রোজা আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ককে দৃঢ় করে
বিভিন্ন ধরনের ইবাদত প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর সাথে আমাদের বন্ধন প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায়। রমজানে এই ইবাদতগুলো পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। যেন আমরা এই মাস শেষে আল্লাহর সাথে সম্পর্কের উচ্চতর স্তরে অবস্থান করতে পারি। খাদ্য ও পানীয় দেহের পুষ্টির উৎস, মনের খাদ্য হচ্ছে জ্ঞান। আর অন্তরের প্রয়োজন হচ্ছে ঈমান এবং আল্লাহ সম্পর্কে সচেতনতা। রমজানে অধিক ইবাদতের দ্বারা আমরা ইবাদতকে আমাদের জীবনের মৌলিক কাঠামো হিসেবে গ্রহণের শিক্ষা পাই।
কুরআনে যেমনটি বলা হচ্ছে : ‘…নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার ত্যাগ, আমার জীবন-মরণ, জগৎসমূহের প্রতিপালক আল্লাহরই জন্য।’ (সূরা আল-আনআম, ৬:১৬২)
এরকমই হচ্ছে একজন প্রকৃত মুসলিমের জীবন। রমজানে বেশী বেশী কুরআন তিলাওয়াতের মূল উদ্দেশ্য এক মাসে কুরআন ‘খতম’ করা নয়। বরং এর উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর বাণীর সাথে আমাদের সম্পর্ক গভীরতর করা। যদি কুরআনের বাণী আমাদের অন্তরে স্থান করে নিতে পারে, তবে তা আমাদের জীবনকে আমূল পরিবর্তন করতে সাহায্য করবে। অধিক পরিমাণ কুরআন তিলাওয়াত ও শোনার আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে শয়তানের কুরআন থেকে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়া।
শয়তানের কুরআন [আরবি পরিভাষায় কুরআন অর্থ হচ্ছে তিলাওয়াত, এখানে ভাষাগত অর্থটিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে] হচ্ছে গান-বাজনা, সিনেমা-নাটক ইত্যাদি যেগুলো আমাদের আল্লাহর নিকটবর্তী করে না। এগুলো আমাদেরকে আনন্দ দান করলেও আল্লাহ থেকে আমাদের দূরে সরিয়ে নেয়। তাই রমজানে আল্লাহর কুরআনের নিকটবর্তী হওয়া এবং শয়তানের কুরআন থেকে দূরবর্তী হওয়ার দ্বিমুখি সাধনা চালাতে হবে।
রমজানে বেশী বেশী করে আমরা রাতের নফল নামাজ আদায় করি। যেন রমজানের পরও তা আমাদের অভ্যাস হিসেবে থেকে যায়। কেননা সমস্ত সালাতের ভিতর রাতের নামাজই সবচেয়ে একনিষ্ঠভাবে আদায় করা সম্ভব। যখন কেউ আমাদের দেখতে পায় না। এই একনিষ্ঠতা অন্যান্য নামাজে অর্জন করা খুবই কষ্টসাধ্য। তেমনি এ মাসে ধার্মিক লোকদের সাহচর্য বৃদ্ধি পায়।
আমরা রোজাদারদের সাথে বসে একত্রে ইফতার করি এবং রোজাদারেরা একে অপরকে ইফতারের দাওয়াত দিয়ে থাকে। আমাদের উচিত এ মাসে বেশী বেশী করে আল্লাহভীরু, ধার্মিক লোকদের সাহচর্য লাভে সচেষ্ট হওয়া। বেশী বেশী করে সেসব স্থানে যাওয়া যেখানে জ্ঞানের কথা আলোচিত হয়।
মন্তব্য চালু নেই