লাজুক তরুণী থেকে পেশিবহুল বডিবিল্ডার!

নারী শরীর নিয়ে জন্মালেও ছোটবেলা থেকেই নিজেকে পুরুষ মনে করতেন ক্যালিফোর্নিয়ার অধিবাসী শ্যেফ কোডি হারম্যান। ভালোবাসতেন পুরুষের পোষাক পরতে, ছেলেদের খেলাধুলোয় অংশ নিতে। এদিকে গোঁড়া ধর্মভীরু পরিবারের সদস্য হওয়ার কারণে মুখ ফুটে মনের ইচ্ছার কথা বলতে পারতেন না বাবা-মা’কে।

পরিবার ও সমাজের চাপিয়ে দেওয়া পরিচয় মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। ২০ বছর বয়সে পরিবারের চাপের মুখে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ২০০৮ সালে ডেটিং সাইটের মাধ্যমে পরিচয় হয় অ্যাডাম নামে এক যুবকের সঙ্গে। গির্জায় প্রথা মেনেই অ্যাডামকে জীবনসঙ্গী হিসেবে মেনে নেন কোডি। বিয়ের পরে স্বামীর কর্মস্থল জার্মানিতে পাড়ি দেন তিনি।

কিন্তু সে বিয়ে টেকে না। কোডি স্বীকার করেছেন, মানসিক ও শারীরিক অসুবিধার কারণেই অ্যাডামের সঙ্গে তার বনিবনা হয়নি। আমেরিকায় রসনাশিল্পের তালিম নিতে পাড়ি দেওয়ার পরে দুজনেই বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। ততদিনে কোডি মনস্থির করে ফেলেছেন। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে শুরু হয় তার লিঙ্গ পরিবর্তন প্রক্রিয়া। প্রথমে বাদ পড়ে জরায়ু। ম্যাস্টেক্টমির মাধ্যমে স্তনের আকার পাল্টে ফেলা হয়। নিয়মিত শরীরে প্রবেশ করতে থাকে পুরুষ হরমোন। ধীরে ধীরে কাঙ্ক্ষিত পরিচয়ে বাঁচতে শুরু করেন কোডি। ইতোমধ্যে কুকিং কোর্সের পাঠ শেষ করে তিনি পুরোদস্তুর শ্যেফ হয়ে উঠেছেন।

তবে এতেই থেমে যাননি কোডি। ঠিক করেন, পুরোপুরি পুরুষ হয়ে উঠতে হবে। দৌড়াতে ভালোবাসলেও একাধিক অস্ত্রোপচারের পরে তাতে বাদ সাধে শরীর। চিকিৎসকের পরামর্শে তাই শুরু করেন ওয়েট ট্রেনিং, নিয়ন্ত্রিত ডায়েট ও ব্যায়ামের মাধ্যমে পেশিবহুল শরীর তৈরির একাগ্র সাধনা। প্রবল অধ্যবসায় সম্বল করে পেশাদার বডি বিল্ডার হয়ে ওঠেন কোডি। যোগ দিতে শুরু করেন একাধিক প্রতিযোগিতায়। ক্রমে সাধনায় সিদ্ধিলাভ হয়। ট্র্যান্সজেন্ডারদের বডি বিল্ডিং প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে চমকে দেন কোডি।

শুধু অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে ভর করে নারী থেকে পুরুষ হওয়ার অসাধারণ অভিযানে সফল শ্যেফ কোডি হারম্যান। পাশাপাশি লাজুক নরম স্বভাবের তরুণী থেকে পেশিবহুল বডিবিল্ডারও হয়েছেন তিনি।



মন্তব্য চালু নেই