সমাবর্তনের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবে প্রস্তুত ঢাবি

সমাবর্তনের সুবর্ণ জয়ন্তীর উৎসবের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর থেকে প্রতিটি শিক্ষার্থীর মনে সমাবর্তন নিয়ে থাকে নানা জল্পনা-কল্পনা।পড়ালেখার জীবন শেষ করে এই সম্মাননা গ্রহণের জন্য সবাই মুখিয়ে থাকেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তনের ঘোঘণা আসার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের মাঝে উৎসবের উদ্দীপনা ছড়িয়ে পড়েছে।

এ উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সেজেছে অপূর্ব সাজে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ব্যানার, ফেস্টুন আর প্ল্যাকার্ডে লেখা স্বাগতম ৫০তম সমাবর্তন। প্রতিটি ভবনে আলোকসজ্জা এবং বিভিন্ন রঙে আল্পনা আঁকা হয়েছে। সব মিলিয়ে চারিদিকে উৎসব মুখর পরিবেশ।

শুক্রবার বিকেলে এই সমাবর্তনের মহড়াও শেষ হয়েছে।কালো গাউন আর মাথায় ক্যাপ পরে অসংখ্য শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতজনদের সাথে কালো গাউন ও হ্যাট মাথায় দিয়ে ছবি তুলতে হিড়িক পড়ে যায়। ক্যাম্পাসের প্রায় প্রতিটি স্থানেই দল বেঁধে চলে ছবি তোলা। অপরাজেয় বাংলা, টিএসসি, কার্জন হল, কলা ভবন, সিনেট ভবন, ভিসি চত্ত্বর- প্রায় সব জায়গাতেই কালো গাউন আর কালো হ্যাট পড়ুয়াদের ভীড়। ক্লিকে ক্লিকে আনন্দঘন মুহুর্তকে স্মৃতি হিসেবে রাখতে ব্যস্ত সবাই।কেউ তুলছেন সেলফি, কেউ বা নিয়ে এসেছেন ডিএসএলআর। শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৯২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ৪৯তম সমাবর্তন হয়েছিল ২০১৫ সালে। এবারের সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে থাকবেন কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিও-এর প্রেসিডেন্ট এবং ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক অমিত চাকমা। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাকে ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি দেওয়া হবে।

অমিত চাকমা বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত রাসায়নিক প্রকৌশলী। তার জন্ম ১৯৫৯ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা পরিবারে। তিনি কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিও-এর ১০ম প্রেসিডেন্ট। বাংলাদেশে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করার পর তিনি আলজেরীয় সরকারের বৃত্তি নিয়ে আলজেরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান।

সমাবর্তনে ৯৪টি স্বর্ণপদকের জন্য ৮০ জন পদকপ্রাপ্ত, ৬১ জন পিএইচডি, ৪৩ জন এমফিল এবং ১৭ হাজার ৮৭৫ জন গ্র্যাজুয়েট অংশগ্রহণ করবেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সমাবর্তন দিবস শিক্ষার্থীদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। এ দিবসটির জন্য শিক্ষার্থীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা একাডেমিক সার্টিফিকেট ও পদক গ্রহণ করে থাকেন। অথচ স্বাধীনতা পূর্ব ও উত্তরকালে দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান বন্ধ ছিল। বর্তমানে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের সংস্কৃতি চালু হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এ সংস্কৃতি ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। সমাবর্তন সুষ্ঠুভাবে পালনের জন্য ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুত সম্পন্ন করা হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই