শিশুর পরীক্ষা ভীতি, শাসন নয় সাহস দিন
চলছে নভেম্বর মাস, এখন প্রায় সব স্কুলেই চলছে বার্ষিক পরীক্ষার প্রস্তুতি। কোথাও আবার পরীক্ষা শুরু হয়েছে, এর সঙ্গে নতুন স্কুলে ভর্তি পরীক্ষাও চলছে।
এনিয়ে মা-বাবার চিন্তারও শেষ নেই। সারা বছরের প্রস্তুতির এটাই শেষ পরীক্ষা। এরপরই পরই উত্তিণ হয়ে নতুন এক পথে (ক্লাসে) পা রাখতে যাচ্ছে তাদের শিশুটি। এ পরীক্ষায় সন্তান কি ফলাফল করবে? তা নিয়ে মা-বাবা উদ্বিগ্ন থাকবেন এটাই স্বাভাবিক।
মা-বাবার এই চিন্তা সন্তানকেও স্পর্শ করে। পরীক্ষা নিয়ে শিশুদের মধ্যে কাজ করে উত্তেজনা, তাদের বুকটা ধুক ধুক করে, অনেক সময় ভয়ে জিহ্বা শুকিয়ে যায়।
পরীক্ষার এসময়টা শিশুকে ধীরস্থির রাখাতে হবে। এর পাশাপাশি তার অস্থিরতাও কাটানো জরুরী।
আসুন এ ব্যপারে শিশু বিশেষজ্ঞের কিছু পরামর্শ জেনে নিই :
* পরীক্ষার সময়টাতে রিভিশনের ক্ষেত্রে শুধু পড়ার ওপর গুরুত্ব না দিয়ে পাশাপাশি লিখাটাকেও সমান গুরুত্ব দিন। কারণ পড়া মুখস্থ থাকলেও অনেক সময় লিখতে গেলে শিশুরা ভুল করে। তাই পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা লিখে ফেললে অনেক ভুল ধরা পড়ে।
* সারা বছর নিয়মিত পড়াশোনার অভ্যাস গড়ে তুলুন। প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন শেষ করলে পরীক্ষার আগে আর অতিরিক্ত টেনশন থাকবে না।
* পরীক্ষার সময়টায় শিশুকে অতিরিক্ত চাপ দিয়ে নয় বরং আগ্রহ সৃষ্টি করুন। আগ্রহ সৃষ্টি করতে সারাক্ষণ পড়তে না বসিয়ে বরং মাঝে মাঝে বিরতি দিন।
* এ সময়টা শিশুকে শুধু পড়ার মধ্যে না রেখে গল্প-গুজব, খেলাধুলা, টিভি দেখা কিংবা শিশুর পছন্দমতো কিছুটা সময় কাটানোর সুযোগ দিন। এতে শিশুরা একঘেয়েমি দূর করে নতুন উদ্যমে পড়তে পারবে।
* কাজের ফাঁকে ফাঁকে শিশুর পড়া ধরা, উত্তর চেক করে দেয়া বা কিছুক্ষণ বসে মজার কোনো টপিক নিয়ে আলোচনা করলে শিশুরা বুঝতে পারবে যে আপনি সব সময় তার পাশাপাশি আছেন। যা তার পরীক্ষাভীতি দূর করতে অনেকটাই সহায়তা করবে।
* পরীক্ষা চলে এসেছে দেখে সব সময় অনেক পড়া আছে, তাড়াতাড়ি পড়া শেষ করতে হবে, এসব বলে ভয় দেখিয়ে পড়ানোর চেষ্টা করা উচিত নয়। এতে পরীক্ষা নিয়ে তার ভিতরে ভীতি কাজ করে। যা তাকে পরীক্ষা দিতে নার্ভাস করে তোলে।
* অনেক অভিভাবকই পরীক্ষার সময় পড়া নিয়ে এতটাই চাপ দেন যে, শিশু তার মানসিক ক্ষমতার বাইরে গিয়েও পড়তে বাধ্য হয়। এটি তার মানসিক সুস্থতার জন্য একদমই উচিত নয়।
* কোনো একটি পরীক্ষা খারাপ হয়ে গেলে তা নিয়ে বকাঝকা করলে পরবর্তী পরীক্ষা নিয়ে আরও বেশি ভীত হয়ে পড়ে। ফলে পরবর্তী পরীক্ষাটিও খারাপ হতে পারে।
* পরীক্ষার আগে রাত জেগে পড়লে পরীক্ষার দিন শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করে। বরং পরীক্ষার আগের দিন অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমানো নার্ভকে ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে।
* সন্তানকে আশ্বস্ত করুন যে ফলই করুক, আপনি কোনোরকম অসন্তুষ্ট হবেন না। আর ওর যতটুকু শেখা আছে তাই ভালোমতো লিখলেই যথেষ্ট।
* পরীক্ষার আগের রাতেই পেন্সিল বক্সটি গুছিয়ে রাখুন। পরীক্ষার দিন তাড়াহুড়ো করলে কোনো কিছু বাদ পড়ে যেতে পারে।
* পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় শিশুকে ‘বেস্ট অব লাক’ বলুন। এতে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে।
* পরীক্ষা শেষে তাকে পছন্দের কোথাও বেড়াতে নিয়ে যান অথবা তাকে কিছু উপহার দিতে পারেন।এতে শিশুর উৎসাহ বাড়বে।
মন্তব্য চালু নেই