সন্তানকে হত্যার পর বিষপান করলেন মা

ঢাকার বনশ্রীতে দুই সন্তানকে শ্বাসরোধে এবং কিশোরগঞ্জে দেড় বছরের সন্তানকে গলা কেটে হত্যার এবার মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ছয় বছরের সন্তানকে বিষপানে হত্যা করেছেন তার মা। অবশ্য ঘটনার পর মা পারভীন বেগমও (২৫) আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বর্তমানে তিনি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার মনতৈল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে শনিবার জুড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন পারভীনের স্বামী জাকির হোসেন।

এলাকাবাসী জানান, প্রায় পাঁচ বছর কাতারে থাকার পর মাস দেড়েক আগে বাড়ি এসেছেন জাকির হোসেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনি গ্রামের একটি দোকানে বসে ক্রিকেট খেলা দেখছিলেন। এ সময় খবর পান তার মেয়ে সাদিয়া বমি করছে। দ্রুত মেয়েকে নিয়ে তিনি সিলেটে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে স্ত্রী পারভীনও ছিলেন। পথে তার স্ত্রীও বমি করতে শুরু করেন। এতে জাকির হোসেনের সন্দেহ হয়। পরে তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাত ৩টার দিকে মেয়ে সাদিয়া মারা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী জানান, পারভীনের সঙ্গে জাকির বা পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের বিবাদ ছিল না। কী কারণে ঘটনাটি ঘটলো তারা কিছুই বুঝতে পারছেন না।

এ ব্যাপারে জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হামিদুর রহমান সিদ্দিকী জানান, মামলায় জাকির হোসেন মেয়ে সাদিয়াকে বিষপানে হত্যা করে স্ত্রী পারভীনও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন উল্লেখ করেছেন। বর্তমানে পুলিশি পাহারায় পারভীনের চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হয়ে উঠলে এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এর আগে, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার প্যারাভাঙা গ্রামে দেড় বছরের সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করেছেন তার মা। এ ঘটনায় শিশুটির মা সালমা আক্তারকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা বটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এছাড়া গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বনশ্রীর ৪ নম্বর রোডের ৯ নম্বর বাসায় দুই ভাই-বোন সিদ্ধেশ্বরীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান অরণি (১৪) ও হলি ক্রিসেন্ট স্কুলের নার্সারির শিক্ষার্থী আলভি আমানের (৬) মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে জানানো হয় তারা রেস্টুরেন্ট থেকে আনা খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যায়। কিন্তু র‌্যাব পরবর্তীতে মা মাহফুজা মালেককে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নিজেই হত্যা করার কথা স্বীকার করেছেন বলে র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে। শনিবার পুলিশও একই কথা বলেছে।



মন্তব্য চালু নেই