শিশু বয়সে পিতৃত্বহারাল রিয়াজ
চট্টগ্রাম রাউজানের সম্প্রতি আত্মহত্যা করেছিল এক পুত্র সন্তানের জনক আব্দুল্লাহ আল রিয়াদ। বাবা আত্মহত্যা করায় শিশু বয়সেই পিতৃহারা হয়েছে রিয়াজ। আত্মহননকারী মো.আব্দুল্লাহ আল রিয়াদ মিঠুর একমাত্র পুত্র রিয়াজ এখন শুধু বাবাকেই খুঁজে ফিরছে।
গত ২মার্চ গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে মো.আব্দুল্লাহ আল রিয়াদ মিঠু(৩৩)। সে রাউজান উপজেলার মোহাম্মাদপুর এলাকার ৭নং রাউজান ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মাওলানা রাহাত আলী সাহেব বাড়ির মৃত আব্দস ছালাম মাষ্টারের প্রথম পুত্র।
মো.আব্দুল্লাহ আল রিয়াদ গত ৮বছর আগে উপজেলার বাচা মিয়ার দোকান এলাকা থেকে বিবাহ করেন। তাদের ঘরে জন্ম নেয় মো.রিয়াজ নামের এ পুত্র সন্তান। বাবার ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আজ শিশুটিকে পিতৃহারা হতে হয়েছে। বড়ই নিঃস্ব ও অসহায় হয়ে পড়েছে এ শিশু রিয়াজ।
ছোট্ট শিশু রিয়াজের বয়স মাত্র ৮বছরও পেরোয়নি। এবয়সে থেমে গেল বাবার হাত ধরে স্কুলে যাওয়া। স্কুলে যাওয়ার সময় বায়না ধরতে পারবে না চিপস আর চকলেট কিংবা জুস আর কেক কিনে দেওয়ার। কারণ তার বাবা পৃথিবীর মায়া ছেড়ে আত্মহত্যা করে চলে গেছে না ফেরার দেশে।
সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো আত্মহত্যা করার দিনও সকালে প্রিয় সন্তানকে স্কুলে দিয়ে আসে। আত্মহত্যা করার ঘন্টা খানেক আগেও একমাত্র পুত্রকে শেষবারের মতো দেখতে ছুটে যায় বি আর সি স্কুলে। কে জানত এই মমতা, স্নেহ , হাতের স্পর্শ ছিল শেষ বারের মতো। শিশু রিয়াজের চোখেমুখে মায়াবী ছাপ।
দেখলে আদর করবে না -এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। রিয়াজ এখনো কিছু বুঝে না। তাই হয়তো সে বাবার জন্য কাঁদে না কিন্তু বাবাকে খুজতে জানে। শুধু বাবা, বাবা করে অস্থির করে তোলে। মাকে প্রশ্ন করে মা বাবা কবে আসবে? আত্মহত্যার খবর পেয়ে প্রতিবেদক সংবাদ সংগ্রহের জন্য ছুটে যায় মো.আব্দুল্লাহ আল রিয়াদ মিঠুর বাড়িতে। সে বাড়িতে দেখতে পায় আত্মহননকারীর এক মাত্র পুত্র রিয়াজেকে। ছবি তোলার ফাঁকে প্রশ্ন করি বাবা কোথায়? বাবা কোথায় জানতে চাইলে সে বলে উঠে বাবা বাজারে গেছে চকলেট নিয়ে আসবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় তার বাবার মৃত দেহটা তখন থানায়। সবাই লাশ আশার অপেক্ষায় কিন্তু শিশু রিয়াজ একটি সাইকেল নিয়ে তার ছোট্ট আরেক বন্ধুকে নিয়ে বাড়ির আঙিনায় তখন খেলায় মগ্ন।
আব্দুল্লাহ আল রিয়াদ মিঠু আত্মহত্যা করে বাবার মমতা, স্নেহ, হাতের স্পর্শ সবকিছুই কেড়ে নিয়েছে ছোট্ট শিশুটির। রিয়াজের মতো যেনো আর কেউ এতো কম বয়সে পিতৃহারা না হন সেটাই এখন সবার প্রত্যাশা।
মন্তব্য চালু নেই