শুটিং ইউনিটে কী খান তারকারা?
এখন চলছে রমজান মাস। রোজা রেখেই ঢালিউডের তারকারা শুটিং করছেন এ সময়। ইফতারে থাকে নানা পদ। তবে যখন রোজার মাস চলে যায়, তখন কী খান তারকরা? পুরো দিনে ছয়বার খাবার দেওয়া হয় শুটিং ইউনিটে। চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্টরা জানেন, বিশেষভাবেই খাবার তৈরি হয় শুটিং ইউনিটগুলোর জন্য। আর যাঁরা খাবার সরবরাহ করেন, তাঁদের বলা হয় ‘খাওয়াওলা’। এই ‘খাওয়াওলা’রা বিএফডিসিতে তো খাবার দেনই, পাশাপাশি ঢাকাসহ সাভার, গাজীপুর, কালিয়াকৈর যেখানেই শুটিং হয়, সেখানেই পৌঁছে যায় তাদের রান্না করা খাবার। এমনকি বান্দরবান, কক্সবাজার বা সিলেট গেলেও শুটিং ইউনিটগুলো সঙ্গে নিয়ে যান এই ‘খাওয়াওলা’দের।
শুটিং ইউনিটে খাবার সরবরাহ করা এমনই একজন ‘খাওয়াওলা’ নুরুদ্দীন নুরু। ৩০ বছর ধরে তিনি শুটিং ইউনিটে খাবার সরবরাহ করে আসছেন। শুটিং চলাকালে দিনে ছয়বার খাবার রান্না করতে হয় তাঁদের। খাবারের মেন্যুতে কী থাকে এই ছয়বার? উত্তরে নুরু বলেন, ‘সকালের নাশতায় থাকে রুটি, ডিম ও সবজি। এগুলো ইউনিটের সাধারণ আর্টিস্ট ও টেকনিশিয়ানদের জন্য। কিন্তু তারকাদের বেলায় কিছু বাড়তি খাবারও থাকে। রুটি, ডিম ও সবজির সঙ্গে গরু ভুনা বা দেশি মোরগ ভুনা দিই।’
সকালের এই নাশতাপর্ব শেষ হয় ১০টার মধ্যেই। বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে হালকা একটা নাশতা দিতে হয়। এই হালকা নাশতায় কলা, আপেলজাতীয় ফল দেওয়ার কথা বলেন নুরু। তিনি বলেন, ‘১১টার পর চানাচুর, সমুচা, শিঙাড়াও দিই। একই খাবার বিকেল ৪টা থেকে ৫টায় এবং রাত ৮টা থেকে ৯টায়, মোটা তিনবার দেওয়া হয়।’ তবে এসব হালকা নাশতা কিন্তু তারকারা সব সময় খান না। তাদের জন্য তখন ফাস্টফুড, যেমন বার্গার বা চিকেন ফ্রাই এনে দিতে হয় বলে জানান নুরু।
শুটিং ইউনিটের জন্য দুপুরের যে খাবার প্রস্তুত করা হয়, সেটির খরচ পড়ে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এই প্যাকেজটি সাধারণ মানের। নুরু বলেন, এই প্যাকেজে পাতে দেওয়া হয় ‘একটা সবজি, ভর্তা, ছোট মাছ, ভুনাডাল এবং মাছ বা মাংসের একটি তরকারি। তবে তারকাদের বেলায় থাকে স্পেশাল মেন্যু। তাদের খাবারের মূল্যটা বেশি। তারকারা ২৫০ থেকে ৫০০ টাকার প্যাকেজে খাবার খান। এই মেন্যুতে সবজি, ভর্তা, ছোট মাছ, ডালভুনার সঙ্গে দেশি কই, শিং ধরনের মাছ দেওয়া হয়। এ ছাড়া গরুর কালা ভুনা, দেশি মোরগ ভুনা, চিংড়ি ভুনাও দিই তারকাদের মেন্যুতে। রাতের খাবারেও প্রায় একই ধরনের খাবার দেওয়া হয়।’
শুটিং ইউনিটে দুই ধরনের খাবার দেওয়া হয় কেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে নুরু বলেন, ‘আসলে যত বড় তারকা, তত বেশি দামের খাবার খায়। নতুন নায়ক-নায়িকা এলে প্রথম ২৫০ টাকা দিয়ে খাবার শুরু করেন। শাকিব খানের মতো তারকারা ৫০০ থেকে এক হাজার টাকার খাবার খান প্রতিবেলায়।’
ছয়বেলার খাবারে যতই উচ্চ ক্যালরিসম্পন্ন খাবারই গ্রহণ করুক না কেন তারকারা, তারা কিন্তু ঠিকই ব্যায়াম করে শরীর ফিট রাখছেন। স্বাস্থ্য ঠিক রাখার প্রতিযোগিতায় ঢালিউড যে বলিউডের চেয়ে পিছিয়ে নেই, তা প্রমাণ হয়েছে কিছুদিন আগেই। ‘মুসাফির’ ছবির নায়িকা মারজান জেনিফা তো গত সোমবার হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছেন কঠিন ডায়েট করতে গিয়ে। সংবাদপত্রেও প্রায়ই খবর পাওয়া যায় শরীর ফিট রাখতে জিমে যাচ্ছেন শাকিব খান বা অপু বিশ্বাসের মতো তারকারা।
মন্তব্য চালু নেই