লামায় তিন পুরুষের দখলীয় আদিবাসীর জায়গা কেড়ে নিতে ষড়যন্ত্র
বান্দরবানের লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের ডিসি রোড এলাকায় চাহ্লাচিং মার্মা(৫৫) এর তিন পুরুষের দখলীয় জায়গা কেড়ে নিতে ষড়যন্ত্র করছে বেলাল গাজী নামক এক ভূমিদস্যু। সহজ সরল উপজাতি দেখে অন্যের জায়গা নিজের দাবী করছে বেলাল। এবিষয়ে একাধিকবার স্থানীয় বৈঠক ও লামা থানায় বসলে বিচার বিশ্লেষন করে জায়গার মালিক হিসাবে চাহ্লাচিং মার্মা রায় দেয় বিচারকরা। তারপরেও ক্ষান্ত হয়নি বেলাল গাজী। একের পর এক নতুন কৌশল অবলম্বন করে জায়গা দখলে।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, বেলাল গাজী ৫-৬ বছর আগে পাশ্ববর্তী আজিজনগর ইউনিয়নের ছিয়ততলী এলাকা বাস করত। সেখানে তার এহেন কাজের জন্য এলাকাবাসি তাকে বিতাড়িত করলে গজালিয়া ডিসি রোড এলাকায় আসে। মালিক পলাতক এমন একটি আর হোল্ডিং কাগজের ভূয়া মালিক সাজিয়ে ক্রয় সূত্রে নিজেকে মালিক দাবি করে বেলাল।
আর/৮৭৮ হোল্ডিং এর কাগজ দেখিয়ে দীর্ঘদিনের উপজাতি দখলের জায়গায় দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণ করে। যার চৌহদ্দিরও কোন মিল নেই। উক্ত কাগজে তার ৫একর জায়গা আছে। কিন্তু বাস্তবে ঘুরে দেখা যায় বেলাল গাজি ২৫ একরের অধিক জায়গা দখল করে আছে। এবিষয়ে বেলাল গাজি বলেন, বিরোধীয় জায়গাটি আমার। আমার ৯একর ২০শতক জায়গার কাগজ আছে। বাকী জায়গা দখল সূত্রে আমি মালিক।
ক্ষতিগ্রস্থ চাহ্লাচিং মার্মার সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, আমার বাবা মৃত ক্যাচিং উ মার্মা ১৯৫৫ সালের দিকে উক্ত জায়গা আবাদ করেন। পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে আমরা উক্ত জায়গার মালিক। তাছাড়া যখন জায়গার কাগজ করতে যাই তখন বন্দোবস্তি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জায়গার কাগজ করা যায়নি। হেডম্যান প্রতিবেদন মূলে আমরা ৬০বছর যাবৎ বাগান করে ভোগদখলে আছি। কিন্তু বেলাল গাজি কিছুদিন আগে আমার বাগানের পাশে এসে বসতবাড়ি করে। ধীরে ধীরে আমার সৃজিত বাগানের দিকে লোলুপ দৃষ্টি পড়ে তার।
এবিষয়ে স্থানীয় সালিশদাররা অনেকবার বিচার করে উক্ত জায়গা আমার বলে সিদ্ধান্ত দেয়। বেলাল সে বিচার না মেনে লামা থানায় অভিযোগ দিলে থানার বিচারেও আমি জায়গা পাই। সিদ্ধান্ত হয়যে কানুনগোর মাধ্যমে পরিচিিহন্ত করে তার ৯একর ২০শতক জায়গা বুঝিয়ে দেবে। কিন্তু পরবর্তীতে বেলাল গাজি আর আসেনি। তাছাড়া বছর দু’য়েক আগে বেলাল গাজি আমার সৃজিত সেগুন, একাশি, আকাশমনি ও বেলজিয়াম সহ সাড়ে ৪হাজার ৬-৭ বয়সের চারা কেটে নিয়ে যায়।
এবিষয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মিজান উদ্দিন বলেন, বেলাল গাজি ওরফে বিল্লু ৫-৬বছর আগে আজিজনগর থেকে এসে ডিসি রোড় এলাকায় বসবাস করছে। চাহ্লাচিং মার্মা দীর্ঘদিন যাবৎ উক্ত জায়গা দখল করে বাগান সৃজন করেছে। তাছাড়া বেলাল গাজি কয়েকবার স্থানীয় সালিশের সিদ্ধান্ত না মানায় সমাধান করা যায়নি।
১নং গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াই চিং মার্মা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তিন পুরুষ থেকে চাহ্লাচিং মার্মা উক্ত জায়গা দখলে আছে। বেলাল গাজির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সমাধানে বসলে জায়গা পরিমাপের সময় সে লুকিয়ে থাকায় বিষয়টি সমাধান করা যায়নি।
মন্তব্য চালু নেই