লঞ্চ দুর্ঘটনায় লাশ হয়ে ফিরলো ফরিদপুরের ৮জন
ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের চকভবানীপুর গ্রামের মমতাজ বেগম ও তার নাতনী নার্গিস আক্তার লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলো অবশেষে। নাতনীর লাশ পাওয়া যায় গতকাল আর আজ বাড়ী ফিরল নানীর লাশ। তাদের বাড়িতে চলছে এখন শোকের মাতম।
গতকাল পাটুরিয়ায় পদ্মা নদীতে লঞ্চ দুর্ঘটনায় মারা যায় তারা দুজন। নিহতের মামা আলমাছ সেক জানান, তার মা মমতাজ বেগম তার ১১ বছরের ৬ষ্ঠ শ্রেনী পুড়–য়া ভাগ্নি নার্গিস আক্তারকে নিয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার ফরিদপুর থেকে মানিকগঞ্জে এক পীরের বাড়ি যায়। পরের দিন সেখান থেকে তার মা ঢাকার মিরপুরে তার ভাইয়ের বাড়ি হয়ে বাড়ীর পথে রওনা দিয়ে দূর্ঘটনায় পতিত হন। তাদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসছে। নিহত দুজনকে পারিবারিক কবর স্থানে আজ দুপুরে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে একই ঘটনায় ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের ভটরকান্দি গ্রামে। একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রীসহ ৪ জনের প্রানহানি ঘটেছে। স্বজনদের আহাজারীতে এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হচ্ছে। ভটরকান্দি গ্রামের বৈদ্যনাথ মালো তার স্ত্রী ও স্বজনদের নিয়ে কয়েকদিন আগে মানিকগঞ্জে যান। মানিকগঞ্জের শিবালয়ের বিজয় নগর গ্রামের উমোত রঞ্জন গোস্বামীর বাড়ীতে ‘লীলা কীর্তন’ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন বৈদ্যনাথসহ তার পরিবারের আরো ৫ সদস্য। বাড়ী ফেরার পথে লঞ্চ ডুবিতে মারা যান বৈদ্যনাথ মালো (৭০) তার স্ত্রী অনিমা রানী মালো (৫৫), বৈদ্যনাথের ভাই নিখিল মালোর স্ত্রী পুতুল মালো (৪০) ও গয়ানাথ মালোর স্ত্রী চম্পা রানী মালো (৬০)।
এদের পরিবারের এক মাত্র বেচে যাওয়া বাসন্তি রানী মালো জানান, সকালে গুরু দেবের বাড়ী থেকে শিবালয় বাসস্ট্যান্ডে আসেন। পরে একটি লোকাল গাড়ীতে করে ফরিদপুরে ফিরছিলেন। তিনি বলেন, লঞ্চে অনেক যাত্রী ছিল। আমরা সকলে লঞ্চের ভেতরে বসেছিলাম। হঠাৎ করেই লঞ্চের ভেতর জল ঢুকে পড়ে এবং দ্রুত কিছু বোঝার আগেই ডুবে যায়। আমি কিভাবে যে জানালা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেছি তা নিজেই জানিনা। কিছুক্ষন পর দেখি আমি একটি ট্রলারের মধ্যে। সেখানে কয়েকজনের লাশ রাখা ছিল। লঞ্চে আমাদের পরিবারের মোট ৫জন ছিল। তার মধ্যে ৪ জনই মারা গেছে। কেবলমাত্র আমিই বেঁচে আছি। ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার ছাগলদি গ্রামের খোকন দাসের শিশু পুত্র বাঁধন দাস। মাসিতো ভাই ও মেসোর সাথে নিজ বাড়ীতে ফেরার পথে লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত হন বাঁধন (৫)।
মন্তব্য চালু নেই