সমকামী ছেলেকে চিঠিতে যা লিখেছিলেন শ্রীনিবাসন

আইসিসি সভাপতি এন শ্রীনিবাসনের ছেলে অশ্বিনের ফাঁস করে দেওয়া তথ্য নিয়ে তোলপাড় চলছে মিডিয়ায়। শ্রীনির ছেলে অশ্বিন দাবি করেছেন তার বাবা তাকে জোর করে এক মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিতে চাচ্ছে। কিন্তু সে তার সঙ্গী অভির সঙ্গেই থাকতে চায়। সংবাদমাধ্যমে এই তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি তাকে লেখা শ্রীনিবাসনের বেশ কিছু চিঠিও দেখিয়েছেন। সেই চিঠিতে কি লেখা ছিল সেগুলো আওয়ার নিউজ বিডি’র পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল :

এক.
২০০৭ সালের ২০ জুন শ্রীনিবাসন এক চিঠিতে তার ছেলেকে লিখেন, ‘অ্যাশ, তুমি আমার একমাত্র ছেলে। আমি ও তোমার মা তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি। তোমাকে নিয়ে আমাদের কি আশা সেটা সম্পর্কে তুমি ভালোভাবেই অবগত আছো। আমি মনে করি তোমার নিজেকে নিজে সাহায্য করার জন্য কিছু একটা করা উচিত। আমি অনেক কষ্ট করে তোমার জন্য টাকা জমিয়েছি। আমি চাই আমার ব্যবসা দেখার জন্য একজন উত্তরাধিকারী আসুক। কারণ, আমি একজন অচেনা ব্যক্তির কাছে সবকিছু দিতে পারি না। তাই আমি মনে করি একজন মেয়েকে বিয়ে করা তোমার জন্য সবচেয়ে ভালো কাজ হবে। সেটা আমাদের কাছেও গ্রহণযোগ্য হবে। আমরা তার মাধ্যমে একজন উত্তরসূরিও পাব। তোমাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে হবে। তুমি যতদিন না পরিবর্তন হচ্ছো ততোদিন রুপা (শ্রীনিবাসনের মেয়ে) ইন্ডিয়া সিমেন্টের বোর্ডে থাকবে। তুমিও বোর্ডে যোগ দিতে পারবে। তবে সেক্ষেত্রে আমি যে পরামর্শগুলো দিয়েছি সেগুলো মেনে আসতে হবে।’

দুই.
আর একটি চিঠিতে ২০০৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর শ্রীনিবাসন লিখেন, ‘দেখ তুমি কিভাবে বসবাস করছো! তুমি একজন শিক্ষিত ও যোগ্যতা সম্পন্ন ছেলে। কিন্তু তুমি স্বাভাবিক সমাজ জীবনের জন্য প্রস্তুত নও। তুমি যদি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার চেষ্টা কর তাহলে আমি তোমাকে পুরস্কৃত করব।’

তিন.
ছেলের প্রতি অখুশি শ্রীনিবাসন ২০০৮ সালের ২০ জানুয়ারি এক চিঠিতে লিখেন, ‘তোমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অস্পষ্ট ও অপ্রাসঙ্গিগ কথা সম্বলিত একটি চিঠি আমি পেয়েছি। আমি দেখছি তুমি এসব করছো আমাকে ভয় দেখানোর জন্য। তোমার উদ্দেশ্য আমার কাছে পরিস্কার। আমি দেখতে পাচ্ছি তুমি হতাশাগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছো। চিঠিতে তোমার ক্রিমিনাল বন্ধুর (অভি) চরিত্রই তুমি ফুটিয়ে তুলেছো। তোমার বন্ধু একজন ক্রিমিনাল। সে আইন ভঙ্গ করেছে। সে একজন নেশাগ্রস্থ ক্রিমিনাল। তার দ্বারা সন্ত্রাসী কাজকর্মই সম্ভব। কিন্তু তোমার মা খুবই কোমল হৃদয়ের একজন মানুষ। তাই আমি এখনো স্থির রয়েছি। তুমি যা ইচ্ছা তাই বলতে পার না। তোমার বন্ধু তোমাকে যা বলে তুমি তাই কর। তোমার বন্ধু তোমার জীবনে আসার পর থেকে আমি অনেক মূল্য দিয়েছি। এখনোও দিচ্ছি। আমার কষ্টের টাকা খরচ করে তোমরা অনেক বেলেল্লাপনা করেছো। সে তোমাকে পদ্ধতিগতভাবে ধ্বংস করছে। তোমার মান-সম্মান, আত্মমর্যাদা সব ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছে। আর তার উপরই তুমি সম্পূর্ণরুপে নির্ভর করছো। সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য সে তোমাকে নানাভাবে ব্যবহার করছে। তাই আমি যখন বলি যে আমার সম্পদ ও টাকা কেবল আমার উত্তরসূরি পাবে তখন যে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তোমাকে ব্যবহার করে, তোমার মাধ্যমে আমাকে হুমকি দিয়ে সে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।’

চার.
২০০৮ সালের ৭ আগস্ট লেখা চিঠিতে তিনি লিখেন, ‘যদিও তোমার বন্ধু ও তোমাদের সম্পর্কের বিষয়ে আমাদের ধারণা এখনো বদলায়নি। তবে আমি বুঝিনা কেন তুমি সপ্তাহান্তে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে চেন্নাইতে মিলিত হও না। কেন তুমি সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলোতে চেন্নাইতে থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য দেখাশুনা কর না।’



মন্তব্য চালু নেই