শিক্ষক নেই, ক্লাস নিচ্ছেন দপ্তরি
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত ৩২ নং কাগদী-চান্দাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে স্কুলটির দপ্তরি দিয়ে। জানা গেছে, স্কুলটির প্রধান শিক্ষক ও দপ্তরি ছাড়া আর কোনো শিক্ষক নেই।
ফলে স্কুলের কয়েকশ ছেলেমেয়ের শিক্ষাজীবন ব্যহত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা চললেও যেন দেখার কেউ নেই। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা নিয়ে চরমভাবে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা।
১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ফরিদপুরের সালথ উপজেলার কাগদী-চান্দাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির। প্রতিষ্ঠার পর স্কুলটিতে পড়ালেখার মান ছিল বেশ ভালো। বিগত কয়েক বছর আগেও স্কুলের রেজাল্টও ছিল আশানুরূপ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এ স্কুলটির অবস্থা বেশ শোচনীয়। দীর্ঘদিন ধরে স্কুলটিতে চলছে শিক্ষক সংকট। ৭ জন শিক্ষকের বিপরীতে শুধুমাত্র রয়েছে প্রধান শিক্ষক।
তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী বলতে রয়েছেন কেবলমাত্র ১ জন দপ্তরি। ফলে স্কুলের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার দেখভাল করছেন দপ্তরি এনায়েত হোসেন। সকালে স্কুলে এসেই দপ্তরি এনায়েত হোসেন ক্লাসরুম খোলা থেকে শুরু করে সারেন নানান কাজ। তারপর শুরু হয় তার ক্লাস নেওয়ার পালা। ১ম শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণীর বেশির ভাগ ক্লাস নেন দপ্তরি এনায়েত হোসেন। প্রধান শিক্ষক মাঝে মধ্যে ক্লাস নিলেও মূলত দপ্তরিই স্কুলের সবকিছুই সামলান।
গত কয়েকমাস ধরে বিদ্যালয়টির শিক্ষক সংকট চললেও এর কোনো সুরাহা হচ্ছে না। ফলে এ স্কুলের ৩৭৫ জন শিক্ষার্থী ঠিকমতো পড়ালেখা করতে পারছেন না। সামনে স্কুল সমাপনী এবং বার্ষিক পরীক্ষা চলে আসলেও শিক্ষার্থীরা শিক্ষক সংকটের কারণে ঠিকমতো ক্লাস করতে পারছেন না। ফলে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ।
দপ্তরি দিয়ে ক্লাস নেওয়া এবং শিক্ষক সংকটের কারণে ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখার মান নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন অভিভাবকেরা। দ্রুতই শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বিদ্যালয়ের নানা সংকটের কথা স্বীকার করে প্রধান শিক্ষক পাপিয়া রাণী রায় জানান, বাধ্য হয়েই তিনি দপ্তরি দিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগদানের দাবি তিনিও করেছেন।
এদিকে, গোটা সালথা উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট রয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষ্ণচন্দ্র চক্রবর্তী। শিক্ষক সংকটের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে এবং দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশাবাদী তিনি। তিনি আরো বলেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
মন্তব্য চালু নেই