সরকারি নিষেধাজ্ঞা মানছেন না নির্মাতারা
গত ঈদুল আযহার সময় ‘হিরো-দ্য সুপারস্টার’, ‘হানিমুন’, ‘মোস্ট ওয়েলকাম-টু’ ও ‘আই ডোন্ট কেয়ার’ নামে চারটি ছবি মুক্তি দেয়া হয়। ছবিগুলোর প্রত্যেকটির নাম ইংরেজি হবার কারণে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অনেকেই তখন এর সমালোচনা করেন। যার প্রেক্ষিতে গত আগস্টে বাংলা ছবির ইংরেজি নামকরণে নিরুত্সাহিত করতে একটি নির্দেশনা জারি করে সরকার। তথ্যমন্ত্রণালয়ের উপসচিব রবিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে তখন জানানো হয়, ‘বর্তমানে ঢালাওভাবে বাংলা চলচ্চিত্রে ইংরেজি নাম ব্যবহার করা হচ্ছে; যা আমাদের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি হুমকিস্বরূপ। তাই বাংলা চলচ্চিত্রের নামের ছাড়পত্র প্রদানের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
অন্যদিকে সেন্সরবোর্ড নীতিমালার এসআরও ১৯৮৫ এর ধারা ১ এর উপধারা ‘এ’তে বর্ণিত আছে ‘বাংলাদেশ বা এর জনগণের সমসাময়িক ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, প্রথা ও পোশাকের পরিপন্থী কোনো বিষয় চলচ্চিত্রে থাকতে পারবে না।’ দীর্ঘদিন ধরে এই নীতিমালা মানা হচ্ছে না। এমন কি তথ্যমন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পরও টনক নড়েনি পরিচালক সমিতি, সেন্সরবোর্ড, পরিবেশক সমিতি কিংবা নির্মাতাদের। আর এ কারণেই অতিতের ধারাবাহিকতায় নতুন বছরও ইংরেজি নামধারী বেশ কিছু ছবি মুক্তি পেতে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব (চলচ্চিত্র) গৌতম কুমার ঘোষের কাছে জানিতে চাইলে তিনি এই পদে নতুন এসেছেন, প্রজ্ঞাপনটি দেখে বিস্তারিত বলতে পারবেন বলে জানান। তবে তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু তথ্যমন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, তা সকলকে মানতে হবে।’ এ বিষয়ে তিনি খোঁজখবর নেবেন বলেও জানান।
এদিকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘ইংরেজি নাম ব্যবহার না করার জন্যে আমরা একটি মৌখিক নির্দেশনা পেয়েছি। কিন্তু যারা এই নির্দেনার আগেই ছবির নাম নিবন্ধন করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে এটা কার্যকর হবে না। তারপরও কেউ যদি ইংরেজি নাম নিয়ে আসে, আমরা তা ফিরিয়ে দিচ্ছি।’
অন্যদিকে মুক্তির অপেক্ষা থাকা ওয়ার্নিং ছবির পরিচালক সাফি উদ্দিন সাফি বলেন, ‘নির্দেশনা জারির অনেক আগেই আমার ছবির নাম নিবন্ধন করা হয়েছিল। তাই এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। তবে ভবিষ্যতে ছবির নাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাংলাকেই প্রধান্য দেয়া হবে।’
এমন কি নতুন বছরের শুরুতে মুক্তি পেতে যাওয়া প্রথম ছবির নামও ইংরেজিতে। ‘গেইম’ নামের এই ছবিটির নির্মাণ করেছেন রয়েল অনিক। এছাড়াও ২০১৫ সালে মুক্তি পেতে যাচ্ছে সাফি উদ্দিন সাফির ‘ওয়ার্নিং’, অনিমেষ আইচের ‘জিরো ডিগ্রি’, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘নো ল্যান্ডস ম্যান’, শামীম আহমেদ রনির ‘মেন্টাল’, আশিকুর রহমানের ‘গ্যাংস্টার রিটার্ন’, তন্ময় তানসেনের ‘রানআউট’, আলভী আহমেদের ‘ইউটার্ন’, সাইফ চন্দনের ‘টার্গেট’, ইস্পাহানি আরিফ জাহানের ‘গুণ্ডা-দ্য টেরোরিস্ট’, অপুর্ব রানার ‘ইনোসেন্ট লাভ’, অনন্ত জলিলের ‘দ্য স্পাই : অগ্রযাত্রার মহানায়ক’, ইফতেখার আহমেদ ফাহমীর ‘টু বি কন্টিউনিউড’, ইফতেখার চৌধুরীর ‘অ্যাকশন জেসমিন’, সাফি উদ্দিন সাফির ‘ব্ল্যাকমানি’, ‘বিগ ব্রাদার’, অনন্য মামুনের ‘ব্ল্যাকমেইল’, অশোক পাতির রোমিও ভার্সেস জুলিয়েট’ আশিকুর রহমানের ‘মিশন আমেরিকা’, মারুফ আহমেদ খানের ‘মিশন আফ্রিকা’, ইফতেখার চৌধুরীর ‘ওয়ান ওয়ে’, দিলশাদুল হক শিমুলের ‘লিডার’, সাইমন তারিকের ‘ক্রাইম রোড’ এমএ রহিমের ‘মার্ডার টু’ উল্লেখযোগ্য।
মন্তব্য চালু নেই