ইমরান তাহির ও জেপি ডুমিনির বোলিং তোপে পড়ে কোয়ার্টার ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৩৩ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলংকা। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে একপ্রান্ত আগলে রেখে কুমার সাঙ্গাকারা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। তবে ব্যাটসম্যানদের সাজঘরে ফেরার মিছিল দেখে তারও ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটে। ফলে ১৩৩ রানে গুটিয়ে পরাজয়ের প্রহর গুনছে লংকান শিবির।
শ্রীলংকার হয়ে একপ্রান্ত আগলে রেখে সাঙ্গাকারা ৯৬ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলেন। এছাড়া থিরিমান্নে ৪১ ও ম্যাথিউস করেন ১৯ রান। আর কোনো লংকান ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি। দিলশান ও থিসারা পেরারা রানের খাতা খোলার আগের সাজঘরে ফেরেন। আর কুশল পেরেরা ৩ ও অভিজ্ঞ মাহেলা জয়াবর্ধনে ৪ রান করে আউট হয়ে দলকে খাদের কিনারায় ফেলেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ইমরান তাহির ২৬ রানে ৪টি উইকেট লাভ করেন। হ্যাটট্রিক করা জেপি ডুমিনি ২৯ রানে নেন ৩টি উইকেট। একটি করে উইকেট নেন ডেল স্টেইন, কাইল অ্যাবট ও মরনে মরকেল।
৪ রানে দুই ওপেনারের বিদায় দিয়ে লংকানদের বিপর্যয়ের শুরু। এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে লাহিরু থিরিমান্নে ও কুমার সাঙ্গাকারা মিলে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। তবে ইমরান তাহিরের জোড়া আঘাতে ফের ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বিশ্বকাপের গত দুই আসরের ফাইনালিস্টরা।
বুধবার ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলংকা। কাইল অ্যাবটের করা দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ৩ রানের সময় উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি কককে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন কুশল পেরেরা (৩)। এরপর পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে অপর ওপেনারকে ফেরান ডেল স্টেইন। ইনফর্ম ব্যাটসম্যান তিলকারত্নে দিলশান রানের খাতা খোলার আগেই ডু প্লেসিসকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন।
এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে থিরিমান্নেকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন সাঙ্গাকারা। তবে প্রোটিয়া বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের কারণে রান তুলতে খুব হিমশিম খেতে হচ্ছে সাঙ্গাকারাদের। সাঙ্গাকারা ব্যাট হাতে অনেক ধীর হলে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলছিলেন থিরিমান্নে। তবে দলীয় ৬৯ রানের সময় ইমরান তাহিরকে রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে ৪৮ বলে ৪১ রান করে সাজঘরে ফিরেন তিনি।
এরপর ক্রিজে আসেন মাহেলা জয়াবর্ধনে। অপর প্রান্তে ছিলেন সাঙ্গাকারা। নিজের শেষ বিশ্বকাপকে রাঙানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন জয়াবর্ধনে। তবে ইমরান তাহিরের বলে ডু প্লেসিসকে ক্যাচ দিয়ে মাহেলা (৪) বিদায় নিলে আরও চাপে পড়ে যায় লংকান শিবির। পঞ্চম উইকেটে দলনায়ম ম্যাথিউসকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন সাঙ্গাকারা। তবে ডুমিনি ও ইমরান তাহিরের জোড়া আঘাতে ১ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফের কোনঠাসা হয়ে পড়ে লংকানরা।
ইমরান তাহির আর জেপি ডুমিনি তোপের মুখে পড়ে ১৯ রানে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রানে গুটিয়ে যায় লংকান শিবির। শেষদিকে পেসার মরনে মরকেল পথের কাঁটা হয়ে থাকা সাঙ্গাকারা আউট করে শ্রীলংকার সব প্রতিরোধ ভেঙে দেন।
এদিন হ্যাটট্রিক করে আলোয় আসেন প্রোটিয়া স্পিনার জেপি ডুমিনি। ম্যাথিউস, থারিন্ডু কৌশল ও কুলাসেকারাকে আউট করে ডুমিনি এই কৃতিত্ব গড়েন। চলতি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে তিনি হ্যাটট্রিক করার গৌরব অর্জন করেন। এর আগে বিশ্বকাপের প্রথম দিন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংলিশ পেসার স্টিভেন ফিন ইনিংসের শেষ ওভারে হ্যাটট্রিক করেন।
বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে এখনও পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। অপরদিকে নকআউটে লংকানদের পরিসংখ্যান বরাবরই ভালো। বিশ্বকাপের গত দুই আসরের ফাইনাল খেলেছে দ্বীপরাষ্ট্রের দেশটি। তবে এদিন ব্যাটিংয়ে নেমে ‘চোকার্স’ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই কী-না ‘চোক’ করে বসল শ্রীলংকা!
মন্তব্য চালু নেই