করছে তাদের সাথে সংগঠনের আসলে কোন সম্পৃক্ততা নেই। এটা আমি গতকাল টেলিভিশনে ভিডিও ফুটেজে দেখেছি। ছাত্রদলের আন্দোলন দুর্বল করতেই সরকার এই চক্রান্ত করছে।

এই বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কমিটি গঠন হওয়ার পর অসন্তোষ দেখা দেবে এটাই স্বাভাবিক। এটি একসময় ঠিক হয়ে যাবে, কারণ সবার পরামর্শ নিয়েই এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটি বাতিলের কোন প্রশ্নই আসে না। সূত্র : ঢাকা টাইমস্



মন্তব্য চালু নেই