শহীদ মিনারে শিক্ষকদের সংঘর্ষ, আহত ১৫

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে ভিসিপন্থী ও ভিসি বিরোধী শিক্ষকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ আহত হন। তাদের মধ্যে ৩ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর বারোটার দিকে শহীদ মিনারে ফুল দেয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।

পরে ভিসিকে সন্ত্রাসীদের গডফাদার দাবি করে তার অপসারণ দাবি করেছে আন্দোলনরত শিক্ষক সমিতি।

অন্যদিকে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ ঘটনার জন্য শিক্ষক সমিতির নেতাদেরকে দায়ী করেন ভিসি। এদিকে সংঘর্ষের পর থেকে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২ টার দিকে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্য শহীদ মিনারে বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন ভিসি ড. প্রফেসর নূর-উন-নবী।

এ সময় ভিসির অপসারণের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে একাংশের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ক্যাম্পাসে র‌্যালি করে ফুল নিয়ে স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্যের দিকে গেলে ভিসিপন্থী শিক্ষকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপের শিক্ষকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, হাতাহাতি ও ইটপাটেকল নিক্ষেপ শুরু হয়।

এতে উভয়পক্ষের শিক্ষকদের সাথে স্ব-স্ব পন্থী শিক্ষার্থীরাও সংঘর্ষে অংশ নেয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। সংঘর্ষ ও লাঠিচার্জে উভয়পক্ষের ১৫ জন আহত হয়। এদের মধ্যে ৩ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের পর ভিসিপন্থীরা অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে যান। পরে সেখানে শিক্ষক সমিতির নেতা ও তাদের পক্ষের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন।

এদিকে এ ঘটনায় ভিসিকে সন্ত্রাসীদের গড ফাদার দাবি করে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. সাইদুল হক সাংবাদিকদের জানান, ‘বর্তমান ভিসি বোমাবাজ, গডফাদার ও সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষক। তিনি পেশিশক্তি দিয়ে ক্ষমতা আকড়ে রাখতে চাইছেন।’

তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘ভিসি সন্ত্রাসী বাহিনী এবং পুলিশকে দিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের ফুল দেয়ায় বাধা দিয়েছে। এতে ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা গুরুতর।’

অন্যদিকে এ ঘটনায়র প্রতিবাদে ভিসি ড নুর-উন-নবী তার অফিস কক্ষে দুপুর পৌনে দুইটায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান চালাকালে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর লোকজনের উপস্থিতিতে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে শিক্ষক সমিতির নেতারা আমার এবং আমার সহকর্মী শিক্ষক কর্মকর্তা, কর্মচারী শিক্ষার্থী ও সুধিজনের ওপর যেভাবে হামলা চালিয়েছে তাতে আমি মর্মাহত,ব্যাথিত। তারা আমাকে লক্ষ্য করে যেভাবে ঢিল ছোড়াছুড়ি শুরু করেছে, সহকর্মীরা আমাকে সেফ না করলে আমি গুরুতর আহত হয়ে যেতাম।’

তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাটি আমি সমগ্র জাতির বিবেকের ওপর ছেড়ে দিলাম। আমি কোন আইনগত ব্যবস্থা নেবো না। আমি ইচ্ছা করলে আইনশৃংখলাবাহিনীকে ব্যবহার করতে পারতাম কিন্তু সেটা করিনি।’

এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের জিলানী জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইপক্ষের শিক্ষকদের মধ্যে স্মৃতি স্তম্ভ এলাকায় কর্মসূচি নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মৃদু লাঠিচার্জ করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই