সন্তানের যে বদভ্যাসগুলো তৈরি করেন আপনি নিজেই

আপনি আপনার সন্তানের প্রথম শিক্ষক। কিন্তু সবসময়ই সন্তানকে ভাল জিনিস শেখান তো? নাকি কখনো কখনো শেখান এমন কিছু যা আপনার শেখানোর কথা নয়? আমাদের অগোচরেই আমরা অনেক সময় সন্তানদের মাঝে গড়ে তুমি বদভ্যাস। আসুন জেনে নিই সেগুলো-

অসততা
আপনি হয়ত খেয়ালই করেন না যে আপনি নিজেই আপনার সন্তানকে করে তুলছেন অসৎ। আপনি হয়ত তাকে বলছেন “আজকের মত এই শেষ। আর চকোলেট নয়”। কিন্তু তখন সে রেগে গেলে বা কান্না জুড়ে দিলে আপনিই হয়ত তার হাতে তুলে দিচ্ছেন চকোলেটটি। এভাবে সে শিখছে, অভিনয় করলে ঠিকই সে তার পছন্দের জিনিসটি পাবে।

না দেওয়া শাস্তি
আমরা অনেক বাবা মায়েরাই সন্তানদের বলি, “আজ থেকে তোমার আইসক্রিম খাওয়া বন্ধ”, ‘তুমি আমার কথা না শুনলে তোমাকে আর কার্টুন দেখতে দেব না”, “পরীক্ষায় এত নাম্বার না পেলে তোমার খেলতে যাওয়া বন্ধ”। এসব ফাকা হুমকী শিশুরা একসময় বুঝতে পারে। তাই তাদের যা ইচ্ছা তাই করে যায়। কারণ সে তো জানে আপনি তাকে কিছুই বলবেন না।

অজুহাত
শিশুর সামনেই আপনি যখন তার ভুলের পক্ষে অজুহাত দাঁড় করান তখন আপনি আসলে তাকে আরও প্রশ্রয় দেন। আমরা প্রায়ই বলি এবং অন্য বাবা-মায়েদের বলতে শুনি “ও তো ছোট মানুষ” বা “ও আসলে ক্লান্ত” অথবা “ও একটু কমই পারে”। এধরণের কথা শিশুকে আরও প্রশ্রয় দেয়। সে বুঝে যায়, সে যাই করুক না কেন তাকে আসলে মাফ করে দেওয়া হবে।

চিৎকার করা
আপনি চিৎকার করে কথা বললেই যে আপনার সন্তান কথা শুনবে তা কিন্তু নয়। যদি সে শোনেও ধীরে ধীরে আসলে সে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। আর একসময় কথা তো শুনবেই না বরং আপনার সাথে তার সম্পর্ক নষ্ট হবে। অনেক ক্ষেত্রে শিশুরা শ্রদ্ধাও হারিয়ে ফেলে। দেখা যায় আপনি চিৎকার করছেন আর সে তার কাজ করে যাচ্ছে।

মারধোর করা
এটি আরেকটি ভুল যা আমরা অভিভাবকেরা হরহামেশাই করি। আমরা মনে করি, মারলেই বুঝি আমাদের সন্তান কথা শুনবে। আসলে কখনোই তা হয় না। এতে আপনার সন্তান আরও অসৎ হয়। সে যা করার তা ঠিকই করে। পার্থক্য শুধু প্রকাশ্যে না করে গোপনে করে।

অসমতা
আমরা অনেক অভিভাবকই ছোট বেলা থেকেই শিশুকে বিপরীত লিঙ্গের শিশুর সাথে মিশতে দিই না। আমরা সারাক্ষণ বলতে থাকি ‘ছেলেরা এমন করে না’, ‘মেয়েদের এটা করতে নেই’। অনেক সময় জোরপূর্বক আমরা একসাথে খেলাধূলা করা, আড্ডা দেওয়া বন্ধ করে দিই। স্কুলে ভর্তির সময় আমরা আলাদা গার্লস, বয়েজ স্কুল খুজি। এতে করে আমাদের শিশুরা ছোটবেলা থেকে জেন্ডার বৈষম্যের শিকার হয় এবং বৈষম্য করতে শেখে।

অশ্রদ্ধা
স্বামী-স্ত্রী ঝগড়া করার সময় এমন প্রায়ই হয় যে খেয়ালই করা হয় শিশু সন্তানটি সামনেই বসে আছে। আমরা এমনকি আমাদের বাবা-মা বা বড়দের সাথেও অবলিলায় বেয়াদবি করে বসি শিশুর সামনেই। শিশু যখন আপনাদের মাঝেই শ্রদ্ধা দেখে না তখন সে আর কি শ্রদ্ধা করা শিখবে? সেও এক সময় বেয়াদপি করতে শুরু করে।



মন্তব্য চালু নেই