সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ হলেও মাঠে থাকবে আ.লীগ
দুই দলের মুখোমুখি অবস্থানে অবশেষে রাজধানীতে সব ধরনের সভা সমাবেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। তবে তারপরও মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে বিএনপি যাতে কোনো সহিংসতা না করতে পারে এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে থাকবে তারা।
জানা গেছে, আগামী ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্য়ায়ের নেতাকর্মীরা মহানগরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় কঠোর অবস্থানে থাকবে। বিএনপির যে কোনো কর্মসূচি মোকাবেলায় ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে তারা।
রোববার দুপুরে রাজধানীল ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক জরুরি বৈঠক শেষে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল-আলম হানিফ বলেছেন, ‘৫ জানুয়ারি সকাল থেকে দলের নেতাকর্মীরা ১৬টি স্পটে অবস্থান নেয়ার কথা ছিল। একই সঙ্গে ওইদিন বিকেলের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার কথা ছিল। এই কর্মসূচির বিষয়ে আমাদের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি রয়েছে। ২০০টি পয়েন্টে আমাদের নেতাকর্মীরা থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ডিএমপির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবো। এখনো আমরা আশাবাদী আমাদের পুর্বনির্ধারিত কর্মসূচি পালন করতে দেবে। আর সমাবেশ করতে না দিলে আমাদের নেতাকর্মীরা পাড়া-মহল্লায় সতর্ক অবস্থায় থাকবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। বিএনপি চেয়েছিল ডিএমপি যেন কাউকেই সমাবেশ করতে না দেয়। ৫ জানুয়ারির কর্মসূচি গত এক মাস আগে ঘোষণা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।’
রোববার হঠাৎ করেই ডিএমপি রাজধানীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করলে জরুরি বৈঠক ডাকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অনেকটা মিডিয়াকে ফাঁকি দিয়েই বৈঠক করতে চেয়েছিল তারা। তবে শেষ পর্যন্ত মিডিয়া জেনে ফেলে। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কাবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহউদ্দিন নাসিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ।
৫ জানুয়ারির কর্মসূচির সম্পর্কে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ডিএমপি রাজধানীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। তাই প্রশাসনের এ নির্দেশনা কোনোভাবে আওয়ামী লীগ লঙ্ঘন করবে না। তবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় সতর্ক অবস্থানে থাকবে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে কামরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আর বিএনপি এক নয়। বিএনপি কর্মসূচি দিয়ে নেতারা মাঠে থাকে না। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা অবশ্যই মাঠে থাকবে। কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠে থেকে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করবেন।’
এদিকে রাজধানীতে সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও নগরীর বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের অঙ্গ, সহযোগী, ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো নেতাকর্মীরা মাঠে সর্তক অবস্থানে থাকবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালন উপলক্ষ্যে রাজধানীর ১৬টি স্পটে থাকার ঘোষণা দিয়েছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এছাড়াও সারাদেশের বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় বিজয় র্যালি ও সমাবেশেরও ঘোষণা দিয়েছিল দলটি। অন্যদিকে ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস ঘোষণা করেছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।
একই সঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্য়ালয় রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশে করা কথাও ছিল দলটির। এরই অংশ হিসেবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও সংসদের বাইরের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘোষণা দেয়ায় ৪ জানুয়ারি বিকেল ৫টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ঢাকা মেট্রোপলিট্রন পুলিশ (ডিএমপি)।
মন্তব্য চালু নেই