শাবিতে র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে র‌্যাগিং ও পরবর্তীতে সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচ বহিষ্কৃত ছাত্রকে রক্ষা করতে ও ঘটনা ধামাচাপা দিতে একটি অংশ ক্যাম্পাসে তৎপরতা চালাচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার ছাদে গণিত বিভাগের এক ছাত্রীকে র‌্যাগিংয়ের পর ছাত্রদের দুটি পক্ষ সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় রোববার ৫ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের অনুমতি ছাড়াই তারা ক্যাম্পাসে মানববন্ধন সমাবেশ করেছে। এ ছাড়া জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও মিছিল সমাবেশ করেছে।

প্রক্টর অধ্যাপক কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ওই দিনের র‌্যাগিং এবং এর পরবর্তী সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ আমরা পেয়েছি। র‌্যাগিং এবং সংঘর্ষে জড়িত থাকার দায়ে আমরা পাঁচ জনকে সাময়িক বহিষ্কারও করেছি। এ ছাড়া তদন্ত চলছে। আরো যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বহিষ্কৃত পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজনই গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে কোনো র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি গণিত বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের। গণিত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলামের দাবি, গণিত বিভাগের শিক্ষকদের তদন্তে র‌্যাগিংয়ের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তবে তথ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে পরবর্তী সংঘর্ষের ঘটনায় যদি কেউ জড়িত থাকে সেক্ষেত্রে আমার কিছু বলার নেই।

বহিষ্কৃতদের সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ’র সমর্থক। এ ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে তার অনুসারীরা নানাভাবে চেষ্টা করছে বলেও জানা গেছে। তবে এ অভিযোগ অস্কীকার করে পার্থ বলেছেন, ‘কর্মসূচি সম্পর্কে আমার জানা নেই।’

প্রক্টর অধ্যাপক কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ‘কেউ কেউ বহিষ্কারের ঘটনাকে আড়াল করতে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। আমি মনে করি তা ঠিক না। কারো যদি কিছু বলার থাকে তদন্ত কমিটি কাজ করছে, সেখানে আত্মপক্ষ সমর্থনেরও সুযোগ আছে। ওইদিন র‌্যাগিং ও তার পরবর্তীতে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রক্টোরিয়াল বডি শুধুমাত্র যারা জড়িত ছিল তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘অনেকেই বহিষ্কারের বিষয়টিকে কোনো বিভাগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন। আমরা কে কোন বিভাগের শিক্ষার্থী তা দেখে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করিনি। আমার বিভাগের ছাত্র হলেও আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতাম।’

শিক্ষার্থী অসীম বিশ্বাসের বহিষ্কারাদেশ অযৌক্তিক বলে গতকাল দুপুরে মানববন্ধন করেছে সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কতিপয় শিক্ষার্থী। তাদের দাবি, ঘটনায় অসীম জড়িত ছিল না।

এ বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘আমরা শুধুমাত্র র‌্যাগিংয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে নয়, যারা এর পরবর্তীতে সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিয়েছি।’

ঘটনার দিন র‌্যাগিং পরবর্তী সশস্ত্র সংঘর্ষে সমাজকর্ম বিভাগের অসীম বিশ্বাস ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মোশরফ হোসেন রাজুকে অস্ত্র হাতে দেখা গেছে। এ ছাড়াও তারা দুজন গত ১৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আলী হাসানকে পিটিয়ে আহত করে।



মন্তব্য চালু নেই