লিভ টুগেদার করার কারনে পাসপোর্ট পেতে যে ভোগান্তি পোহাতে হল দেবযানীর !

পাসপোর্ট যাঁদের রয়েছে তাঁরা নিশ্চয়ই জানবেন, যে পাসপোর্ট তৈরি করার আগে লোকাল থানা থেকে একজন পুলিশকর্মী বাড়িতে ভেরিফিকেশনের জন্য আসেন। ঘর-দোর দেখেন, কিছু প্রশ্ন করেন, তার পর চলে যান। যদি গণ্ডগোল না থাকে তবে এরপর পাসপোর্ট পেতে সমস্যা হয়না। দেবযানী-ও পাসপোর্ট রিনিউ করানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর কপালে জুটেছিল একরাশ অবজ্ঞা আর হেনস্থা।

নিজের মুখেই সেই কাহিনি শুনিয়েছেন দেবযানী। তিনি জানাচ্ছেন, কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতে একটি ফ্ল্যাটে স্বামী কৃষ্ণানের সঙ্গে থাকেন তিনি। গত বছর অক্টোবরেই বিয়ে হয় তাঁদের। তবে বিয়ের ৬ মাস আগে থেকেই তাঁরা লিভ-ইন করেছেন। দু’ জনেই বিশ্বের নাম করা দু’টি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী। এ জন্য প্রায়শই দেশের বাইরে যাতে হয় তাঁদের। কৃষ্ণান তাঁর পাসপোর্টটি ২০১৪-র মার্চ মাসে রিনিউ করিয়ে নেন। পুলিশ ভেরিফিকেশন-সহ যাবতীয় প্রক্রিয়াটি মাত্র ১০ দিনেই শেষ হয়। দেবযানীর পাসপোর্টও সেপ্টেম্বর মাসে ল্যাপ্স হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো তিনিও রিনিউ করারনোর আবেদন জানান। তার পর থেকে মাস খানেক ধরে কী কী সহ্য করতে হয় তাঁকে তা নিজের কথাতেই জানিয়েছেন তিনি।

দেবযানী বলেন, ‘স্থানীয় কাদুগোড়ি থানা থেকে মণিরাজু নামে এক জন ইন্সপেক্টর ভেরিফিকেশনের জন্য ২৮ মার্চ ফোন করেন। সে সময় বাড়িতে ছিলাম না। ২ দিন পর ৩০ মার্চ থানায় যাই। সেখানে সমস্ত কাগজপত্র দেখার তিনি প্রশ্ন করেন, বিয়ের আগে থেকেই আমরা এক সঙ্গে থাকি কিনা, যদিও সেটা নিয়ে ওঁর মাথাব্যাথা হওয়ার কারণ নেই। তবুও উত্তর দিই। তিনি আরও বলেন, বিয়ে না করে আমরা কী ভাবে এক সঙ্গে থাকতে পারি, ইত্যাদি ইত্যাদি। তার পর ডকুমেন্টস দেখে তিনি আমাদের বাড়ি চলে যেতে বলেন। এর পর থেকে শুরু হয় হেনস্থা। কখনও ২ দিন পর আসুন। কখনও ৩ দিন পর আসুন। কখনও অফিস থেকে চিঠি আনুন তো কখনও ফ্ল্যাট অসোসিয়োশন থেকে চিঠি আনুন। এর মধ্যেও বহুবার ইন্সপেক্টর মণিরাজুকে ফোন করি। তিনি কখনই ফোন ধরেননি। এ ভাবে প্রায় মাস খানেক ঘোরার পর আমরা সরাসরি পাসপোর্ট কমিশনারের অফিসে গিয়ে দেখা করে সব কিছু জানাই। সেখানে খানিকটা কাজ হয়।’

যে দিন তাঁরা পাসপোর্ট অফিসে যান, সে দিনই দেবযানী রাতে একটা এসএমএস পান, যে পুলিশের খারাপ রিপোর্টের জন্য পাসপোর্ট রিনিউ করার আবেদন খারিজ করা হলো। এটা দেখে ভয়ানক রেগে গিয়েছিলেন তিনি। পর দিনই সমস্ত ডকুমেন্টস-সহ গোটা ঘটনা বর্ণনা করে পুলিশ কমিশনারকে একটি চিঠি লেখেন। এর পর টনক নড়ে পুলিশের। মণিরাজুও গদগদ গলায় ফোন করে সব কাজ নিমেষের মধ্যে করে দিয়ে যান। কমিশনারের অফিস থেকেও যোগাযোগ করে দোবযানীর কাছে জানতে চাওয়া হয় পুলিশ সহযোগিতা করেছে কিনা। অবশেষে নতুন পাসপোর্ট হাতে পান দেবযানী।



মন্তব্য চালু নেই