শিক্ষকের যৌনতার ঝড়ে বিধ্বস্ত ছাত্রী

তখন ঘনিয়ে এসেছে সন্ধ্যা। এক্ষুণি শেষ হবে প্রাইভেট পড়া। বাড়ি ফেরার তাড়া অনুভব করে কিশোরী ছাত্রীটি। কিন্তু এর মধ্যেই শুরু হয় কালবৈশাখী ঝড়। প্রবল বৈরী বাতাস আর বৃষ্টিতে চারদিকে কেঁপে উঠছে। খানিকটা ভয় পেয়ে যায় সে। তবে সে ভয় তার সম্মানিত আর শ্রদ্ধেয় শিক্ষককে নয়, বাইরের বৈরী প্রকৃতিকে।

কিন্তু কী আশ্চর্য! ঝড় তো দেখি বাইরে নয়, ঘরের ভেতরেই। সে এক মহাতাণ্ডব। কিছুই মনে থাকেনা অসহায় মেয়েটির।

বাইরেই প্রকৃতি তখন বড় শান্ত। থেমে গেছে ঝড়। কিন্তু ঘর থেকে বেরুতে পারছে না বাড়ি ফেরার তাড়া অনুভব করা ছাত্রীটি। সে তখন রক্তাক্ত। পরনের জামায় ছোপ ছোপ রক্ত। সারা শরীর জুড়ে সীমাহীন যন্ত্রণা। এক অন্যরকম গৃহঝড়ের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে সে। ঘরের সেই তাণ্ডবের পর উধাও সেই শ্রদ্ধেয় শিক্ষক! অসহায়ের মতো ছাত্রীটির চোখে তখন ঝুমবর্ষা!

এ ঘটনা নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউপির মালিবাগ কেরামতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বাসায়। গত ৩১ মার্চ বিকেলে কয়েকজন ছাত্রীকে নিজ বাসায় নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক জহিরুল হক।

ঘটনার সময় কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছিল আকাশ। অন্য ছাত্রীরা আগেভাগেই চলে গিয়েছিল। আটকে গিয়েছিল শুধু নবম শ্রেণীর ওই ছাত্রী। এর মধ্যেই চারদিকে শুরু হয় প্রবল ঝড় বৃষ্টি। ঘন হয়ে আসে অন্ধকার। ওই সুযোগই কাজে লাগান শিক্ষক! প্রবল ঝড় বৃষ্টির শব্দে ঝড় শুরু হয় শিক্ষকের মধ্যেও। ছাত্রীকে জোর করে জড়িয়ে ধরেন। নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় নিরুপায় ছাত্রী। এরপরে যৌন দানবের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েন ছাত্রীর ওপর। একদিকে বজ্রবিদ্যুৎ আর বাতাসের তাণ্ডব, অন্যদিকে একই কায়দায় ছাত্রীর ওপর চলে শিক্ষকের যৌন অভিযান! রক্তাক্ত বিধ্বস্ত ছাত্রী নিস্তেজ হয়ে পড়ে। শিক্ষকের ঝড় থেমে গেলে রক্তাক্ত-বিধ্বস্ত ছাত্রীকে ফেলে উধাও হয়ে যান শ্রদ্ধেয় সেই শিক্ষক! খবর পেয়ে ছাত্রীর মা এসে মেয়েকে ভর্তি করায় ঢাকার মাতুয়াইলে মা ও শিশু ইনস্টিটিউটে।

ছাত্রীর স্বজনরা জানায়, কেরামতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জহিরুল হকের কাছে প্রাইভেট পড়তো তার মেয়েসহ কয়েকজন। মঙ্গলবার বিকেলে শিক্ষকের বাসায় পড়তে যায় তার মেয়ে। এর মধ্যে ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। এ সুযোগে শিক্ষক ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে যায়।

ধর্ষক ও লম্পট শিক্ষক জহিরুল হক সোনারগাঁও উপজেলার মোগরাপাড়া ইউপির কাজিরগাঁও গ্রামের মোস্তফা মিয়ার ছেলে। তিনি বন্দর উপজেলা মুছাপুর ইউপির মালিবাগ কেরামতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অস্থায়ী শিক্ষক।

৩১ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে রাখে স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজন। তবে শনিবার সকালে জানাজানি হয় ধর্ষণের এ ঘটনা। এঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেছেন তারা।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মালিবাগ কেরামতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য বজলুর রহমান বলেন, স্কুলের বাইরে ঘটনা ঘটেছে। এজন্য স্কুলের পক্ষে উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তবে ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হবে।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, ধর্ষণের ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



মন্তব্য চালু নেই