লালমনিরহাটে ওএমএস’র চাল আটা চলে যাচ্ছে কালো বাজারে

লালমনিরহাটে ওপেন মার্কেট সেলস (খোলা বাজারে বিক্রির জন্য) ওএমএস’র চাল আটা সাধারন সুবিধাভোগী মানুষের মাঝে বিক্রি না করে তা চলে যাচ্ছে কালো বাজারে। সমাজের দিনমজুর দরিদ্র লোকজন ওএমএস’র দোকানগুলোতে ঘন্টার পর ঘন্টা ভীড় করেও পাচ্ছেন না চাল আটা। আর এ চিত্র লালমনিরহাটের ১১ টি ওএমএস আউটরেটে দেখা যায় প্রতিদিন। সামান্য কিছু চাল আটা বিক্রি করে বাকি সব কালো বাজারে। সরকারী বরাদ্দের ওএমএস’র চাল আটা কালো বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন সরবরাহকারী, ওএমএস আউটলেট ঠিকাদার আর খাদ্য অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

ভুয়া মাস্টার রোল তৈরী করে ওএমএস আউটলেট ঠিকাদাররা সরকারী বরাদ্দের চাল আটা কালো বাজারে বিক্রি করে কালো টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রািতদিন।
খাদ্য বিভাগ সুত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটে ১১টি ওএমএস ঠিকাদারের ১১টি আউটলেট রয়েছে। প্রত্যেকে ওএমএস আউটলেট ঠিকাদারকে প্রতিদিন ৭৫০ কেজি চাল ও ৭৫০ কেজি আটা বরাদ্দ দেয়া হয়। এসব ওএমএস আউটলেটে সরকার নির্ধারিত আটকা ২২ টাকা আর চাল ২৪টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয় আর প্রত্যেক সুবিধা ভোগী মানুষ সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল অথবা আট কিনতে পারবে সরকার নির্ধারিত মুল্যে। প্রত্যেক কেজি চাল ও আটা বিক্রির জন্য সরকার ওএমএস আউটলেট ঠিকাদারকে ১টাকা করে কমিশন দিয়ে থাকে।

বিভিন্ন ওএমএস আউটলেট ঘুরে দেখা গেছে প্রত্যেক ওএমএস আউটলেট ঠিকাদার সর্বোচ্চ ১০০ কেজি চাল ও আটা বিক্রি করে বাকি সবই বিক্রি করে কালো বাজারে। ওএমএস আউটলেটে চাল ও আটা বিক্রি না করেই সরকার থেকে প্রত্যেক ঠিকাদার ১৫শ টাকা কমিশন তুলছেন আর কালো বাজারে এসব চাল আটা বিক্রি করে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার আরো বাড়তি আয় করছেন তারা। কালেঅ বাজারে চাল আটা বিক্রির লভ্যাংখশ থেকে খাদ্য অফিসের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা পায় ৩ হাজার টাকা, সরবরাহকারী পায় দেড় হাজার টাকা আর বাকি পুরোটাই র্দুর্নীতির আখড়া ঠিকাদার।

শহরের বানভাসা এলাকার সুবিধাভোগী দিনমজুর নুরুল মিয়া জানালেন তিনি প্রত্যেকদিন ওএমএস আউটলেটে আসেন চাল আটার জন্য কিন্তু ফিরে যান। সপ্তাহে দু একটি ওএমএস চাল আটা কিনতে পারেন তারপরও পরিমানে ২ কেজির বেশী নয়। ”আমরা দোকানে আসলে ওএমএস ঠিকাদার বলে চাল আটা পুরিয়ে গেছে অথবা সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে,” এমনটি জানালেন তিনি।

শহরের নয়ারহাট এলাকার রিক্সা চালক দবির আলী জানালেন, স্থানূয ওএমএম আউটলেট থেকে কোন সুবিধাই তারা পাচ্ছেন না। অধিকাংশ সময় আউটলেটটি বন্ধ থাকে আর খোলা থাকলেও চাল আটার কোর সরবরাহ পাওয়া যায় না।
কলেজবাজারের দিনমজুর সুরত আলী জানালেন ওএমএস দোকানদার ওএমএস’র চাল আটা বিক্রি না করেই কালো বাজারে বিক্রি করছে। খাদ্য বিভাগের দুর্নীতির কারনে এসব ঘটছে নিয়মিত।

নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক একজন ওএমএস ঠিকাদার জানালেন খাদ্য বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা দুর্নীতি না করলে ঠিকাদাররা এমন সাহস পেতো না। এসব চাল আটা কালো বাজারে বিক্রি হোক আর নাই হোক খাদ্য বিভাগের সেই চক্রকে নিয়মিত সুদের টাকা দিতেই হবে আর তা দিতে না পারলে সরবরাহ বন্ধ করে দেয় বিভিন্ন অজুহাতে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গোলাম মাওলার সাথে যোগাযোগ করা হলে এ ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সধারন সুবিধা ভোগী মানুষের নাম ভাঙ্গিয়ে ওএমএস’র মাধ্যমে সরকারী বরাদ্দ কিছু মানুষকে লাভবান করার চেয়ে এটি বন্ধ করে দেয়ার দাবী জানিয়েছেন লালমনিরহাট বাসী।



মন্তব্য চালু নেই