শ্বশুর বাড়ীতে জামাইর আত্মহত্যা নিয়ে নানা গুঞ্জন রাউজান
চট্টগ্রামের রাউজানে স্ত্রীর সাথে অভিমান করে শ্বশুর বাড়ীতে আত্মহুতি দেওয়া নুরুদ্দিন (২৩) লাশ রহস্যজনক কারণে ময়না তদন্ত ছাড়ায় দাফন করা হয়েছে। লাশ তড়িগড়ি ও ময়না না করে দাফন করায় এলাকায় নানা গুঞ্জন চলছে। এলাকার সচেতন মহল এ ঘটনা রহস্যজনক মনে করছে। তারা অবিলম্বে এ ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটনের জোর দাবী জানিয়েছে। এদিকে বিষপানে আত্মহত্যা বলে নুরুদ্দিনের শাশুর বাড়ীর পক্ষ প্রচারণা চালালেও তার সালেহা বেগম সাংবাদিকদের কাছে দাবী করেন, তার ছেলেকে মেরে ফেলেছে তারা।
শুক্রবার দিনব্যাপী উপজেলার নোয়াপাড়া ছামিদর কোয়াং গ্রামে এ নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনা শুনাগেছে। অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, নুরুদ্দিন কম বয়সি ছেলে। এখনো অনেক কিছু বুঝেনা। তার স্ত্রী বিয়ের পরও অন্য পুরুষের সঙ্গে সর্ম্পক রেখেছে। এ নিয়ে নুরুদ্দিন প্রায় সময় স্ত্রী শাশন করেছে। বয়সে কম হওয়ায় স্ত্রী সোনিয়া নুরুদ্দিনকে তেমন পাত্তা দিত না।
এদিকে গত বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে নুরুদ্দিনের লাশ গ্রামের বাড়ীতে পৌছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। তখন শুশর বাড়ীর লোকজন তাড়াহুড়া করে লাশ দাফন করে। নুরদ্দিনের পরিবার দরিদ্র ও প্রভাবশালী কোন কেউ না থাকায় তার দাফন হয়েছে তাদের বাড়ীর পিছনের খালের পাড়ে। জোয়ারের পানি বাড়লে তার কবরটি পানিতে তলিয়ে যাবে।
এদিকে এ ঘটনার আসল রহস্য যাতে বেরিয়ে না পড়ে তার জন্য নুরদ্দিনের স্ত্রীর ভাইয়েরা নানা তদবির চালাচ্ছে। উল্লেখ্য গত বুধবার রাতে শাশুর বাড়ী উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কচুখাইন (ধোয়াপাড়া) গ্রামের হাজী খয়রাত মিয়া সওদাগরের বাড়ীতে বিষপানে আত্মহত্যা করে নুরুদ্দিন। সে রাউজান নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ছামিদর কোয়াং গ্রামের আজিম ফকিরের বাড়ীর মৃত আজিম উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল কালাম বলেন, এ ঘটনা নিয়ে নাান কথা শুনা যাচ্ছে তবে আসল ঘটনা কি তা আমি সঠিক বলতে পারছিনা। আপনারাও তদন্ত করে আসল ঘটনা বের করে লেখেন। লাশ ময়না তদন্ত ছাড়া দাফন করা প্রসঙ্গে নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁিড়র ইনচার্জ টুটন মজুমদার বলেন, তারা উভয় পক্ষের স্বাক্ষর এবং বিশেষ অনুমতি নিয়ে লাশ বিনা ময়না তদন্তে দাফন হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, পারিবারিক সিদ্ধান্তে অল্প বয়সে নুরুদ্দিন গত দেড় বছর আগে পূর্ব কচুখাইন (ধোয়াপাড়া) হাজী খয়রাত মিয়ার বাড়ীর নাজিম সওদাগরের মেয়ে সোনিয়া আকতার (২২) কে বিয়ে করে। বিয়ের পর জানতে পারে স্ত্রী সোনিয়া বিয়ের আগে আরেক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ছিল। অনেকবার নুরুদ্দিন স্ত্রীকে আগের মানুষকে ভুলে যেতে বলেছিল কিন্তু তার পরও সোনিয়া ্ওই ছেলের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করতো। তার আগের প্রেমিকের বাড়ী কচুখাইন বাধের ঘোড়া বলে একটি সূত্র বলেছে। সে এখন প্রবাসে চলে গেছে বলেও শুনা যাচ্ছে। আত্মহননকারী নুরুদ্দিনের খালা ফাতেমা বেগম ও বোন মোরশেদা বেগম বলেন, ভাইয়ের স্ত্রীর অপকর্মের কারণেই অপমানে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল নুরুদ্দিন।
মা সালেহা বেগম বলেন, স্ত্রীর অপকর্মের প্রতিবাদ করায় শাশুর বাড়ীর লোকরা ষঢ়যন্ত্র করে আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে । জানাগেছে, গত মঙ্গলবার নুরদ্দিনের স্ত্রীর বড় ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানের রাতে সোনিয়ার সঙ্গে ঝগড়া হয় নুরদ্দিনের।
একটি অসমর্থিত সূত্র দাবী করেন, নুরুদ্দিনের স্ত্রী সোনিয়ার আগের প্রেমিকের সঙ্গে একটি গোপন ভিড্ওি রয়েছে। যেটি প্রকাশ হলে নুরুদ্দিন দেখে হাতাশ হয়ে পড়েন। এছাড়াও আগের প্রেমিকের সঙ্গে তোলা সোনিয়ার অনেক ছবিও এলাকার যুবকরা নুরুদ্দিনের কাছে প্রকাশ করে। এতে স্ত্রীর প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে নুরদ্দিন আত্মহত্যার পথ বেচে নেয় বলে জানান তার বন্ধু বান্ধবরা।
এদিকে স্ত্রী সোনিয়া বলেন, রাত ১২টার দিকে হঠাৎ নুরুদ্দিন ছেলে আর আমাকে দেখার কথা বলে ফোন করে আমাকে ঘর থেকে বের হতে বলে। এসময় আমি ঘর থেকে বের হয়ে তাকে পড়ে থাকতে দেখি। স্ত্রী সোনিয়া তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন কেন সে আত্মহত্যা করল তা আমি জানিনা বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
মন্তব্য চালু নেই