শরীরে বিদ্যুৎ বয়ে বেড়ানো নারী!

শরীরে বিদ্যুৎ বয়ে বেড়াচ্ছেন হাওড়ার বেলুড়ের বাসিন্দা গৃহবধূ আশা চৌধুরী। বছর তেত্রিশের এই গৃহবধূ থাকেন পালঘাট লেনে।

সমস্যা হচ্ছে, আশা চৌধুরীকে ছুঁতে গেলেই ইলেকট্রিক শক খেতে হয়। তার পুরো শরীরজুড়েই বিদ্যুৎ। ইতিমধ্যে শক খেয়ে আতঙ্কে দূরে থাকছেন পরিজনেরা।

আশা চৌধুরীকে স্পর্শ করলেই ইলেকট্রিক শক খাওয়ার এমন অদ্ভুতুড়ে কাণ্ডে আশা চৌধুরী তো বটেই গোটা চৌধুরী পরিবারই এখন বিব্রত। বেজায় আতঙ্কে তারা। আশা দেবীর শরীরে ‘টেস্টার’ ছুঁইয়ে চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

নিজের এই সমস্যা নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন আশা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘কী হয়েছে, কিছুই বুঝতে পারছি না। ভয়ে ছেলে-মেয়ে কেউ সামনেই আসছে না।’ তার তিন বছরের মেয়ে শ্রেয়া তাঁর গায়ে হাত দিতেই বিদ্যুতের শক খাওয়ার মতো কেঁপে ওঠেন তিনি। ঝটকা লাগে শ্রেয়ারও। ছেলে অয়ন এসে হাত ধরতেই ফের দুজনেরই ঝটকা লাগে।

বেজায় ভয় পেয়ে স্বামী সুনীল চৌধুরীকে ফোন করেন আশাদেবী। তড়িঘড়ি বাড়ি চলে আসেন তার স্বামী। দুপুরে খাওয়া শেষে স্টিলের থালা আশাদেবীর হাতে দিতেই ফের দুজনেরই ঝটকা লাগে।

সুনীল বলেন, ‘থালাটা হাতে দিতেই আমার স্ত্রী শক খাওয়ার মতো কেঁপে উঠল। আমারও একই রকমভাবে শক লাগলো।’ ফের রাতে ফ্ল্যাটের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে স্টিলের রেলিংয়ে হাত দিতেই একই সমস্যা। এসব ঘটনা শুক্রবারের।

শনিবার সকালেও আলমারির হাতলে হাত দেওয়া মাত্রই সে একই ঘটনা।

বারবার এই ঘটনা ঘটতে থাকায় ভয়ে মায়ের কাছে যেতে চাইছে না শ্রেয়া ও অয়ন। বাড়ির পরিচারকেরাও ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন।

শেষে শরণাপন্ন হলেন চিকিৎসকের। চিকিৎসকদের মতে, এই ধরনের ঘটনা খুবই বিরল। ছোট ছোট স্নায়ু কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হলে মানবশরীরে এমন বৈদ্যুতিক শক লাগার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে। যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়, ‘পিওর সেন্সারি নিউরোপ্যাথি বা স্মল ফাইভার নিউরোপ্যাথি’।

আরেক চিকিৎসক বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা খুবই বিরল। মাঝেমধ্যে এমন রোগে আক্রান্ত লোকজন আসেন। ছোট ছোট যে সমস্ত স্নায়ু ব্যথা, স্পর্শ, তাপ এই অনুভূতিগুলো বহন করে সেগুলো কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে এমন সমস্যা তৈরি হয়। এটি ‘ইমিউন মিডিয়েটেড ডিজিজ’।



মন্তব্য চালু নেই