লালমনিরহাটের কিছু খবর :

লালমনিরহাটে বিজিবি-পুলিশ পাহাড়ায় যান চলাচল

বিএনপি’র ডাকা অবরোধ আর হরতালে জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে লালমনিরহাট-বুড়িমারী আঞ্চলিক মহা সড়কে ভারি যান চলাচলে পুলিশ-বিজিবি কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে। এতে করে জেলার পাটগ্রামে অবস্থিত দেশের অন্যতম বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে প্রতিদিনই বেশ কিছু পণ্যবোঝাই ট্রাক যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে। দিনে-রাতে দফায় দফায় এসব যান চলাচলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরলস কাজ করে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। সেই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বুড়িমারীগামী ট্রাকগুলোকেও কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

গত দুই দিন ধরে সকালে শুধু ঢাকাগামী কিছু বাস বিজিবি-র‌্যাব প্রহাড়ায় যেতে দেখা যাচ্ছে। তবে সন্ধ্যায় কোন ঢাকাগামী বাস যাচ্ছে না। অধিকাংশ মালিকেই সড়কে ঝুকির বিষয়টি মাথায় রেখে রাস্তায় গাড়ী বের করার সাহস পাচ্ছে না।

প্রতিদিন এ জেলা থেকে ৭০ টিও বেশি ঢাকাগামী বাস চলাচল করলেও শনিবার সকালে ৮/৯ টি বাস বিজিবি-র‌্যাব পাহাড়ায় লালমনিরহাট থেকে ঢাকার পথে ছেড়েছে। তবে বাস গুলোতে যাত্রী সংখ্যা ছিল একেবারে কম।

এ দিকে গত কয়েকদিন ধরে উত্তরের জেলাগুলোতে জ্বালানি তেলের সংকট দেখা গেলেও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় তেলবাহী লরি আনা-নেয়ায় তা প্রায় নিরসন হতে চলেছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় পাম্পগুলোতে জ্বালানি তেল সরবরাহ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। বুধবার দুপুরে বেশকিছু তেলের লরি পুলিশ-বিজিবি ও হাইওয়ে পুলিশের সতর্ক প্রহরায় বাঘাবাড়ী ডিপোতে পাঠাতে দেখা গেছে। এ সময় অসংখ্য পণ্যবাহী ট্রাকও তাদের গন্তেব্যে পৌঁছে দিতে কাজ করে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব ট্রাকের সামনে-পেছনে রয়েছে পুলিশ-বিজিবি ও হাইওয়ে পুলিশের গাড়ি।

হাতীবান্ধা থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিজিবি ও হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি পাটগ্রাম থানা পুলিশ বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে ছেড়ে আসা পণ্যবাহী ট্রাকগুলো হাতীবান্ধা থানার সীমানা পর্যন্ত এনে দেয়। এরপর সেখান থেকে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ একইভাবে পরবর্তী থানা কালীগঞ্জ পুলিশের কাছে তাদের সীমানা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। এ ভাবে মহাসড়কে নিñিদ্র নিরাপত্তায় প্রতিটি থানা পুলিশ পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন ভারি যানবাহনগুলোকে জেলা পেরিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছানোর কাজে দিনে-রাতে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে জানা গেছে।

শনিবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ভারত ও ভুটান থেকে আসা কমলা, আপেল, কয়লা ও পাথরসহ বিভিন্ন পণ্যের বেশ কিছু ট্রাক স্থলবন্দরে আনলোড করা হয়েছে। আর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৪ টি রফতানিকৃত পণ্যের ট্রাক ভারতের চ্যাংরাবান্দা স্থলবন্দরে পৌঁছেছে বলে স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে।

 

 

 আদিতমারীতে টিউবয়েলের পানি পানে একই পরিবারের ৫জন অসুস্থ

লালমনিরহাটের আদিতমারীতে টিউবয়েলের পানি পানে একই পরিবারের ৫জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ৪ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন।
শনিবার দুপুরে আহতদের একজনকে আশংকা জনক অবস্থায় আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে মেডিকেল বোর্ড।

অসুস্থরা হলেন, আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়নের ছোট কমলাবাড়ি গ্রামের রবি কান্ত(৫৫), তার স্ত্রী জোড়ো বালা(৪৮), ছেলে অশ্নি কান্ত(২৮), পত্রবধু জ্যোতি বালা(২৪) ও নাতনী দিশা রানী(২)।

হাসপাতাল ও স্থানীয়রা জানান, সকালে বাড়ির সবাই রান্না করে খাওয়া শেষে যার যার মত মাঠে কাজে যায় পরিবারের লোকজন। সেখানে মাঠে কাজ করা অবস্থায় সজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে স্থানীয়রা প্রথমে অশ্নি কান্তকে বাড়ি নিয়ে আসেন। ঠিক একই সময় বাড়ির মালিক রবি কান্তও সজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাকেও বাড়িতে নিয়ে আসেন স্থানীয়রা।

একই ভাবে বাড়ির সবাই ঘুম ঘুম ভাব ও মাথা ব্যাথা আর বমি করতে শুরু করে। এ ভাবে বাড়ির সবাই অসুস্থ হয়ে পড়লে পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকদের নিয়ে ওই বাড়িতে উপস্থিত হন।Aditmari-Madical-Pic

গুরুতর আহত অশ্নিকান্তকে তাৎক্ষনিক ভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আর বাকিদের বাড়িতে দেয়া হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।
এ দিকে এ ঘটনায় তাৎক্ষনিক ভাবে ৪ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ড ওই বাড়ির পানি ও রান্নার মসলা তদন্ত করে তাতে চেতনা নাশক ওষুধের গুড়া পান। সে থেকে মেডিকেল টিমের ধারনা কে বা কাহারা শক্রুতা বশত টিউবয়েলের পানি ও মসলা হলুদে এ চেতনা নাশক ওষুধ ব্যবহার করেছে।

ইতিপূর্বেও ওই এলাকায় এক স্কুল শিক্ষককের বাড়িতে একই ভাবে চেতনা নাশক ওষূধ খাইয়ে একই বাড়ির ১১জন অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।
মেডিকেল টিমের রিপোর্ট অনুযায়ী স্থানীয়দের ধারনা ওই বাড়ির মালিক জমি ক্রয় করার জন্য ৪ লাখ টাকা বাড়িতে রাখেন। সেই টাকা চুরি করতে চোর চক্রটি এমন পথ অবলম্বন করতে পারে।

মেডিকেল টিমের সদস্য উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক মাহবুব আলম জানান, চেতনা নাশক ওষুধ মসলায় ও পানিতে ব্যবহার করায় এ সমস্যা হয়েছে। তবে অসুস্থরা আশংকামুক্ত বলেও দাবি করেন তিনি।

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহুরুল ইসলাম জানান, ইতিপূর্বে ঘটে যাওয়া ঘটনার আলামত মেডিকেল টিম উচ্চ পর্যায়ে প্রেরন করেছে সে রিপোর্ট হাতে এলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে অসুস্থদের নিবির ভাবে চিকিৎসকরা পরিচর্যা করছেন বলেও জানান তিনি।



মন্তব্য চালু নেই