শিশুকে ঘুম পাড়ানোর সহজ উপায়
সোনামনিকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে রাতের পর রাত নির্ঘুম থাকতে হয় মাকে। নিজের চোখ ঘুমে বুজে আসলেও ছোট্ট সোনামনির মুখে হাসি আর চোখ দুটিতো খোলাই রয়েছে! এভাবে আর কতক্ষণ? আপনার শরীরেরও তো বিশ্রাম দরকার, নিজে সুস্থ না থাকলে সোনামনির দিকে খেয়াল রাখবেন কীভাবে? তাই সঠিক সময়ে শিশুর ঘুমটা জরুরি।
মোট কথা প্যারেন্টিং (সন্তান প্রতিপালন কৌশল) একটি শিল্প এবং অনেক মা-বাবাই আছেন যারা দাবি করেন যে তারা এ সম্পর্কে সব কিছুই জানেন।
প্রকৃতপক্ষে, তাদের সন্তানদের বড় করার জন্য তাদের জ্ঞান কখনোই যথেষ্ট না। বিশেষ করে যারা প্রথমবার মা-বাবা হয়েছেন তাদের জন্য এই কাজ আরও কঠিন।
আসুন, এ প্রতিবেদন পড়ে সোনামনিকে ঘুম পাড়ানোর কিছু কৌশন জেনে নিই।
শিশুর ঘুমের নির্দিষ্ট সময় বেধে দিন : একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিলে, আপনার শিশুর সেই সময়ে ঘুমের অভ্যাস তৈরি হয়ে যাবে। এমনকি সে যখন বড় হবে, তখনও এ অভ্যাস তার কাজে আসবে।
খাওয়া-দাওয়ার প্রতি বিশেষ নজর : আপনার শিশুর ঘুমের জন্য খাওয়া-দাওয়ার একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। কখনোই শিশুকে রাতে বেশি খাবার খাওয়াবেন না। কারণ এরফলে আপনার সন্তান রাতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। এক্ষেত্রে একটা সেরা টিপস হল, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনার সন্তানকে এমন কিছুই দেবেন না, যাতে ক্যাফিন রয়েছে।
আরামদায়ক ঘুম নিশ্চিত করুন : শিশুদের রাতে ঘুম পাড়াতে এটিই হয়তো সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি টিপস। শারীরিক ও মানসিকভাবে আপনার শিশু খুবই কোমল। ওকে ওর শরীরের জন্য আরামদায়ক একটা বিছানা দিতে হবে। টেডি বিয়ার বা এমনি কোনও সফট টয়ের সঙ্গে ওকে সাময়িকভাবে ঘুমাতে দিন। এরফলে খুব ভাল একটা অভ্যাস তৈরি হবে, যেটা ওকে একা এমনকি আপনাকে ছাড়া শুতে সাহায্য করবে।
আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি : রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে শিশুকে ঘুম পাড়ানি গান শোনাতে পারেন। এতে ওর মন শান্ত থাকবে এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সহজেই ঘুম আসবে।
ঘুমিয়ে পড়লেও শিশুর কাছাকাছি থাকুন : প্রায় সব বাচ্চাদেরই ঘুমের মধ্যেও নিজের মা-বাবাকে খোঁজার একটা অভ্যাস থাকে। শিশু যখন ঘুমাবে তখন আপনি ওর কাছাকাছি থাকুন, যাতে রাতে ওর কিছু প্রয়োজন হলে আপনি তা মেটানোর জন্য সেখানে উপস্থিত থাকেন।
ঘরের তাপমাত্রা : আপনার শিশুর আরামদায়ক ঘুমের জন্য ওর ঘরের তাপমাত্রা কখনোই খুব বেশি বা খুব কম করবেন না, এটা ওর আরামদায়ক ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়। সবসময় ওর ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখুন।
উৎসাহিত করুন : নির্দিষ্ট সময়ে শিশুকে ঘুমানোর জন্য পুরস্কার দিয়ে উৎসাহিত করুন।
বকাঝকা বা মারবেন না : বকাঝকা করা বা মারা বাচ্চাদের জন্য ক্ষতিকর। এরফলে ওর মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়, যা পরে ওকে শান্তিপূর্ণভাবে ঘুমাতে দেয় না।
শিশুদের রাতে ঘুম পাড়ানোর এই টিপসগুলি, বিভিন্ন জায়গায় মা-বাবাদের দ্বারা পরীক্ষিত এবং তারা এর ফলাফলে খুবই খুশি। মনে রাখবেন, প্রতিদিনই আপনার শিশুর ভাল ঘুম প্রয়োজন, নইলে ওদের সার্বিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে।
মন্তব্য চালু নেই