শেষ পর্যন্ত হেরেই গেল বাংলাদেশ

বিশ্বকাপের আগে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। সিডনির ব্ল্যাক টাউন অলিম্পিক পার্ক ওভালে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ৩ উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ।

প্রথমে ব্যাট করে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ৪৮.১ ওভারে ৭ উইকেট খুইয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা ভালো ছিল না। ১৬ রান তুলতেই ২ উইকেট হারায় টাইগাররা। প্রথম ওভারের শেষ বলে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার এনামুল হক বিজয়। সোহেল খানের বলে শোয়েব মাকসুদের হাতে ক্যাচ তুলে দেন বিজয়। সপ্তম ‍ওভারের প্রথম বলে মুমিনুল হক মোহাম্মদ ইরফানের শিকার হন। ১৩ বলে ৭ রান করেন মুমিনুল হক।

তৃতীয় উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তামিম ইকবাল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ১৬৮ রান যোগ করেন এই দুই ব্যাটসম্যান। এ সময় দুই ব্যাটসম্যানই হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান। তাদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে নিয়ে বড় সংগ্রহের পথে এগোতে থাকে বাংলাদেশ।

কিন্তু দলীয় ১৮৪ রানে মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর আবারো বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সেঞ্চুরির পথে এগোতে থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৮৩) রান আউটের শিকার হন। ১০৯ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ইনিংসটি সাজান রিয়াদ।

স্কোরবোর্ডে ছয় রান যোগ হতেই আরো দুটি উইকেট হারায় টাইগাররা। ইয়াসির শাহের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন ৮১ রান করা তামিম। ১০৯ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ইনিংসটি সাজান তামিম। পরের বলেই বোল্ড হন মুশফিকুর রহিম। শূন্য রানে বিদায় নিতে হয় বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ককে।

ষষ্ঠ উইকেটে রানের চাকা সচল রাখেন সাকিব আল হাসান ও সৌম্য সরকার। ৩৮ বলে ৪১ রানের জুটি গড়েন এই দুই অলরাউন্ডার। ৪৭তম ওভারের শেষ বলে ১৭ বলে ১৫ রান করা সৌম্য পাকিস্তানের ওয়াহাব রিয়াজের শিকার হন। পরের ওভারে সাজঘরে ফেরেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। হারিস সোহেলের বলে লং অনে আহমেদ শেহজাদের তালুবন্দি হন সাকিব। ৩০ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ৩১ রান করেন সাকিব।

শেষ দিকে সাব্বির রহমান রুম্মান (৬), মাশরাফি (২) ও আরাফাত সানী (০) বিদায় নিলে এক বল আগে অলআউট হয় বাংলাদেশ। সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রানের লড়াকু পুঁজি পায় মাশরাফির দল।

পাকিস্তানের হয়ে হারিস সোহেল, মোহাম্মদ ইরফান ও ইয়াসির শাহ দুটি করে উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট নেন সোহেল খান ও ওয়াহাব রিয়াজ।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশি পেসারদের তোপে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। ৮ রান তুলতেই দুই ওপেনারকে হারায় পাকিস্তান।

দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে পেসার রুবেল হোসেনের বলে এনামুক হক বিজয়ের হাতে ক্যাচ দেন সরফরাজ আহমেদ। এরপর পঞ্চম ওভারে পাক শিবিরে আঘাত করেন দলপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা। আহমেদ শেহজাদ ৫ রান করে বিজয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দেন।

তৃতীয় উইকেটে ইউনিস খান ও হারিস সোহেল প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেন। ৪৪ রান যোগ করেন এই দুই ব্যাটসম্যান। দলীয় ৫২ রানে এই জুটি ভাঙেন পেসার তাসকিন আহমেদ।

অভিজ্ঞ ইউনিস খান ২৫ রান করে তাসকিনের বলে সাকিবের হাতে তালুবন্দি হন। ৪১ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২৫ রান করেন পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক।

ইউনিসের পর বিদায় নেন হারিস সোহেল। মাহমুদউল্লাহর বলে তাসকিনের তালুবন্দি হওয়ার আগে ৩৯ রান করেন হারিস। ৫৫ বলে ১টি করে চার ও ছক্কার সাহায্যে ইনিংসটি সাজান তিনি।

৩৬.৪ ওভারের সময় ব্যক্তিগত দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পান মাশরাফি। এবার তিনি সাজঘরে ফেরান উমর আকমলকে। বিদায়ের আগে ৪১ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কার মারে ৩৯ রান করেন আকমল।

দলীয় ১৯৯ রানের মাথায় পাকিস্তানের অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হককে (১০) প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তাসকিন। এরপর ২০ বলে ২৪ রান করা শহীদ আফ্রিদিকে আউট করেন সাকিব আল হাসান। শেষ পর্যন্ত শোয়েব মাকসুদ দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। তিনি অপরাজিত থাকেন ৯৩ রানে।

উল্লেখ্য, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে ১১তম বিশ্বকাপের আসর বসবে। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১৮ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এটি বাংলাদেশের পঞ্চম বিশ্বকাপ।

১৯৯৯ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপে অংশ নেয় বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো অংশ নিয়ে ওই আসরেই বিশ্বকে চমকে দেয় বাংলাদেশ। সে বছরের ৩১ মে অনুষ্ঠিত ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাউন্টি গ্রাউন্ড নর্দাম্পটনে পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী পরাশক্তিকে ৬২ রানে হারিয়ে অঘটন ঘটায় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।



মন্তব্য চালু নেই