লালমনিরহাটে স্বর্ণামতি সেতু ভেঙ্গে ট্র্যাক বিকল ॥ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
আদিতমারীর স্বর্নামতি সেতু’র পাটাতন ভেঙ্গে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কে যানবাহন চলাচল সম্পর্ন রুপে বন্ধ রয়েছে।
চালক আমিনুর রহমান বলেন,সেতুটিতে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটছে। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি দিয়ে চলাচল করি। সেতুটিতে একবার গাড়ী আটকে গেলে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়।
রোববার (৩ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ট্রাকটি উদ্ধার ও সেতু মেরামত করতে সময় লাগবে। কাজ সকালে শুরু করার কথা রয়েছে বলে মুঠোফোনে জানান লালমনিরহাট সড়ক ও জনপদ(সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী সুরুজ মিয়া।
অপর দিকে দূর্ঘটনা এড়াতে ও নিরাপত্তা বিধানে সেতুটির উভয় পাশ্বে থানা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন আদিতমারী থানার উপ পরিদর্শক(এসআই) শাহীন আক্তার ।
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বুড়িমারী গামি সকল কোচ বিকল্প সড়ক হয়ে যাওয়ার জন্য বাস মালিক সমিতিকে বলা হয়েছে বলেও জানান থানার ওই এসআই।
লালমনিরহাট সড়ক ও জনপদ বিভাগ জানন, ঝুকিপূর্ন সেতু তাই ৫ টনের অধিক ভারি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অতিরিক্ত পন্য বোঝাই ভারি যানবাহন চলাচল করায় ঝুকিপূর্ন সেতুটি আরো মারাত্বক ঝুকিতে পড়ে।
এমনি ভাবে রোববার রাতে অতিরিক্ত পন্য বোঝাই কয়েকটি ট্রাক সেতু অতিক্রম করায় সময় একটি পাটাতন ভেঙ্গে গিয়ে সেতু মাঝ খানে আটকে গেছে।
বর্তমানে বিকল্প সড়ক হিসেবে লালমনিরহাট চাপারহাট ও আদিতমারী ভেলাবাড়ি বাইপাস সড়ক হয়ে যানবাহনগুলো চলাচল করছে।
লালমনিরহাট সড়ক ও জনপদ বিভাগ জানন, লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কের আদিতমারীর স্বর্নামতি সতী নদীর উপর ৬০ দশকে স্বর্নামতি সেতুটি নির্মান করা হয়। সেতুটি হয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দরের পন্য ও ইমিগ্রেশনের যাত্রীসহ পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, আদিতমারী ও কালীগঞ্জ এ চার উপজেলার মানুষের জেলা সদরসহ সারাদেশের সাথে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক পথ এটি।
এ সেতুটি দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ ধরে জোরাতালি দিয়ে যোগাযোগ সচল রেখেছে কর্তৃপক্ষ। প্রায় ১০ বছর আগে সেতুটির উপরের অংশের ফাটল দেখা দিলে বসানো হয় স্টিলের পাটাতন। সেই পাটাতনও প্রতি সপ্তাহে দুই একবার করে ভেঙ্গে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ হয়ে পড়ছে এ জনপদের।
এমন একটি জনগুরুত্বপূর্ন সেতুর উপর দৃষ্ঠি নেই কোন মহলেরই। দায় এড়াতে সড়ক ও জনপদ বিভাগ সেতুর উভয় পাশ্বে “সাবধান ঝুকিপূর্ন সেতু ” লিখা সাইবোর্ড লাগিয়ে দায়িত্ব শেষ। ওই সাইন বোর্ডে ৫ টনের অধিক ভারি যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকলেও বাস্তবে এ নির্দেশনা মানছে না কেউ।
অপর দিকে চলতি বছরের ২৫ নভেম্বর থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারাজ দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করায় স্বর্নামতি সেতুতে ভারি যানের চাপ বেড়ে যায়। বুড়িমারী স্থলবন্দর ও পাটগ্রামের পাথরের ৪০/৫০ টন ওজনের ভারি যানবাহন গুলো আদিতমারী হয়ে স্বর্নামতি সেতু দিয়ে লালমনিরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।
এতে ঝুকিপূর্ন এ সেতুটি আরও ঝুকির মধ্যে পড়ে যায়। তাই প্রায় প্রতিদিন স্বর্নামতি সেতুর পাটাতন ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হচ্ছে। হরহামেশায় ঘটছে দূর্ঘটনা।
স্থানীয়দের দাবি, যতদিন নতুন সেতু নির্মান করা না হচ্ছে, ততদিন সেতুর উভয় পাশ্বের চেকপোষ্ট বসিয়ে ৫টনের অধিক যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রন করা হোক।
লালমনিরহাট সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুরুজ মিয়া জানান, বারবার বলার পরও অতিরিক্ত পন্য বোঝাই ট্রাক গুলো পারাপার করায় সেতুর দুইটি পাটাতন ভেঙ্গে গেছে। সোমবার সকালে ভাঙ্গা পাটাতনের মেরামত কাজ শুরু করা হবে। তবে সেতুটি নতুন করে নির্মানের জন্য সরকারের উর্দ্ধতন মহলকে একাধিকবার জানানো হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
মন্তব্য চালু নেই