সংসদে জাপার পাল্টাপাল্টি বৈঠক

জাতীয় সংসদের ভেতরেই বিরোধী দল জাতীয় পার্টির দুই গ্রুপের আলাদা বৈঠক হয়েছে। বিরোধী দলীয় নেতার কার্যালয়ে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আরেক কক্ষে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতেত্বে আরেকটি বৈঠক হয়।

এ ব্যাপারে এরশাদ বলেন, ‘সংসদীয় দলের বৈঠক হওয়ার আগে পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে আমার অনুমতি থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু আমাদের আগে থেকে সংসদীয় দলের বৈঠকের বিষয়ে জানানো হয়নি, তাই আমি সেখান যাইনি।’

এদিকে রওশন এরশাদের গ্রুপের বৈঠক শেষে জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্ন বলেন, ‘জাতীয় পার্টিতে কোনো গ্রুপ নেই, কোনো বিরোধীও নেই। পার্টির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে পার্টি চলছে।’

দশগজ দূরেই পাশাপাশি বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা আমদের জানা নেই। সংসদীয় দলের পক্ষ থেকে পার্টির চেয়ারম্যানকে আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু উনি কী কারণে বৈঠকে উপস্থিত হননি তা আমার জানা নেই। তাছাড়া সংসদে আরো একটি বৈঠক হয়েছে কি না আমার জানা নেই।’

চুন্ন আরো বলেন, ‘আমাদের সংসদী দলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পার্টির পরবর্তী বৈঠকে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা যারা মন্ত্রী হিসেবে আছি থাকবো।’

বিরোধীদলীয় উপনেতা ইস্যুতে তিনি বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এ বিষেয়ে আগেই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। এরপর আর কিছু বলার থাকে না। তিনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটাই চূড়ান্ত আছে।’

এর আগে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ কাজী ফিরোজ রশিদকে উপনেতা করার জন্য স্পিকারকে চিঠি দেন। এর একদিন পরেই পার্টির চেয়ারম্যান উপনেতা স্থগিত করার জন্য স্পিকারকে চিঠি দেন। এরপর থেকে বিরোধীদলীয় উপনেতা ইস্যু স্থগিত রয়েছে।

সদ্য জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর পদ হরানো দুই নেতার বিষয়ে চুন্নু বলেন, ‘জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের সিদ্ধান্ত হয়েছে আমাদের যে দু’জন সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীর পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার করার জন্য চেয়ারম্যানের কাছে সুপারিশ করা হবে। সংসদীয় দলের সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে তারা যদি কোনো ভুলভ্রান্তি করে থাকেন তাহলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে তাদের পদ ফিরে দেয়ার জন্য চেয়ারম্যানকে আহ্বান করা হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সংসদে সংবিধান ষোড়শ সংশোধন বিলের রিপোর্ট উত্থাপন হবে। এর পর বিরোধী দল জাতীয় পার্টি বিলটি যাচাই-বাছাই করে তাদের সিদ্ধান্ত জানবে। আসলে বিলটিতে কী আছে তা এখনও দেখা হয়নি।’

বিরোধী দলীয় নেতার নেতৃত্বে যারা সংসদীয় দলের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্ন, বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, ইয়াহিয়া চৌধুরী, বিরোধী দলীয় নেতার রাজনৈতিক উপদেষ্টা গোলাম মসীহসহ প্রায় ২০ জন সদস্য।

অন্যদিকে চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- পার্টির বর্তমান মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাসহ প্রায় ১৫ জন সদস্য।



মন্তব্য চালু নেই