শিগগিরই ভাঁজ করতে পারবেন আপনার টেলিভিশন কিংবা স্মার্টফোন!

চাইলেই টেলিভিশন বা স্মার্টফোনটিকে কাগজের মতো ভাঁজ করে ফেললেন। এটা এখন পর্যন্ত সায়েন্স ফিকশন ছবির ঘটনা বলেই মনে হয়। কিন্তু খুব শিগগিরই তার বাস্তবে পরিণত হবে।

এক দল ডাচ বিজ্ঞানী এমন এক ধরনের গ্রাফিন (বিশেষ বন্ধনে যুক্ত কার্বনের অণু) আবিষ্কার করেছেন, যাকে টানলে বা স্পর্শ করলে রং বদলাতে পারে। এগুলো ‘যান্ত্রিক পিক্সেল’ যা ভবিষ্যতের প্রযুক্তি যন্ত্রের পর্দায় ঠাঁই করে নেবে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। এই পর্দা হবে আরো বেশি স্থিতিস্থাপক, টেকসই এবং শক্তি সাশ্রয়ী। আধুনকি এলইডি প্রযুক্তির চেয়েও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে এটা। নেদারল্যান্ডসের ডেল্ফট ইউনিভার্সিটি অব টেকনলজির গবেষক দল এমন গ্রাফিন আবিষ্কার করেছেন।

গ্রাফিন হলো কার্বনের এক আল্ট্রা-থিন স্তর। এটি একটি অণুর সমান পাতলা যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিসিন খাত থেকে শুরু করে যেকোনো বাণিজ্যিক খাতে এর ব্যবহার বেশ কাজের হবে। এই পদার্থ স্টিলের চেলে ২০০ গুণ শক্তিশালী। ক্লিং-ফিল্ম এর মতো পাতলা গ্রাফিনের একটি পাতায় গোটা একটা হাতির ওজন বহন করা সম্ভব হবে।

গবেষকরা জানান, গ্রাফিনের পিক্সেল নিয়ে আপাতত কাজ করা হচ্ছে। এর রং নিয়ন্ত্রণর কৌশল রপ্ত করতে হবে।

ইতিমধ্য প্রোটোটাইপ তৈরিতে মন দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আগামী বছরের মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে দেখানো হবে গ্রাফিনকে।

বিজ্ঞানীরা গ্রাফিনের দুটো পাতার মাধ্যমে স্তর সৃষ্টি করে সেখানে সিলিকন প্যানেল ব্যবহার করেছেন। সিলিকন প্যানেলটি গ্রাফিনের সঙ্গে সেঁটে দেওয়া হয় ফুটোর মাধ্যমে। সিলিকনের ত্বকে গ্রাফিন লেগে যায় ড্রামের চামড়ার মতো।

এই প্যানেলে চাপ প্রয়োগ করার সময় বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেন, গ্রাফিনের ত্বকে বুদ্বুদ আকারে রং পরিবর্তন হচ্ছে। সিলিকনে চাপের প্রয়োগ ঘটলেই গ্রাফিনের ত্বকে অবতল বা উত্তলভাবে রংয়ের পরিবর্তন ঘটতে থাকে।

গ্রাফিন এমনিতেই অনেক স্বচ্ছ। এটা এতটাই পাতলা যে এতে আলো প্রতিফলন ঘটে না। এতে রংয়ের পরিবর্তন এখন পর্যন্ত মাইক্রোস্কোপেই চোখে পড়ছে। একটি অন্ধকার কক্ষেও তা দেখা যায় না। একে ঝকঝকে পর্দায় রূপ দেওয়া তাই বিজ্ঞানীদের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছোট একটি ছবি স্পষ্ট করতে কয়েক শত হাজার পিক্সেল দরকার হবে। এই বুদ্বুদ থেকে আরো রং বের করার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।

এক বিশেষজ্ঞ কার্টমিল-বুয়েনো জানান, আমি নিজের চোখে রংধনুর রং দেখেছি গ্রাফিনে। এর পরের কাজ হবে গ্রাফিনে চাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সঠিক রংটি তুলে আনা। সূত্র: ডেইলি মেইল



মন্তব্য চালু নেই