সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল
শেখ হাসিনা ও তার দল খুনি
প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে খুনির দল আখ্যা দেয়ার জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পাল্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগকে খুনি বলে আখ্যায়িত করলেন।
রোববার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অতিসম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার কিছু বক্তব্য আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, জিয়াউর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জড়িয়ে কিছু বানোয়াট অসত্য ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে তিনি এসব বক্তব্য দিয়ে আসছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে আসছেন। গতকাল প্রধানমন্ত্রী আন্দোলন সম্পর্কে কিছু বক্তব্য দিয়েছেন। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা একটি জঘন্য ঘটনা। আমরা সরকারে থাকাকালে এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছি। প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। বিদেশ থেকেও বেশ কয়েকটি সংস্থা আনা হয়েছে ঘটনার তদন্তের জন্য। তখন হাসিনা কোনো সহযোগিতা করেনি।’
ফখরুল বলেন, ‘এখনো আমরা খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এ হামলায় প্রকৃত সত্য উৎঘাটন করা হোক। কিন্তু এটাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এটা খুব হীন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে যেসব উক্তি করা হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা এটা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার এ ধরনের বক্তব্য থেকে বের হয়ে আসা উচিৎ।’
শেখ হাসিনা এ ধরনের বক্তব্য দিতে খুবই অভ্যস্ত বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘খালেদা ও তারেক রহমানকে এসব ঘটনায় জড়াতে পারলেই হয়তো তাদেরকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যাবে। এমনটাই ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন পূর্ব আন্দোলনে বিএনপির পাঁচশতাধিক নেতাকর্মীকে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দেশের বেশ কিছু স্থান মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছিল।’
ফখরুল বলেন, ‘সংবাদপত্রের ওপর চড়াও হওয়ার কারণ তারা ৫ জানুয়ারির ভোটার বিহীন নির্বাচনের খবর জনগণের কাছে তুলে ধরেছে। এজন্যই তাদের ওপর এমন আক্রমণ।’
আ.লীগকে খুনি আখ্যা দিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘খুনি আ.লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা নিজে এবং তার দল খুনির দল। শতশত নিরীহ ব্যক্তির রক্তে তার হাত রঞ্জিত হয়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য প্রশাসনকে দলীয়করণ, বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ। তারা এখন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গায়ের জোরে বন্দুক দিয় ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় তারা। তারা অপহরণ গুম খুন মামলা হামলা দিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করতে চায়।’
ফখরুল বলেন, ‘সম্প্রচার নীতিমালা বাতিল করুন। বিচারপতিদের অভিশংসন বিল পাশ করবেন না। এটা হলে দেশে গণতন্ত্র থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা আট হাজার মামলা প্রত্যাহার করেছেন। অবিলম্বে এগুলো প্রত্যাহর করুন।’
২১ আগস্টের মামলার বিষয়ে প্রশাসনকে প্রভাবিত না করতে আহ্বান জানান ফখরুল।
এ মামলার আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম বিচারটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কারণে বিচারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। আমরা আশা করি দেশে যাতে সুষ্ঠু বিচার হয়।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিকভাবে নেয়া হচ্ছে। এ মামলায় মুফতি হান্নানের ১৬৪ ধারায় কথিত স্টেটমেন্ট নেয়া ছাড়া অন্য কোনো সাক্ষি নেই। তাই আমরা আশা করবো, আপনারা এমন কোনো কিছু করবেন না। যাতে দেশের মানুষের বিচার বিভাগকে ব্যাহত করেন। এ মামলায় তারেক রহমানকে উদ্দেশ প্রণোদিতভাবে জড়ানোর চেষ্টা চলছে ‘
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার রফিকুল ইসলাম, স্থায়ী কমিটটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব বরকত উল্যাহ বুলু, অ্যাডভোকেট ছানাউল্যাহ মিয়া, মাসুদ তালুকদার প্রমুখ।
মন্তব্য চালু নেই