সমাবেশে কর্মী ভাড়া ঘণ্টায় ৮০ টাকা

দীর্ঘদিন পর রাজধানীতে সমাবেশ করেছে বিএনপি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। শর্ত সাপেক্ষে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিলেও তার মধ্যে থাকা সম্ভব হয়নি দলটির। বিকেল ৫টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করার কথা থাকলেও খালেদা জিয়া বক্তব্য শেষ করেন সোয়া ৫টার দিকে। এই শর্ত নিয়ে খালেদা জিয়া ব্যাপক সমালোচনা করেন।

এদিকে আজকের সমাবেশ সফল করতে সোমবার রাতে গুলশান অফিসে সিনিয়র নেতাদের বৈঠক হয়। বৈঠকে সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগমের জন্য প্রত্যেক নেতাকর্মীকে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে বলা হয়।

আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরুর আগে থেকেই রাজধানীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলকা থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে বিপুল সংখ্যক মানুষ সমাবেশস্থলে পৌঁছায়। ফকিরাপুল মোড় থেকে কাকরাইল মোড় পযন্ত সড়ক ছিল কার্যত বন্ধ। তবে বিএনপির সমাবেশে যারা এসেছিলেন তার সবাই যে দলের কর্মী বা সমর্থক তা ভাবলে হয়তো ভুল হবে।

সমাবেশ মঞ্চের পাশে থাকা এক যুবকের সঙ্গে কথা বলে তার সত্যতা পাওয়া গেল। রাজধানীর উপকণ্ঠ থেকে আসা এই কিশোরের নাম রবিন। লেখাপড়ায় প্রাথমিকের গণ্ডি পার হতে পারেননি তিনি। ১৭ বছরের এই কিশোর একজন রং মিস্ত্রীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। কাজের ফাঁকে তিনি বিএনপির সমাবেশে এসেছিলেন। তবে রাজনৈতিক স্বার্থে নয়, নির্দিষ্ট ভাড়ায় তিনি সমাবেশে এসেছেন।

রবিন জানান, তিনি একা নয়, এরকম আরো কিশোর সমাবেশে টাকার বিনিময়ে এসেছিলেন। রবিন বললেন, বিএনপি-আওয়ামী লীগ বুঝি না। ২০১৪ সাল থেকে আমরা টাকার বিনিময়ে রাজনৈতিক সমাবেশে যায়।

বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রবিনরা ছয়জন পেয়েছেন ১ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রথম দুই ঘণ্টায় তারা পেয়েছেন ৮০ টাকার কিছু বেশি করে। এরপর থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ টাকা করে পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

মারামারি কিংবা পুলিশের ঝামেলায় জড়িয়ে গেলে এর দায় কে নেবে- এমন প্রশ্নে রবিন কিছুটা চিন্তিত হয়ে বলেন, তা তো কখনো ভেবে দেখিনি! তারপর বললেন, গতবছর পুলিশ একবার দৌড়ানি দিয়েছিল। পালিয়েছিলাম, সমস্যা হয়নি। কিছু হলে এবারও পালাবো।

এখানে আসলে কাজের সমস্যা হবে কি না- জানতে চাইলে রবিন বলেন, কাজের অবস্থা ভালো যাচ্ছে না। মালিকের কাজ তেমন একটা থাকে না। ভাড়াতে কিছু টাকা আয় হলে ক্ষতি কী!

রবিনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দেখা যায় বাপ্পী, বাবলু, মোস্তফা, হাসান, সোহেল এবং জসিম নামে তার সঙ্গে রয়েছেন আরো কয়েকজন ভাড়াটে রাজনৈতিক কর্মী।

এ ধরনের ভাড়াটে কর্মীরা যেকোন দলের হয়েই রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে যোগ দিয়ে থাকেন।-বাংলামেইল



মন্তব্য চালু নেই